পেটের ক্ষুধা বোঝে না লকডাউন

মোঃ নেজাম উদ্দিন.
রিক্সা চালক জুবায়ের এই লকডাউনেও রিক্সা নিয়ে বের হয়েছেন। পরিবারে তার ৭সদস্য । সন্ধ্যায় আয় করে যদি চাল ড়াল নিতে না পারে তবে পরিবারে সবাই না খেয়ে থাকতে হবে। জুবায়ের জানিয়েছেন লকডাউন দিক আমাদের কোন সমস্যা নেই । কিন্তু আমরা যারা দিনমুজুর তাদের কথা সরকারের মাথায় রাখতে হবে।এদিকে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি কিন্তু কোন ভাড়া এখনো পাইনি। কারণ লকডাউন চলার কারনে লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেনা।সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত যা কামাই করছি তা দিয়ে এককেজি চালও পাবোনা।
এদিকে  লকডাউনে দোকান-পাট সব বন্ধ। দোকান-পাট বন্ধ থাকায় দোকানের মালামাল বহন করতে পারছেনা বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শ্রমিকরা। তারা বলছে, আইবিপি রোড়ে কম করে হলেও কয়েকশত শ্রমিক কাজ করে এখন সবাই বেকার বসে আছে।পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। এভাবে আর কতদিন থাকবে। আমরা চরম বিপাকে আছি।
লকডাউন চলুক আমাদের কোন আপাত্তি নেই। কিন্তু যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন আমাদের গরীব-পরিবারগুলোর খাবারসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগীতা করুক সরকার। আমাদের ঘরে খাবার না থাকলে আমরা কি ভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচবো। পেটের ক্ষুধা বোঝে না লকডাউন! এভাবেই দুঃখে ভরা এক সংক্ষিপ্ত করুণ কাহিনী তুলে ধরেন কক্সবাজার পৌর এলাকার এলাকার ভ্যান চালক জুবায়ের (৩৫), মালেক (৪২), রহিম উদ্দিন (৪৪) ।
সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলায় তৃতীয় দিনেও চলছে কড়াকড়িভাবে লকডাউন পালিত হচ্ছে। এই লকডাউনে কক্সবাজারে গরীব-অসহায় শ্রমজীবী ও ন্নিমআয়ের মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অটোরিক্সা ও জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহ্নত গাড়ি ছাড়া রাস্তা-ঘাট প্রায় শূন্য রয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার সদরসহ ১১ ইউনিয়েনের  হাটবাজরের মার্কেটগুলো।জেলার পৌরসভায় কড়াকড়ি লকডাউন পালিত হলেও তবে গ্রামাঞ্চলে এর প্রভাব সেভাবে পরেনি।
শনিবার (৩ জুন) দুপুরে কক্সবাজার পৌর এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, কিছু মানুষ অকারণে হাটবাজারগুলোতে ভীড়বাট্টা করছে। ফলে দুরকম চিত্র দেখা যাচ্ছে শহর ও গ্রামাঞ্চলে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ আইনশৃখলা বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার পরিদর্শনে গেলে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু দোকানপাট খোলা থাকলেও গাড়ির বহর দেখার সাথে সাথে সেগুলোর দ্রুত সাটার বন্ধ হয়ে যায়। হোটেল শ্রমিক রাসেল জানান, লকডাউনে খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় আমাদের আয় নাই। কীভাবে চলবে আমাদের সংসার। গত তিনদিন থেকে অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছি। আমরা সাহায্য সহযোগীতা চাই না, আমাদের কাজ-কর্ম চললেই আমাদের ছোট ছোট সংসারে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো। কট্টর লকডাউন পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ মাঠে কাজ করছেন বলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ জানান. বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত কট্টর লকডাউন কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ও পুলিশসহ সবাই সমন্বিতভাবে মানুষকে যাতে ঘরে রাখা যায় সে জন্য কাজ করছি। আমরা সবাইকে অনুরোধ করবো আপনারা সচেতন থাকবেন, মাক্স পরুন এবং ঘরে থাকুন। যেহেতু আমরা বড় ধরণের সংক্রমনের দিকে ধাবিত হচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বাহিরে বের হলেই নগদ অর্থ জরিমানা গুনতে হবে। উপজেলা প্রশাসন গত দুই দিনে বিভিন্ন জায়গায় কট্টর বিধিনিষেধ অমান্য করায় লক্ষাধিক টাকা গুণতে হয়েছে পথচারিদের।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.