সাহিত্য জগতে নতুন ধারার প্রতিভাময় নারীকবি কুমিল্লার “লায়লা আরজুমন শিউলী”

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাংলা সাহিত্যে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। আঠারো শতকের মধ্যভাগে বাংলা সাহিত্যে নারী লেখিকাদের আবির্ভাব ঘটে। বাংলা সাহিত্যকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়; প্রাচীন যুগ (৬৫০-১২০০), মধ্যযুগ বা অন্ধকার যুগ (১২০০-১৮০০) ও আধুনিক যুগ (১৮০০- এখন পর্যন্ত)। মধ্যযুগ অনেকেই অন্ধকার যুগ বলে দাবি করেন। কারণ এই যুগে রচিত কোন সাহিত্য কর্মের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সে ক্ষেত্রে সাহিত্যে নারীদের ভূমিকা খুব একটা পিছিয়ে নেই। সেই সময় যেসব মহীয়সী নারীরা ঘরে ঘরে আলোর প্রদীপ জেলে দিয়ে গেছে। বাংলা সাহিত্যের এমন কয়েকজন গুণী কবি সাহিত্যিক আসলেও সাম্প্রতিকতম সময়ে ভিন্ন রসে নারীরা কবিতাকে রুপ দিচ্ছে আর সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে এগিয়ে নিচ্ছে।

যাদের অন্যতম কুমিল্লার প্রতিভাবান মহিয়সী নারী “লায়লা আরজুমন শিউলী”। ২০১৪ সালে লায়লা আরজুমান শিউলী”র কালি কলম প্রকাশনী থেকে “বঙ্গ জননী কাব্য, ২০১৫ সালে ইমন প্রকাশনী থেকে “ভালোবাসা কখনো মরেনা”কাব্য গ্রন্থ ২০১৬ সালে প্রচলন প্রকাশনী থেকে “অতৃপ্ত অমৃত”কাব্য, ২০১৭ সালে ইমন প্রকাশনী থেকে তিনটি গীতিকাব্য”১সুরধারা ২সুর সাগরের তরী ৩ গাইবো সুরে সুরে প্রকাশিত হয়। দেশের প্রতিটি বুকস্টলে পাওয়া যাচ্ছে তার কবিতার বইগুলো। বেশ পাঠকপ্রিয়তা আর সাহিত্য জগতে ঝড় তোলে কবিতায় তার নিপুন শব্দ বাচাই এর গুণটি। কবি লায়লা আরজুমন শিউলীর জম্মস্থান ময়মনসিংহের নান্দইল থানার অরন্যপাশা গ্রামে,শ্বশুড় বাড়ী কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার বেলাশ্বর গ্রাম। তবে সাহিত্য হাতেখড়ি খুব ছোট কাল থেকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও পল্লী কবি জসিম উদদীন এর কবিতার প্রেমে ডুবে থাকতেন। এখনো প্রচুর বই পড়েন।

চেষ্টা করেন ভাবের পরিণতি কবিতায় রুপ দিতে, শব্দ সাগরে খুজে বেড়ান নতুন নতুন শব্দ ছন্দ। কবির বাবা মৃত আবদুল গফুর, মাতা রেজিয়া বেগম। বাবা পেশায় সৈনিক ছিলেন। দেশের জন্য নিজের জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেন। নয় ভাই বোনের মধ্যে ৭ম তিনি তবে পরিবারের সবাই চাকরী জীবি কোন না কোন পদে। কবি শিউলি নিজেও small farmers development foundation ar senior field officer হিসাবে কর্মরত। দুই প্রতিভাবান ছেলে কুমিল্লা সরকারী কলেজ ও চান্দিনা পাইলট স্কুলে অধ্যয়নরত। কবি নিজেও কুমিল্লা সরকারী মহিলা কলেজের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। কবি তার”লালের গল্প” কি সুন্দর করে বলেছেন, কৃষ্ণচূড়াকে প্রশ্ন করেছি/ এত লাল কোথা পেলে? বেদনা বিষাদে কৃষ্ণচূড়ার/ চিত্ত উঠিল জ্বলে। রক্তজবাকে প্রশ্ন করেছি/ পলাশকে বলেছি ভাই, লালিমার মাঝে, কী এমন শোক?/ সে কথা জানতে চাই। দেশের বিভিন্ন সাহিত্য অনুষ্টানে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানে ছয়টি পদক পেয়েছে এই নারী প্রতিভা। এমনকি কলকাতা থেকেও সাহিত্য পদক অর্জন করে দেশের সুনাম সৃষ্টি করেছে। কবিতায় অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক জলাঙ্গী বাংলা কবিতা ও লোক উৎসব সম্মাননা পদক,কবি নজরুল সম্মাননা পদক,কবি জসিম উদ্দিন সম্মাননা পদক,জাতীয় শিশু দিবসে বিশেষ সম্মাননা পদক অর্জন করেন। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ,আর তিনটি গীতি কাব্য,মোট আটটি বই বাজারে রয়েছে তার। এসব বই শিশু কিশোরদের মেধা বিকাশ ও সাহিত্যরস যোগাতে বেশ ভূমিকা রাখছে বলে জানা যায়। কেননা কবি লায়লা আরজুমান শিউলির কবিতায় স্থান পেয়েছে দেশপ্রেম,মানবিকতা, প্রকৃতিপ্রেম আর মানবপ্রেমের মতো সত্য উপাদান। আসুন সকলে বই পড়ি জগত গড়ি এমন আহ্বান স্বয়ং কবি শিউলির।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.