মহেশখালি ধলঘাটায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতিঃ পানি সম্পদ মন্ত্রীর দৃষ্টিপাত জরুরী

বিশেষ প্রতিবেদকঃ মহেশখালি উপজেলার ধলঘাটা উপকূলে গ্রামরক্ষা বাধ নির্দিষ্ট সঠিক সময়ে হচ্ছেনা ঠিকাদারের গাফিলতিতে এমন অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২টি পোল্ডারে বেড়িবাঁধ নির্মাণের নির্দেশ থাকা সত্বেও কাজ ঝিমিয়ে রয়েছে বলে জানায় অন্যদিকে ঠিকাদারের এমন অবহেলায় কাজ না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ধলঘাটা গ্রামের ৩০হাজার মানুষ শরানার্থী হতে সময় লাগবেনা জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব অর্থায়নে কাজটি পেয়েছে ঠিকাদারী হিসাবে বাংলাদেশ নেভী। যার হামিদখালী থেকে শরইতলা পাড়া পর্যন্ত ১ কি:মি: যেটির কাজ এখনো শুরু হয়নি। ফলে এলাকাবাসীরা ভয় ভীতির মধ্যে রয়েছে যেহেতু এই বর্ষা মৌসুমের আগেই এখনো কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা। এই অবস্থায় এই বর্ষা মৌসুমে এলাকা রক্ষায় ইতিমধ্যে মাটি ও জিও ব্যাগ ধারা জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ নির্মানের জন্য ব্যাপক তদবির করেছিলো স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান । ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে ঠিকাদারের লোকজন কাজ শুরু করতে দেরি করলেও দু’পক্ষের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। তবে এখনো ৪ কিঃমি বেরিবাধের কাজ হচ্ছেনা বলে জানা যায়,যার ঠিকাদারী কাজ সমপন্ন করার কথা বাংলাদেশ নেভীর বাস্তবায়ন তত্বাবধায়নে। সূত্র জানায়, ধলঘাটাকে সু-রক্ষিত করার জন্য বর্তমান সরকারের উন্নয়নে এই পর্যন্ত বেড়িবাঁধ এর জন্য বরাদ্ধ এসেছে, স্থায়ীভাবে বেড়ি বাঁধ নির্মানের এর জন্য- ৮৮ কোটি। যার ১৮ কোটি টাকার কাজ চলছে। এমনকি জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ এর জন্য- ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার কাজ চলছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মানের জন্য ৭ কি:মি:এর অনুমোদন মিলেছে। এই ৭ কি:মি: এর মধ্যে ৩ কি:মি: বাঁধ হবে পাথর আর ব্লক দিয়ে। বনজামিরা থেকে হামিদখালী পর্যন্ত ১ কি:মি: যেটির কাজ করছে ঠিকাদার বশির আহমদ ও মিঠু । অন্যদিকে শরইতলা থেকে বেগুনবুনিয়া পর্যন্ত ১ কি:মি: যদিও অস্থায়ী জরুরী ভিত্তিতে কাজ চলছে। ভারত ঘোনার একাংশ থেকে সাপমারার ডেইল ঘাট পর্যন্ত ১কি:মি: এখানেও অস্থায়ী জরুরী ভিত্তিতে কাজ চলছে। এত কিছুর পরেও এই বর্ষা মৌসুমের পুর্বে কিছু কিছু প্রতিষ্টান ও ঠিকাদার স্থায়ী বেড়িবাঁধ এর কাজ শুরু করে বাকি ৬ কি:মি: এর বাঁধ সমাপ্ত হলে ধলঘাটাবাসীর দুঃখ লাঘব হবে মনে করে। অন্যদিকে বিভিন্ন সাইটে বেড়িবাঁধ নির্মাণ,জিও ব্যাগ,জিও টিউব ও ব্লক পূন:স্থাপন প্রকল্পে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। পাউবোর এক কর্মকর্তা জানান,যেখানে বর্ষার পুর্বে গ্রামটিতে কাজ করা না হলে পানিতে তলিয়ে যাবে। সেখানে কাজে দেরি হবার প্রশ্নই উঠে না। তবে সংশ্লিষ্টসুত্রে জানা যায়,ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গড়িমসি করছে। থোক বরাদ্দের অর্থ ছাড় সাপেক্ষে কিস্তিতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পেয়ে থাকে। তার আগে ঠিকাদার থেকে কাজ বুঝিয়ে নেয় পাউবো। বরাদ্দের এসব টাকা ছাড় পেতে সময় লাগবে অন্তত তিন বছর। এরইমধ্যে আবারো জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেসে গেলে পুনরায় বাঁধটি নির্মাণ করতে হবে ওই ঠিকাদারকে। এ কারণে হয়তো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করতে দেরি হচ্ছে বলে ধারণা করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,বর্ষা মৌসুমে যাতে নদ-নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে জনপদ ভাসাতে না পারে সে জন্য নদীর তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদীভাঙ্গন ঠেকাতে নদীর তীর সংরক্ষণে প্রতিবছর অসংখ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) দেওয়া মোট বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশই ব্যয় হয় এ খাতে। কিন্তু সময়মতো প্রকল্পের টাকা না পাওয়া,বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নে চরম অনিয়ম-দুর্নীতি হওয়ায় এবং নির্মিত বেড়িবাঁধ সংস্কারে কোনো টাকা বরাদ্দ না দেওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে সুফল পাচ্ছে না সরকার ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। স্থানীয় যুবক শাহিনুল ইসলাম জানান,ধলঘাটার সব‌চে‌য়ে ভয়ংকর ভী‌তিকর ও ঝু‌কিপুর্ণ জায়গা হল হা‌মিদখালী প‌য়েন্ট ও ভারত ঘোনা প‌য়েন্ট। এই দুই জায়গায় টেকসই বে‌ড়িবাধ না হ‌লে ধলঘাটাবাসী আবার ও পানিতে তলিয়ে যাবে। এমতাবস্থায় গ্রামবাসী চায়, আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আ‌গেই টেকসই বে‌ড়িবাধ নির্মা‌নের মাধ্য‌মে এলাকাবাসী‌কে জোয়া‌রের পা‌নির কবল হ‌তে রক্ষা পাওয়ার উ‌দ্যোগ নেওয়ার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এ ব্যাপারে কক্সবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানান,বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ আশা করি ব্যবস্থা নেবে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.