টিউলিপ সিদ্দিক: আমি ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন

ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার কন্যা ও লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এমপি টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন বলে দাবি করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর বাতিল নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে উত্তপ্ত বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার পার্লামেন্টের ওয়েস্টমিনিস্টার হলে তিন ঘণ্টার এ বিতর্কে অংশ নেন  লেবার পার্টি’র টিকিটে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে নির্বাচিত এমপি টিউলিপ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি তার (ট্রাম্প) সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন। আমি একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর (শেখ রেহানা) মেয়ে। আর আমি বেড়ে উঠেছি একটি মুসলিম পরিবারে। এর চেয়েও ভয়ঙ্কর কথা হলো, আমি এমন একজন নারী যার নিজস্ব অভিমত রয়েছে। যে কারণেই হোক, আমার মনে হয় না আমি তার ক্রিসমাস কার্ডের তালিকায় থাকব।’

ওই বিতর্ককে কেন্দ্র করে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপিরা।

ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরের বিরুদ্ধে তীব্র জনমতের প্রসঙ্গ টেনে টিউলিপ বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষ পিটিশনে স্বাক্ষর করে জানিয়েছেন যে, তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফর চান না। হোয়াইট হলসহ সারাদেশেই হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে জানিয়েছেন যে, তারা ট্রাম্পকে এই দেশে স্বাগত জানাতে রাজি নন।’

টিউলিপ আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ জনগণ শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী। আমাদের পরস্পরের প্রতি সম্মান রয়েছে। আমরা যদি অবিচারের বিরুদ্ধে কথা না বলি আর ধর্মান্ধতাকে চ্যালেঞ্জ না জানাই, তবে আমরা নিজেদের মূল্যবোধকে ধরে রাখতে পারব না। ট্রাম্পের ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বিষবাষ্প, নারীবিদ্বেষ ও বিভাজনের মন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো উচিত হবে না।’

ওই বিতর্কের আগে উত্থাপন করা হয় দু’টি পিটিশন। এর মধ্যে একটি ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরের বিরুদ্ধে। এতে স্বাক্ষর ছিল ১৮ লাখ মানুষের। অন্যদিকে ট্রাম্পের সফরকে সমর্থন জানিয়ে অন্য একটি পিটিশনে স্বাক্ষর ছিল ৩ লাখ মানুষের। যুক্তরাজ্যের সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, এক লাখ স্বাক্ষর রয়েছে এমন যেকোনও পিটিশনকেই সংসদে বিতর্কের জন্য উত্থাপন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বেনথাল গ্রিন অ্যান্ড বাউ আসনের সংসদ সদস্য রুশনারা আলী বিতর্কে ট্রাম্পের সফরকে রাষ্ট্রীয় সফর থেকে অবনমিত করে সরকারি সফর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নির্যাতন সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য এবং তার নারীবিদ্বেষী ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থানের কারণে তাকে একটি রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানানো হলে তা আমাদের রানি ও আমাদের রাজত্বের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হবে। সরকারের উচিত হবে, এই সফরকে দু’টি সরকারের মধ্যেকার একটি সফর হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখা।  রানিকে এর বাইরে রাখা।’

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.