সুগন্ধা পয়েন্টে দোকান মালিককে ভাড়া না দিয়ে উল্টো জামানত ফেরত চাইছে ভাড়াটিয়া!

সুগন্ধা পয়েন্টে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সন্তানের দোকান দখলের চেষ্টা

বার্তা পরিবেশকঃ
ভাড়াটিয়ারা দোকান ছেড়ে না দিয়ে দোকান মালিকের কাছ থেকে জামানতের টাকা আদায় করতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছে ধরণা দিচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে বিমানবন্দর এলাকার নজু মিয়ার ছেলে দিদারুল আলম ও ৬নং দোকান মধ্যম বাহারছড়ার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আব্দুল হামিদ বিরোদ্ধ অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন কেন্দ্র কলাতলী জোনের সুগন্ধা পয়েন্টের ড্রাগন মার্কেটে। তারা দোকান দুটি ছেড়ে না দিয়ে তাদের জামানতের টাকা ফেরত চেয়ে মালিক পক্ষ রূপা পাশাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানান রূপা পাশার স্বামী নুরুল কবির পাশা ।
অভিযোগকারি নুরুল কবির পাশা জানান, গত ১৭জানুয়ারি আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন শেখ, রাশেদুল ইসলাম ডালিম, ৫ ও ৬ নং দোকানে ভাড়াাটিয়া মালিক দিদার ও হামিদের সাথে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল আমাদের বকেয়া ভাড়াা (জানুয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত) ৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। সালিশ কারকদের অনুরোধে তিন লক্ষ দশ হাজার টাকা মওকুব করে দেওয়া হয়। যার মধ্যে২০২০ সালে লকডাউনে দুই মাসের ভাড়া অন্তর্ভুক্ত আছে। তাদের জামানতের ১০ লক্ষ টাকা হতে ২ লক্ষ টাকা কর্তন করে ৮ লক্ষ টাকা দিদার ও হামিদ পাবে। দিদার ও হামিদ আমার স্ত্রীর নামে দোকান ঘর দুটি খালি করে বুঝিয়ে দিবে। আমার স্ত্রী তাদের জামানতের ৮ লক্ষ টাকা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে আপোষ নামা করে কোর্টের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করবে। কিন্তু তারা কোর্টে যাবে না এবং দোকান ঘর দুটি খালি করে না দিয়ে জামানতের ৮ লক্ষ টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করছে।
এদিকে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রূপা পাশা কক্সবাজারের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জল কর থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট ড্রাগন মাঠ মার্কেট থেকে ২টি দোকান নোটারী মূলে ক্রয় করে। যার রোটারী নং ১৫১/ ১১-০৩-২০১৮ । ক্রয়ের পর কয়েকমাস ভালভাবে ভাড়া পেলেও এখন ভাড়াটিয়ারা তাকে ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে । এতে রূপ পাশা ও তার স্বামী নুরুল কবির পাশা অসহায় হয়ে বিচার চাইতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরার পর শেষমেষ আদালতের আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান। এখন মোয়াজ্জেম হোসেন শাওন দোকানের মালিকানা দাবি করে দোকান ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোর করে ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রূপা পাশা জানান, গত ২০১৮ সালের মার্চের ১১ তারিখ পৌর শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকার বাসিন্দা সমেরেন্দ্র কর এর ছেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জল কর থেকে তার দখলীয় ডিভাইন বীচ পয়েন্ট এলাকায় ড্রাগন মাঠ মার্কেট থেকে ৫ ও ৬ নং দোকান দুটি ২০লক্ষ টাকায় ক্রয় করে এবং মালিকানা বুঝিয়ে দেন উজ্জল কর। পরে ৫নং দোকানটি বিমানবন্দর এলাকার নজু মিয়ার ছেলে দিদারুল আলম ও ৬নং দোকান মধ্যম বাহারছড়ার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আব্দুল হামিদকে প্রতিটি মাসিক ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয় । তাদের দুজনের সাথে আমার ৩শত টাকা দামের স্ট্যাম্প হয় চুক্তি ৩ বছরের জন্য । বেশ কয়েক মাস ভালভাবে ভাড়া আদায় করলেও গত ৭ থেকে ৮ মাস কোন ধরনের ভাড়া প্রদান করছে না । ভাড়া চাইতে গেলে তারা বলে এটি আপনার দোকান নয়, আপনাকে আমরা ভাড়া দিব না। অন্যদিকে ৬ নং দোকানের ভাড়াটিয়া ও আব্দুল হামিদ আমাকে ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমি সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রন আদালতে রেন্ট কন্ট্রোল অর্ডিন্যান্স এর ১৯(১) ধারা মতে বাড়ী ভাড়া মিচ মামলা ১২/২০২২ দায়ের করি। এরপর থেকে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে আমাকে ও আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে আসছে। এদিকে আমরা প্রতিবছর দোকানের নামে ট্যাক্স প্রদান কওে আসছি যা কখনো বকেয়া রাখা হয়নি।
রূপা পাশার স্বামী নুরুল কবির পাশা পল্লব জানান, আমার বাড়ি কক্সবাজারের টেকপাড়া হলেও আমি বিয়ে করি ঢাকা থেকে। আমার শশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হোসেন চৌধুরী অনেক স্বপ্ন নিয়ে নিজের মেয়ের নামে দুটি দোকান ক্রয় কওে দিয়েছিল। এখন তা আমরা হারাতে বসেছি। এই বিচার নিয়ে বিভিন্ন জনের কাঝে গেলেও কোন সুরাহা এখনো পাইনি । আমার স্ত্রীর নামে পৌর আওয়ামী লীগের নেতা উজ্জল কর এর কাছ থেকে নগদ ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে এই দোকান দুটি ক্রয় করেছিলেন। এখন মালিক বনে গেছে আরেকজন । আমাকে ভাড়া দিচ্ছেনা গত কয়েক মাস ধরে।
এদিকে ড্রাগন মার্কেট এর ৫ নং দোকানের ভাড়াটিয়া দিদারুল আলম জানান, আমি শুরুতে বর্তমানে যে দোকানটি করছি তা রূপা পাশার স্বামী পল্লব ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়েছিলাম । গত ৭- ৮ মাস আগে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওন আমার দোকানে এসে তালা লাগিয়ে দেয়। তার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, দোকানের মারিক আমি । তোমরা কার কাছ থেকে নিয়েছো তা আ,মার দেখার বিষয় নয় ্ আমার দোকান আমাকে বাড়া দিতে হবে অন্যথায় ছেড়ে দিতে হবে । বাধ্য হয়ে আমরা তার সাথে সমযোতা করে এখন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি । যদি রূপা পাশা বা তার স্বামী মালিকানা দেখাতে পারে বা শাওন ও তাদের মধ্যে সমযোতা হয় তবে যিনি মালিক হবেন তাকেই আমরা ভাড়া দিব।
৬নং দোকানদার আব্দুল হামিদ জানান, এখানে আমাদের কোন হাত নেই । আমরা এখন শাওন ভাইকে ভাড়া দিচ্ছি কারণ এই মার্কেট এর মালিক তিনি । প্রতিবেদক উজ্জল কর থেকে দোকানটি রূপা পাশা ক্রয় করেছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রথমে আমরা পল্লব ভাইয়ের কাছ থেকে দোকান নিয়েছিলাম । কিন্তু পরে শাওন ভাই মালিকানা দাবি করলে আমার নিরুপায় হয়ে তাকে ভাড়া প্রদান করছি। যদি তাদেও মালিকানা ঠিক হয় তবে আমরা যিনি মালিক তাকে ভাড়া প্রদান করবো।
দোকান বিক্রেতা আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জল কর জানান, আমার দখল স্বত্ত আমি বিক্রি করেছি। বিক্রির পর রূপা পাশা দোকান দুুট ভাড়া দিয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছে । এখন কোন সমস্যা হওে যারা সমস্যা করছে কেন করছে তা জানা দরকার এধং আইন শৃংখলা যেন নষ্ট না হয় সেেিদক খেয়াল রাখার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করছি।

 

 

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.