মোঃ নেজাম উদ্দিন,
কক্সবাজারের উখিয়াতে উপজেলা প্রশাসন ও উখিয়া রেঞ্জ অফিসের যৌথ অভিযানে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় একদিনে ৫টি করাতকল সীলগালা করেছে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জ।
বৃহস্পতিবার ( ১৮ আগস্ট ) উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালীর ঘোনারপাড়া নামক এলাকা অবৈধ ৪টি করাতকল সীলগালা করা হয়।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ও থাইংখালী বিভিন্ন জায়গাতে এইসব অবৈধ করাতকল স্থাপন করে তারা গাছ নিধন করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে পালংখালীর ৪নং ওয়ার্ডের তাজনিমার খোলা এলাকার মৃত নুর আহমদের ছেলে ছাবের আহমদের একটি স’মিল,
গজুঘোনা এলাকার নুর আলমের ছেলে শফিকের ১টি,গজুঘোনা এলাকার বজলের ছেলে নাছির উদ্দিনের ১টি, রহমতের বিলের রসুর ছেলে আক্তারের ১টি, ঘোনার পাড়ার মৃত আবদুর রশিদের ছেলে নুরুল বশরের ১টি এভাবে মোট ৪টি স’মিল সিলগালা করা হয়েছে বলে জানান বনবিভাগ।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন সজিব জানান, উখিয়াতে বেশ কিছু অবৈধ করাতকল আছে জানতে পেরে উখিয়া রেঞ্জসহ অভিযানে ৪টি করাতকল সীলগালা করা হয়।অভিযান চলমান থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়া রেঞ্জ কমকর্তা গাজী শফিউল আলমের নিয়মিত টহলকালে করাতকলের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে মালিকপক্ষ কোন বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় করাতকল সীলগালা করা হয়।
রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, উপজেলা প্রশাসন ও উখিয়া রেঞ্জ অফিসের যৌথ অভিযানে পালংখালী ইউনিয়নের ৪টি করাত কলের বৈধ কাগজ দেখতে চাইলে তারা কোন ধরনের কাগজ আমাদের দেখাতে পারেনি। তাই আমরা আজকে ৪টি করাতকল সীলগালা করে দিয়েছি। এবং করাতকলে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে।তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাদের করাতকল সীলগালা করা হয়েছে করাতকলবিধিমালা /২০১২ মূলে মামলা প্রক্রিয়াধিন বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ সরওয়ার আলম জানান, আজকে ৪টি অবৈধ করাতকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনভাবে এই অবৈধ করাতকল থাকবে না । যারা অবৈধ করাতকল বসিয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরোদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ২১২টি করাতকলে উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এতে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই বনাঞ্চলের আশপাশে অবৈধভাবে এসব করাতকল স্থাপন করা হলেও তা উচ্ছেদ করা হচ্ছে না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২১২টি করাতকলের রয়েছে তার মধ্যে চকরিয়ায় ৩৯, পেকুয়ায় ১৮, সদর উপজেলায় ৩৩, টেকনাফে ২২, রামুতে ২৬, কুতুবদিয়ায় ১৩, মহেশখালীতে ২১ ও উখিয়ায় ৪০টি রয়েছে। এসব করাতকলের কোনোটির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ১৭টি করাতকলের বন বিভাগের লাইসেন্স থাকলেও ইতিমধ্যে তা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।। বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের ভেতরে করাতকল স্থাপন না করার নিয়ম থাকলেও ৯০ শতাংশ করাতকল স্থাপন করা হয়েছে বনাঞ্চলের আশপাশে।
সাধারণ মানুষ মনে করঠে এভাবে যদি অবৈধ স’মলিগুলো বন্ধ করা হয় তবে সামাজিক বনায়ন ও বন রক্ষা পাবে। এর আগেও কক্সবাজারের উখিয়া রেঞ্জ এর অধিনে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু স’মিল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.