কোস্ট ট্রাস্ট ও সিএসও-এনজিও ফোরাম এর যৌথভা সভায় রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পালনে জাতিসংঘ এবং বিদেশি এনজিওদের প্রতি আহবান
মোঃ নেজাম উদ্দিন
রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রমে গ্রান্ড বারগেন নামের আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিগুলো পালনে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক এনজিওদের প্রতি করার আহবান জানানো হয়েছে।
শনিবার (৩ মার্চ) ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে কোস্ট ট্রাস্ট এবং কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) এর যৌথভা সভা থেকে আহবান জানায় বক্তারা। “Integrating Grand Bargain Commitments in FDMN (Forcibly Displaced Myanmar National) Relief and Facilitating Localization
শীর্ষক এই আলোচনা সভার বক্তারা স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে পরিচালনা ব্যয় কমানো এবং অধিকতর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফ’র কো-চেয়ার এবং পালস-এর নির্বাহী পরিচালক আবু মুর্শেদ চৌধুরী এবং সিসিএনএফ’র আরেক কো চেয়ার এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল অফিস অব মাইগ্রেশান-এর ডিপুটি চিফ আব্দুস সাত্তার, ইউএনসিআর-এর ভিনসেন্ট গুলা। বক্তব্য রাখেন- মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের শাহীন আনাম, ডিজাস্টার ফোরামের গওহর নঈম ওয়ারা, অক্সফামের এমবি আখতার, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের একেএম মুসা, খ্রিস্টিয়ান এইডের শাকিব নবী, জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয়ের হেনরি গেরিয়েক্স ও লেইন ক্রেইন্ক, কানাডা দূতাবাসের আরাশ, ইসিএইচও-এর মিজ সুরঙ্গা, নেদারল্যান্ড দূতাবাসের জোরেন স্টিগস এবং ডিএফআইডি-এর ওমর ফারুক।
আলোচনা সভায় রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রমে গ্রান্ড বারগেন প্রতিশ্রুতি কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে সে বিষয়ে পরিচালিত গবেষণার সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন জিএমআই/নেভিগেশন ৩৬০ এর কোয়েনরাড ভ্যান ব্রাবান্ট এবং কোস্ট ট্রাস্টের মো. মজিবুল হক মনির। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের উপর অত্যাধিক গুরুত্বারোপ করে স্থানীয় সক্ষমতাকে অবহেলা করা, অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয়, যথাযথ সমন্বয়ের অভাব, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে অধিক বেতনে বিদেশি এনজিওতে কর্মী নিয়োগ দেওয়া, স্থানীয় এনজিদের ভূমিকার যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং স্থানীয় প্রতিবেশ-পরিবেশের উপর গুরত্ব না দেওয়ার সমালোচনা করা হয় তাদের উপস্থাপনায়। তারা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে নেতুত্ব এবং সমন্বয়ের ভূমিকায় আরও বেশি সুযোগ দেওয়া এবং স্থানীয় জনসাধারণ ও স্থানীয় পরিবেশের ক্ষতির উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দেওয়ার আহবান জানান। এ গ্রান্ড বারগেনের প্রতিশ্রুতিগুলোকে বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়, যাতে কর্মসূচি বা প্রকল্পগুলোতে অধিকতর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।
শাহীন আনাম বলেন, মানবিক সংকটে সাড়া প্রদান বা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশী এনজিওরা যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করেছে, তাদের বিদেশি বিশেষজ্ঞের এখন খুব কমই দ্বারস্থ হতে হয়। আব্দুস সাত্তার বলেন, ইন্টার সেক্টরাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ এবং স্ট্র্যাটিজিক এক্সিকিউটিভ গ্রুপ রোহিঙ্গা ত্রাণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, কার্যকারিতা নিশ্চিত করার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। ভিনসেন্ট বলেন, ইউএনএইচসিআর মানবিক সহায়তায় স্থানীয়করণ দেখতে চায়।
একেএম মুসা বলেন, সব স্থানীয় এনজিওদেরই মানবিক সংকট মোকাবেলায় আলাদা বিভাগ থাকা উচিৎ। শাকিব নবী বলেন, স্থানয়ি জনসাধারণ এবং স্থানীয় পরিবেশের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তার কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে হবে। এমবি আখতার বলেন, স্থানীয় এনজিওদের অধিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্বচ্ছতা এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের স্থায়িত্বশীলতা অর্জনের জন্য স্থানীয় এনজিওদেরকে সহায়তা করতে হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.