প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
কক্সবাজারের রামুতে রাজারকুল বনবিভাগের বিরুদ্ধে কৃষি জমিতে বনায়নের নামে ভিলেজার কৃষকদের জমিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে ভূক্তভোগী কৃষক কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও রামু উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা শনিবার (১৭আগস্ট) বিকেলে পঞ্জেগানা মাদ্রাসায় একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন কৃষকরা জানান, তারা রামু রাজারকুল ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জেগানা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভিলেজার এবং পেশায় কৃষক। দীর্ঘ ৮০ বছর যাবৎ তারা শতাধিক কৃষক পাঞ্জেগানার ডিয়েলতলীসহ বিভিন্ন ঘোনায় ধান চাষের উপযোগী ভূমিতে চাষাবাদের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করে আসছেন। যার ফলে এই এলাকার কৃষক এবং কৃষি শ্রমিক সহ হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল। একই সাথে কৃষি সমৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যের যোগান, গ্রামীন ও জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছেন। সেই সাথে বন বিভাগের গাছ রক্ষায় নিজেদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় প্রায় ৮০ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসা জমি থেকে জোর পূর্বক সাধারণ (ভিলেজার) কৃষকদের উচ্ছেদ করে ফসলি জমি ও পানের বরজে চারা রোপণ করছে বনবিভাগ। এতে সহশ্রাধিক খেটে খাওয়া কৃষক-শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়ে। তারা বলেন বিগত ২৬ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ রামু উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় রামু রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তাকে রাজারকুলের চাষাবাদী জমি ও পানের বরজ ব্যতিত পাহাড়ে বনায়ন বৃদ্ধির নির্দেশনা দেয়ার পরেও জোরপূর্বকভাবে তারা কৃষি জমিতে চারা রোপন করে দেয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে কৃষক শামসুল আলম,জহির আহমদ,খাজা মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, মোহাম্মদ শফি (শভু),সেলিম উদ্দিন জানান, বিগত ৭০-৮০ বছর যাবৎ তাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে কয়েকশ গরীব কৃষক পাহাড়ের ঘোনায় ধান চাষের উপযোগী নিচু-সমতল ভূমিতে ধানের চাষাবাদ করে জীবন ধারন করে আসছেন। এমতাবস্থায় হতদরিদ্র মানুষগুলোর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন চাষের জমিগুলো কেড়ে নিয়ে শত শত কৃষক ও তাদের পরিবারকে দুঃসহ জীবনের দিকে ঢেলে দেয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।
রাজারকুল ৪নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাবউদ্দিন জানান, বনবিভাগ বনায়নের নাম দিয়ে জোরপূর্বকভাবে দরিদ্র কৃষকদের চাষের জমিগুলো কেড়ে নিয়েছে। এর মাধ্যমে শত শত কৃষক পরিবারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। বনবিভাগ পাহাড়ে বনায়ন না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৃষি জমিতে গাছ রোপন করার ফলে অল্পদিন যেতেই সমস্ত চারা জমিতে জমে থাকা পানিতে মরে গিয়েছে। একই সাথে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা বেহাত হয়ে যায়। তিনি ভূক্তভোগী কৃষকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.