মোঃ নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজারঃ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। সম্ভাব্য প্রার্থীসহ নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনায় বেরিয়ে আসছে কোন দল থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন। কোন আসনে কাকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেই হিসাব মেলাচ্ছেন বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও স্থানীয় ভোটাররা। এছাড়া আসন্ন জাতীয় সংসদ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয় বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি থেকেও ডজন খানেক নেতা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজারের চারটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ৪টি পৌরসভা এবং ৭১টি ইউনিয়নে স্ব-স্ব এলাকার ভোটারদের ঘিরে ব্যাপক গণসংযোগসহ নানা কৌশলে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দলীয় প্রতীকের পক্ষে সমর্থন চাইছেন, জানাচ্ছেন নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে স্ব-স্ব দলের পরিকল্পনার কথাও। তবে দেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজার হিসাবে কক্সবাজার-৩ (সদর- ঈদগাও -রামু) আসন সবসময় গুরুত্ব রাখে পুরো দেশে। পর্যটন নগরীর একজন সংসদ সদস্য হতে অনেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে । তবে র্বতমান সংসদ আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল পর পর দুবার নির্বাচিত হওয়ার কারণে তার নিজস্ব আসনে বেশ সুনাম রয়েছে ।
বর্তমান সরকার দলীয় আওয়ামী লীগ নিজের সংগঠনকে গোছাতে তৃনমূল থেকে শুরু করেছে । সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগ কক্সবাজারের সম্মেলন অনুষ্টিত হওয়ার পর এখন নেতারা তৃনমুল পর্যায়ের নেতাদের নেতৃত্ব ঠিক করতে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন কমিটি শক্ত করা হচ্ছে । সে পর্যায়ে দেখতে গেলে বর্তমান ঢাকাতে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচী অথবা অন্যদলের এক্টিভেটিস দেখা গেলেও কক্সবাজারে চোখে পড়ছেনা বিরোধী দলের কোন কর্মসূচী। সেই হিসাবে কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে এমনটা নজরে আসে। বর্তমান সরকার দল আওয়ামী লীগ বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের নেতাকর্মীদের উচ্ছাসিত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যারা নমিনেশন চাইবেন তারা স্ব স্ব এলাকায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে। তবে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় নির্দেশের বাইরে যাবেন না এমনটাও বলছেন । তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নমিনেশন বোর্ড় যাকে নৌকা প্রতীক দিবেন আমরা তার পক্ষ হয়ে কাজ করবো। আবার আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝ থেকে নমিনেশন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে এমনটা মনে করছেন কক্সবাজারবাসি। যেমনটা বিগত কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে হয়েছিল। এদিকে পর পর কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কারণে আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমলকে নমিনেশন না দিতে পারে এমন ভয় করছেন সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছে বর্তমান সংসদ সদস্য বেশ ভালভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পর্যটন নগরীকে। তাকে আবারো সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। ২০১৮ সালে যখন আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমলকে নমিনেশন দেওয়া হয়নি জেলার আনাচে কানাচে কলাগাছ রোপণ করা হয়েছিল এমনটা ইতিহাস রয়েছে।
ছবি- সম্প্রতি বন্যায় কবলিতদের মাঝে চাউল বিতরণকালে এমপি কমল
কক্সবাজার- ৩ ( ঈদগাহ , রামু )সদর আসন থেকে ডজন খানেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইলেও জনপ্রিয়তার দিক থেকে কক্সবাজার সদর আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোয়ন পাবে এমনটা আশা এলাকাবাসির।
তারা মনে করছে গত ১০ বছরে এই সংসদ সদস্য যে উন্নয়ন করেছে বিগত ৫০ বছরে হয়নি। গর্জনিয়ার নতুন বাজার এলাকার কবির আহমদ জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালভাবে পাইনি। কিন্তু আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি হওয়ার পর থেকে নতুনবাজারের সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়ক করে দিয়েছে যা কোন এমপি করেনি।আশা করছি এবারও তার প্রতিদন্ধি থাকার কথা নয়।
এভাবে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার কারণে গণমানুষের বন্ধুতে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল । ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিশাল ভোটের ব্যবধানের মাধ্যমে গতদুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর একদিনও বসে থাকেননি ঘরে। প্রতিদিন কোন না কোন উপজেলার ইউনিয়নে, ওয়ার্ড মহল্লায় ঘুওে বেডিয়েছেন । স্থানীয়রা বলে, এমপি বাপে ও মতো হয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্লামেন্টারিয়ান ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী সবসময় মানুষের মেবায় নিয়োজিত থাকতেন । ঠিক তেমনি সাইমুম সরওয়ার কমল পর্যটন নহরী কক্সবাজারের মানুষের সেবাই সবসময় নিয়োজিত রয়েছে । এমনও খবর আছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটক সংখ্যা বেশি হলে হোটেল মোটেল জোনে জায়গা না হলে তার নিজ বাড়ি ওসমান ভবন পর্যটকদেও জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন।শুধু তাই নয়, বিগত করোনাকালিন সময়ে নিজের জীবন বাজি রেখে করোনা রোগিদেও সহযোগিতা করেছেন তিনি। এমনকি যেখানে মানুষ করোনা ভাইরাসের জনন্য যায়নি সেখানে এমপি কমল নিজে গিয়ে ডাক্তারদের সাথে নিয়ে কাজ করেছেন এমনটা খবর রয়েছ্\ে
আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল সম্পর্কে একটু পেছনে গেলে জানেিত পারি, সাইমুম সরওয়ার কমল ২ জানুয়ারি ১৯৭০ সালে কক্সবাজারের রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা, পূর্ব পাকিস্তানের এমপিএ, বাংলাদেশের সাবেক সাংসদ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তার মাতার নাম রওশন চৌধুরী। তার স্ত্রী সৈয়দা সেলিনা আক্তার শেলী। এই দম্পতীর এক পুত্র ও এক কন্যা।
শিক্ষা জীবন
সাইমুম সরওয়ার কমল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস ও এমএসএস ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস বিশ্ববিদ্যালয় ইউএলবি থেকে আর্ন্তজাতিক রাজনীতি বিষয়ে এমএসএস ডিগ্রী অর্জন করেন। আমেরিকার মিশিগান স্টেইট ইউনির্ভাসিটি থেকে তিনি ইউনিয়নের বাহ্যিক সম্পর্ক বিষয়ে ডিপ্লোমা এবং ফ্রান্সের ওইসিডি থেকে দি অর্গনাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহন করেন।
ছাত্রজীবনে সাইমুম সরওয়ার কমল ১৯৮৫ সালে রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়ত্বি পালন করেন। ১৯৮৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ আসন থেকে অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ২ লাখ ৫৩ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের লুৎফর রহমান কাজল পান ৮৬ হাজার ৭১৮ ভোট। তিনি জাতীয় সংসদের তথ্য মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য দ্বিতীয় বারের মতো মনোনীত হন।
কক্সবাবাজা পর্যটন নগরীর স্থানীয় নেতারা মনে করছে , যদি এই পর্যটন এলাকায় সংসদ সদস্য আর কারো হাতে যায় তবে দখলবাজি তেকে শুরু কওে নানা ধরনের অপকর্ম শুরু হবে। বর্তমান সাংসদ কমল সাহেব অত্যান্ত ন¤্র ভদ্র ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে বিধায় তার রোভ নেই যার কারণে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নির্বিঘেœ ব্যবসা করতে পারছে।
ছবি- ১৫ই আগষ্টে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ।
সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুস্তম আলী জানান, আমাদের পর্যটন নগরী কক্সবাজার অত্যান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা । এখানে যেমন দেশে বিদেশ থেকে পর্যটক আসে ঠিক তেমনি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে এই পর্যটন নগরীতে ব্যবসা কওে যাচ্ছ্ েতাদেও নিরাপত্তায় সবময় কাজ কওে যাচ্ছে এমপি কমল। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আশা করছি মাননীয় প্রধানমনন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাইমুম সরওয়ার কমলকে আবারো মনোয়ন দিয়ে নৌকা মার্কায় জাতীয় নির্বাচসন করার সুযোগ দিবেন।
রামু স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তপন মল্লিক জানান, কক্সবাজারের ঈদগাও , রামু ও কক্সবাজার সদওে দলমত নির্বিশেষে সকলের পামে দাঁড়ান এমপি কমল। গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন তিনি সরকারের মাধ্যমে করিয়েছেন তা বলাবাহুল্য । তার মধ্যে ঈদগাওকে উপজেলা ঘোষণা করেছে ।
সাধারণ ভোটাররা জানান, এবার আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে বেশ কয়েকজন যেতে পারে। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল বেশ ভাল কাজ করছেন । তিনি আবারো নমিনেশন পেতে পারেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেও দলের সভাপতি। আমি এখানে সেবা দিয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করেছি। দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। করোনার সময় মানুষের পাশে মানুষ যয়িরি তখন আমি তিনজন নিয়ে জানাযা পড়েছি। রেড়জোনে গিয়ে শতাদিক করোনারোগিকে সেবা দিয়েছি ডাক্তারদের সাথে । এবং বন্যার সময় ১২, ১৪, ১৬ ,১৮, ২০সাল এবং সর্বোপরি ২৩ সালের বন্যাও এখানে কিন্তু মানুষ কাউকে দেখেনি । এবং এখানে অন্যযারা মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন তারা কিন্তু মানুষের কাছে যায়নি। সেই হিসাবে আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে জনপ্রিয়তা, দক্ষতা এবং সক্ষমতা বিবেচনা করে যদি মনোনয়ন দেন আমাকে দিতে পারেন । আমি যেমন ঈদগাওকে উপজেরা করেছি ঠিক তেমনি আমার আরো বেশ কয়েকটি স্বপ্ন রয়েছে তা হরো কক্সবাজার পৌরসভাকে নিটি কর্পোরেশন , রামু উপজেলাকে পৌরসভায় উন্নীত করা। আমি যদি এই দুটি কাজ করতে পারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়। তবে কক্সবাজারের উন্নয়ন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আশা করছি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সকলের সম্মিলনে আমার আমাদেও কথা বরার জন্য আপনারা আমাকে আগের মতো ভালভেসে বোটের মাধ্রমে সংসদে পাঠাবেন। আমরা আমি বেশি কিছু বলবো না , আমি শুধু বলবো কক্সবাজার সদও উপজেলা , ঈদগাহ, এবং কক্সবাজার শহরে ইনশাআল্লাহ বিপুল ভোটে পাশ করবো। শুধু রামু থেকে ১লক্ষ ভোটে ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে আসবো।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.