এম মনছুর আলমঃ
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপসিল অনুসরণে চতুর্থ ধাপে চকরিয়া উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সকল জল্পনা-কল্পনা ও আতঙ্ক ছাপিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে প্রশাসন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা এসব ইউনিয়নের ৭৩ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়।
এদিকে চকরিয়া উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহন শেষে ভোটের গণনার পর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। রাতে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন মোহনায় স্ব স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তা এসব ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফলে এসব ইউনিয়নে যাদেরকে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করা হয়েছে তারা হলেন, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মনজুরুল কাদের, নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি বিদ্রোহী প্রার্থী কফিল উদ্দিন, চিরিংগা ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী জামাল হোসেন চৌধুরী, নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসানুল ইসলাম আদর, নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী কলিম উল্লাহ কলি, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হেলাল উদ্দিন হেলালী, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী কুতুব উদ্দিন, হারবাং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ, নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী জহির উদ্দিন মো: বাবর, বরইতলী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছালেকুজ্জামান, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জিয়া, খুটাখালী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌলানা আবদুর রহমান, তার নিকটম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মনজুর। এদিকে, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আজিমুল হক আজিম (বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায়) নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোট চালাকালিন কয়েকটি ইউনিয়নে চোয়ারম্যান সমর্থিত প্রার্থীরা কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলেও তা কোন কাজে আসেনি। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের কারণে তাদের সেই চেষ্টা ভন্ডুল হয়ে যায়। তবে সামগ্রিক ভাবে অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহন হয়।
কক্সবাজার সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) তফিকুল আলম বলেন, চকরিয়া উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ৮ ইউপি নির্বাচনে
আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে। এতে সব ধরণের আতঙ্ক ছাপিয়ে ভোটগ্রহন সম্পন্ন শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিছিন্ন ছোট-খাটো ঘটনা ছাড়াই প্রত্যেক ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও র্যাব আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করে। এছাড়া ৮টি ইউনিয়নে পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, বিজিবি ও র্যাবের কয়েকটি টিম বিভক্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। নির্বাচনে দুপুর থেকে মাঠে ছিলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার। নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুইজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও নির্বাচন সার্বিক ভাবে মনিটরিং করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। সবমিলিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সাড়ে ৩ হাজার সদস্য কাজ করে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট সম্পন্ন করতে।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠিত ৮ ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২৪ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৭২ জন প্রার্থী নির্বাচনে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হন।#
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.