‘মি. চ্যাম্পিয়ন্স লিগ’

এ রকম নাম করণের কারণটাও স্পষ্টই। ২০১৬ সালে প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই বছরই রিয়ালকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতিয়েছেন জিদান। বিশ্বের অনেক বড় বড় ফুটবল-বোদ্ধা, কোচদের মতেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতা বিশ্বকাপের চেয়েও বেশি কঠিন।

সেই কঠিন কর্মটিই জিদান নিজের হাত যশে করেছেন অনায়াসে। তার হাতের জাদুর ছোঁয়াতেই রিয়াল গড়েছে ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের অনন্য কীর্তি। তবে এ সবই ফুটবলপ্রেমীদের জানা।

জানা সেই বিষয়টি নিয়েই নতুন করে আলোচনা করার কারণ, আর কদিন পরই সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের বাঁচা-মরার লড়াই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের ম্যাচ এমনিতেই বাঁচা-মরার। হারলেই বাদ। পিএসজির বিপক্ষে শেষ ষোল’র দ্বৈরথটি রিয়ালের জন্য আরও বাঁচা-মরার বানিয়ে দিয়েছে তাদের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা।

লিগ, কোপা ডেল রের আশা এরই মধ্যে শেষ। ব্যর্থতার কানাগলি দিয়ে হাঁটা রিয়ালের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগই এখন একমাত্র আশা। কিন্তু সেই আশাও শঙ্কার আবরণে ঢাকা। কারণ, ড্র ভাগ্য শেষ ষোলতেই রিয়ালকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে পিএসজির সামনে। নেইমার, কাভানিদের ছোঁয়ায় যে পিএসজি রীতি মতো উড়ছে।

একদিকে পিএসজির জয়রথ টগবগিয়ে ছুটে চলেছে। অন্য দিকে চরম দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে রিয়াল। এই অবস্থায় ফুটবল-বোদ্ধাদের অনেকেরই ভবিষ্যদ্বানী, নেইমার-কাভানিদের উড়ন্ত পিএসজির সঙ্গে পেরে উঠবে না ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, বেল-বেনজেমাদের রিয়াল। কিন্তু দ্বৈরথটা যেহেতু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবং কোচের দায়িত্বে জিদান, হতাশা দূরে ঠেলে ঠিকই আশার ছবি আঁকছেন রিয়াল সমর্থক-বোদ্ধারা।

রিয়াল সমর্থকদের চোখে জিদান সত্যিকার অর্থেই ‘মি. চ্যাম্পিয়ন্স লিগ’। আর মি. চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ঠিকই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলের জয় পতাকাই উড়াবেন। শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগই নয়, পিএসজির বিপক্ষে দ্বৈরথ নিয়ে রিয়াল সমর্থকদের আশাবাদী করে তুলছে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে কোচ জিদানের অনন্য কীর্তিও।

দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে মোট ১২টি ডু-অর-ডাই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে জিদানের রিয়াল। মাদ্রিদ জায়ান্টরা জিতেছে তার ১২টিতেই! দুই মৌসুম মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটপর্বে ৬ দ্বৈরথের ৬টিতেই জয়। জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দুটি ফাইনালেও। এর পাশাপাশি দুটি উয়েফা কাপ এবং দুটি ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালেও জিতেছে জিদানের রিয়াল।

মানে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে গত দুই বছরে কোনো হার নেই রিয়ালের। যার হাতের ছোঁয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন অবিশ্বাস্য কীর্তি. সেই ‘মি. চ্যাম্পিয়ন্স লিগ’ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আরেকটি নকআউট দ্বৈরথে রিয়ালকে জয় এনে দিতে পারবেন না!

উল্লেখ্য, দুই দলের শেষ ষোল’র দ্বৈরথের প্রথম লেগ ১৪ ফেব্রুয়ারি। রিয়ালের ঘরের মাঠ এস্তাদিও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। পিএসজির ঘরের মাঠের ফিরতি লেগ ৬ মার্চ।