বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতকে ঘিরে আধুনিক বিশ্বমানের পর্যটন গড়তে চান

নেজাম উদ্দিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার,

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আজ বিশ্ববাসীর নানার বাড়ি হিসেবে রূপলাভ করেছে। ৮০ দশকেও গোচারণ ভূমি ছিল আজকের হোটেল-মোটেল জোন। এখানে গড়ে উঠেছে ৪ শতাধিকেরও অধিক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। যেখানে লাখো পর্যটক একসঙ্গে রাত্রিযাপনের সুযোগ পায়।

বিগত অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে এই হোটেল-মোটেল এলাকা থেকে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে সরকার। কিন্তু তার বিপরীতে উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে এ পর্যটন এলাকা।

সেই সঙ্গে রয়েছে যাতায়তসহ সব ক্ষেত্রে অবহেলার ছাপ। আজ সময় এসেছে বদলানোর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বিশ্বের দীর্ঘতম সৈতককে ঘিরে আধুনিক বিশ্বমানের পর্যটন। নবগঠিত কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বিনিয়োগকারীদের সহযোগী পথচলা কক্সবাজারকে বিশ্বমানের পর্যটনে রূপান্তর সম্ভব।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দের আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় গেস্ট হাউস এলাকায় কক্স ইন রিসোর্টের হল রুমে গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সোলতানের সভাপতিত্বে এ সভার আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ। বক্তব্য রাখেন,  কউক সদস্য প্রকৌশলী বদিউল আলম, ডা. সাইফুদ্দিন ফরাজী, অ্যাড. প্রতিভা দাশ, সদস্য (প্রকৌশল) লে. কর্নেল আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্যে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আশির দশকে গোচারণ ও ক্ষেতের ভূমি হিসেবে থাকা ৪৪ একর জমিতে এখন ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। ১২ হাজার রেস্তোরাঁ শ্রমিকসহ অর্ধলাখ মানুষ পর্যটন সেবায় শ্রম দিয়ে পরিবার চালাচ্ছে। গড়ে উঠা ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল থেকে প্রদেয় রাজস্ব দেশের প্রতিষ্ঠিত অন্য শিল্প থেকে কোন অংশে কম নয়।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে তিনটি সড়ক নির্মাণ সম্ভব হলে পর্যটনের চেহারাই পাল্টে যাবে। পর্যটনকে বিশ্বমানের করতে হলে এখানে একটি পর্যটন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

সভায় বক্তারা বলেন, চলমান বিশ্বের অন্যান্য পর্যটন এলাকার চেয়ে এখানে অধিক কম খরচে অবস্থান করা যায়। রেল লাইনটা দ্রুত সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে ঢাকাসহ দেশের সব প্রান্ত থেকে যাতায়তটাও সহজ হবে। পাশাপাশি পর্যটনও কয়েক ধাপ এগোবে।

পরিকল্পিত পর্যটন ও ঘুরতে আসা পর্যটকদের অবস্থান বাড়াতে পার্ক স্থাপন ও বিনোদনসহ নানান সুযোগ বাড়াতে লিখিত ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বদরুল হাসান মিল্কী।

জবাবে কউক চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ বলেন, বিশ্বে পর্যটন এখন অতি সম্ভাবনাময় শিল্প। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে থাকায় তিনি বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতকে ঘিরে আধুনিক বিশ্বমানের পর্যটন গড়তে চান। এ কারণে কউক গঠন করে কক্সবাজারের সন্তান হিসেবে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

এছাড়া দুর্নীতি মুক্ত কউক গঠনে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সভায় সমিতির শতাধিক সদস্য উপস্থিত থেকে উন্মুক্ত আলোচনায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.