স্বরূপে ফিরছে সৈকত নগরী
মো. নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজারঃ
আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ই আগষ্ট পদত্যাগের পর পর্যটন নগরী কক্সবাজার লুঠপাটের শহরে পরিণত হয়। কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে কছিু দুস্কৃতিকারি সরকারি স্থাপনায় যেমন আগুন দেওয়ার মতো নাশকতা কাজ করেছে ঠিক তেমনি থানা থেকে শুরু করে সরকারি স্থাপনা লুটপাট শুরু করেছিল । বিএনপি ও সাবেক সরকার বিরোধী অন্যান্য দল শোডাউন করে পুরো পর্যটন শহরে । এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন এলাকার বেশ কয়েকটি হোটেলে চলেছে ডাকাতি লুটপাট। তবে এখন অন্তবর্তী সরকার গঠনের পর থেকে কক্সবাজারে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন বড় ধরণের ঘটনা ঘটেনি । দূর পাল্লার বাস যাতায়াত শুরু হওয়ার কারণে এখন আবারো আগের মতো পর্যটক আসা শুরু করেছে। পর্যটন এলাকা কক্সবাজার আবারো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা আগের মতো দোকান খুলে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আইনশৃংলা রক্ষায় মাঠে থাকার কারণে বেশ পরির্বতন এসেছে আইনশৃংখলায়।
# পর্যটক আসতে শুরু করেছে
# লুটপাট হয়েছে অনেক হোটেল
# হোটেল মোটেল নিরাপত্তায় র্যালি
সুগন্ধা পয়েন্টের ঝিনুক ব্যবসায়ী হাসান জানান, গতকাল থেকে পর্যটক আসা শুরু করেছে। যদি আইন শৃংখরা বাহিনী আরেকটু সজাগ থাকে তবে আগের পরিবেশ ফিরে আসবে।
শহরের বার্মিজ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আবু মুছা জানান, কোটা আন্দোলনের কারণে বেশ কিছুদিন ব্যবসায়ীদের বেশ রসে পড়তে হয়েছে। এখন যদি আইনশৃংখলা ঠিক তাকে ও দেশের পরিস্থিতি ঠিক থাকে তবে কক্সবাজারে পর্যটক আসবে আর তাতে ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা বাড়বে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আবু মুর্শেদ চৌধুরী খোকা জানান, দেশে চলমান পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীগণ ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সাথে আমার কথা হয়েছে । এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক তাই সুন্দরভাবে ব্যবসা করার জন্য বলা হয়েছে । আশা করা যায় এমন পরিবেশ থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে। এদিকে হোটেল মোটেল জোনে দেখা যায় বেশ কয়েকটি হোটেলে খবর দিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ হোটেল মোটেল বুকিং রয়েছে।
হোটেল রিগ্যাল প্যালেস এর জি এম হানিফ হেলালী জানান, গত দেড়মাস আমরা ব্যবসা করতে পারিনি। তবে এখন হোটেল রুম বুকিং দিচ্ছে পর্যটকরা। গতকাল বেশকিছু পর্যটক ছিল। আশা করা যায় সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বেশ পর্যটক সমাগম হবে।
এদিকে রবিবার বিকালে কক্সবাজার সমুদ্র এলাকা সুগন্ধা পয়েন্টে গেলে দেখা মিলে প্রচুর পর্যটক সমাগম হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়অরা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। ঘোড়াওয়ালা, জেটস্কি থেকে শুরু করে সবাই যার যার মতো ব্যস্ত সময় পার করছে। বাদাম বিক্রেতা (নাম প্রকাশে অনিহা) জানান, গতকাল থেকে পর্যটক সমাগম হয়েছে। বেচা বিক্রয় বেড়েছে।
অন্যদিকে পর্যটক নিরাপত্তায় টুরিষ্ট পুলিশের দেখা মেলেনি সমুদ্র সৈকতে । লাইফ গার্ড় যারা রয়েছে তারা নিরাপত্তায় কাজ করছে বলে তারা জানান।
এদিকে হোটেল সানসিট বে এর সত্ত¡াধিকারি একেএম মুনিবুর রহমান টিটু জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরে কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনে একদল দুস্কৃতিকারি লুটপাট শুরু করে পর্যটন জোনের বিভিন্ন হেটেলে ড়–কে তারা বিভিন্ন দামি আসবাবপত্র ও নগদ টাকা লুট করা শুরু করেছে । গত ৫ আগষ্ট গভীর রাতে আমার হোটেলে ডুকে ম্যানেজার ও পাহারাদারদের জিম্মি করে রেখে টেলিভিশন, আসবাবপত্র ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তখন থানাতেও হামলা হওয়ার কারণে কোন ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিতে পারিনি । আশা করছি সেনাবাহিনী বিষটি দেখবেন এখন।
হোটেল মোটেল জোনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সম্প্রতি তারা এর প্রতিকার চেয়ে হোটেল মোটেল মালিক ও কর্মকর্তা কর্মচারিরা মিছিল বের করেন।
হোটেল দ্যা আলম এর জিএম মিজানুর রহমান জানান, গত ৫ই আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে পর্যটন এলাকায় কোন পুলিশ বা আইনর্শংখলা বাহিনীর সদস্য না থাকার কারণে বেশ কয়েকটি হোটেলে লুটপাট ও ডাকাতি হয়। এর প্রতিকার চেয়ে ৮ই আগষ্ট নিরাপত্তা চেয়ে আমরা হোটেল কর্মকর্তারা র্যালি করেছিলাম । এখন কিছুটা শান্ত রয়েছে পরিবেশ। তবে আগের মতো পর্যটক নেই । আশা করা যায় যদি এবাবে থাকে পরিবেশ তবে পর্যটক বাড়বে।
সেনাবাহিনীর পক্ষে কক্সবাজারে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল তানভীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি সম্পদ। সুমদ্র ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে পর্যটকরা ভ্রমণে আসেন এই জেলায়। এখন থেকে পর্যটকরা এখানে নিরাপদে ভ্রমণ করবেন। পর্যটক ও পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের সকল থানা কার্যক্রম এখন থেকে স্বাভাবিক। জনগনের সকল সেবা প্রদানের জন্য থানার পুলিশ কাজ শুরু করেছে। প্রতিটি থানায় আগে থেকে নিরাপত্তায় আনসার সদস্য রয়েছে। এখন সেনা সদস্যরা নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের সদস্যরা থানায় ফিরে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.