কক্সবাজারে দেশের ইতিহাসে প্রথম অনলাইন বাস টার্মিনাল

মো. নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজারঃ
দেশের ইতিহাসে এই প্রথম অনলাইন বাস টার্মিনাল চালু হয়েছে কক্সবাজারে। শুধুমাত্র কক্সবাজার থেকে যাওয়া যাত্রীগণ এই সুবিধা পাবেন আপাতত। নাম দেওয়া হয়েছে online bus terminal( OBT) ”অনলাইন বাস টার্মিনাল” বা ওবিটি ।www.obtcoxsbazar.com এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সুবিধা পাবে যাত্রী ও পর্যটক, বাস অপারেটর,স্থানীয় সম্প্রদায়,পর্যটন শিল্প,নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ আরো অনেকেই। গুগলে গিয়ে এই নাম দিয়ে সার্চ করলেই চলে আসবে বিস্তারিত। এই মাধ্যমে যে সকল সুবিধা যাত্রীগণ পাবেন তা হলো, সকল বাস সার্ভিসের শ্রেণিভিত্তিক তালিকা । গন্তব্য অনুযায়ী বাস সার্ভিসের তালিকা । ট্রাফিক বিভাগের তত্ত¦াবধানে প্রতিদিনের শিডিউল ও বাস পরিবহনের ব্যবস্থাপনায় থাকবে দৈনিক বাসের শিডিউল । টিকিট মূল্য, বাসের রেজি নং, গাইডের নাম্বার, বাস ছাড়ার স্থান ও গন্তব্য উল্লেখ থাকবে, সকল বাস, চালক ও গাইডের বিস্তারিত তথ্য সংযুক্ত থাকবে। বাসের ফিটনেস ও রুট পারমিটের হালনাগাদ তথ্য। কাউন্টারে, বাসের ভিতরে ও বাহিরে থাকবে কিউ আর কোড সংযুক্ত পোস্টার। স্ক্যান করে রিভিউ ও অভিযোগ দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ ও দুর্ঘটনার ডিজিটাল ডাটা ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। ডিজিটাল বোর্ডে বাসের লাইভ শিডিউল প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেমনটা বিমানবন্দর বা ট্রেন ষ্টেশনে রয়েছে।
দেশ ও বিদেশীদের জন্য এক অন্যতম এলাকা হচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার । এই পর্যটন নগরীকে বিশে^র কাছে আধুনিক ও আইকনিক হিসাবে তুলে ধরতে যাতায়াত ব্যবস্থা বা পরিবহণ খাতকে আধুনিকতার বাউন্ডারিতে নিয়ে আসতে ট্রাফিক পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিনের ব্যতিক্রম এই উদ্যোগ। পর্যটন নগরী কক্সবাজার বাংলাদেশের প্রধানতম পর্যটন আকর্ষণ। প্রতিদিন সহ¯্র পর্যটক সমুদ্র সৈকতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য কক্সবাজার আসেন। বিমান ও রেল পথে কিছু পর্যটক আসলেও সিংহভাগ পর্যটক বাস যোগে সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজার আসেন। প্রান্তিক জেলা হলেও পর্যটন স্পটের কারণে দেশের প্রায় ৪০টির অধিক জেলার সাথে কক্সবাজারের বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজারে ৯০টির অধিক পরিবহন কোম্পানীর প্রায় ছয় শতাধিক বাস যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু কক্সবাজারের বিদ্যমান বাস টার্মিনালের পার্কিং সক্ষমতা মাত্র ৬৮টি বাসের। তাই বাস চালকরা যত্রতত্র বাস পার্কিং করে পর্যটন এলাকায় যানজট সৃষ্টি করে। তাছাড়া ৯০টির বেশি পরিবহন কোম্পানী থাকলেও কক্সবাজার শহরে মাত্র ২২টি পরিবহন কোম্পানীর নিজস্ব টিকিট কাউন্টার রয়েছে। এই সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে কমিশন কাউন্টার। তাই টিকেট, বিশ্রাম প্রভৃতি নিয়ে প্রায়শ যাত্রী হয়রানির ঘটনা ঘটে। পরিবহনে যাত্রী হয়রানির ঘটনা নিয়ে যাত্রী বা পর্যটকদের অভিযোগ জানানোর নেই কোন সুনির্দিষ্ট মাধ্যম। তাই ট্রাফিক বিভাগ, জেলা পুলিশ, কক্সবাজার বাংলাদেশের প্রধানতম পর্যটন এলাকা কক্সবাজার শহরে বাস পরিবহন সংশ্লিষ্ট সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান করার উদ্দেশ্যে একটি ডিজিটাল বাস ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এই ডিজিটাল উদ্যোগের নাম “অনলাইন বাস টার্মিনাল”।

# নাম দেওয়া হয়েছে ওবিটি
# ওয়েব সাইটে সব তথ্য সুবিধা
# ৯১টি পরিবহণ সংযুক্ত
# প্রায় ছয় শতাধিক বাস যাতায়াত
# সকল বাস চালক ও গাইডের তথ্য থাকবে
# শহরে বাস প্রবেশের জন্য অনলাইন আবেদন

ট্রাফিক বিভাগ, কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি উদ্যোগ যা পর্যটন এলাকায় একটি স্মার্ট, নিরাপদ এবং পর্যটন-বান্ধব বাস ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা তৈরি করবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এই অনলাইন বাস টার্মিনাল কক্সবাজারে এসি ননএসি ¯িøপার, ডাবল ডেকার, স্যুইট ক্লাসসহ বিভিন্ন সুবিধার গ্রীণ লাইন, এনা পরিবহণ , দেশ ট্রাভলস, লন্ডন এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে প্রায় ৯১টি পরিবহণের ৩৫৫টি বাস এই ওয়েব সাইটে অন্তরভুক্ত রয়েছে এবং তা দেশের ৪০টি জেলার সাথে সংযুক্ত রয়েছে । কোন বাস কখন ছাড়বে,টিকেটের মূল্য, টিকেট সংগ্রহ, ট্যুরিষ্ট বাস এন্ট্রি পারমিশন, যাবতীয় তথ্য, ও বাসের সংশ্লিষ্ট একজনের নাম্বার, পুলিশের কন্ট্রাক নাম্বারসহ বিস্তারিত দেখা যাবে এই ওয়েব সাইটে। কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশ নিরাপত্তার খাতিরে এই অনলাইন বাস থেকে যারা টিকেট নিবে যাত্রীগণ ঐ বাসের ড্রাইভাবের বিস্তারিত তথ্য থেকে শুরু করে সব জানা যাবে । এমন কি যাত্রীগণ ড্রাইভার গাড়ি কেমন চালাচ্ছেন সেই বাসের যাত্রী সেবা কেমন বা কেউ কোন ধরনের হেনস্থার শিকার হয়েছে কিনা সেই মতামত দিতে পারবেন আর তা কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের ওয়েব সাইড়ে ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাগণ দেখতে পারবেন। যদি কোন গাড়ি যাত্রীদের সাথে খারাপ আচারণ করেছে তবে ট্রাফিক বিভাগ আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারবে।
ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন জানান, অনলাইন বাস টার্মিনাল ধারণাটি একেবারে নতুন হলেও এটা প্রচলিত বাস টার্মিনালের ডিজিটাল রূপান্তর বলা যায়। সাথে রয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চালক ও বাস মালিকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে যাত্রী ও পর্যটকদের ভ্রমণ যেমন নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে, একই সাথে ট্রাফিক ও বাস ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
এই অনলাইন বাস টার্মিনাল (ঙইঞ) বাস ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে বিপ্লব ঘটাবে সেইসাথে মানুষ যেভাবে বাস ভ্রমণের পরিকল্পনা ও বুকিং করে, সুবিধা, দক্ষতা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে আরাম, নির্ভরযোগ্যতা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করছেন ট্রাফিক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ।

 

  1. trendaddictor বলেছেন

    Thank you for the auspicious writeup It in fact was a amusement account it Look advanced to more added agreeable from you By the way how could we communicate

  2. businesstrick বলেছেন

    I just could not depart your web site prior to suggesting that I really loved the usual info an individual supply in your visitors Is gonna be back regularly to check up on new posts

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.