কুতুবদিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ২০ গ্রাম প্লাবিত

মহিউদ্দীন কুতুবীঃ

কুতুবদিয়া দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫/৬ ফুট পানির উচ্চতায় বৃদ্ধি বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (২৫ মে) সকালে উপকূলের ভাঙন বাঁধ দিয়ে জোয়ার প্রবেশ করে ২০ গ্রামের দুই শতাধিক ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। খবর পেয়ে ইউএনও মোঃ নুরের জামান চৌধূরী, পিআইও খোকন চন্দ্র দাশ, রেড ক্রিসেন্ট টিম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। প্লাবিত এলাকার মধ্যে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরী ভিত্তিতে ৫ হাজার মানুষের জন্য খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ কাজ চলমান। প্লাবিত এলাকার লোকজন নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। ঘূর্ণিঘড় ইয়াস মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন কন্টোর রুম খোলা হয়েছে। তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হয়নি বলে ইউএনও নিশ্চিত করেন। তবে প্রত্যক ইউপির চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রেরণের নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুতুবদিয়া উপকূলে ৪০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার বাঁধ ভাঙা থাকায় আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কাহারপাড়া, তেলিপাড়া, হায়দার বাপের পাড়া, পশ্চিম তাবলরচর, পূর্ব তারলরচর, বড়ঘোপ ইউনিয়নের আজম কলোনী,মিয়ারঘোনা, উত্তর বড়ঘোপ,সাইটপাড়া, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মলমচর, মফজল ডিলারপাড়া, মহাজনপাড়া, মতিরবাপের পাড়া, লেমশীখালী ইউনিয়নের পেয়ারাকাটা,উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের সতর উদ্দিন, ধুরুংঘাট, আকবরবলী ঘাট, নয়াকাটা, কায়ছারপাড়া,দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বাতিঘরপাড়াসহ ২০টি গ্রামে জোয়ার ঢুকে ব্যাপক এলাকা প্লাকিত হয়েছে। এসব উপকূলীর এলাকার ঘরবাড়ি জোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় শত শত মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। শুকনো পুকুর খাল বিল নোনা জলে ঢুবে গেছে। পানি বন্দি মানুষের মাঝে পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সভাবনা দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করছে স্থানীয় জনগন।
কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধূরী বলেন, প্লাবিত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরী করার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেন। প্লাবিত এলাকার লোকজনকে নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য রেডক্রিসেন্ট টিম ও দলীয় নেতাকমীর্দের কাজ করার জন্য অনুরোধ করেন। পরিষদ ও সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে।
আলী আকবর ডেইল ইউপির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছাফা ও নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ মোঃ জাহাঙ্গির আলম সিকদার বলেন, তাদের ইউনিয়নে কয়েকটি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন চরম দূভোর্গে পড়েছে। ইউপির সদস্য ও নেতাকমীর্দের নিয়ে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। খবর পেয়ে সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধূরীও তার ছোটভাই চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ খান চৌধূরী লোকজন নিয়ে প্লাবিত এলাকার ঘুরে আসেন।
উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আ,স,ম শাহরিয়ার চৌধূরী বলেন, তার এলাকায় বেড়িবাঁধ মেরামত কাজে ধীরগতির কারণে ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ার ঢুকে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঠিকাদার কতৃর্পক্ষের গাফিলতি ফলে বিগত ৫ বছর ধরে এলাকার মানুষ বষার্ এলেই চরম দূভোর্গে পড়ে যায়।
এ দূযোর্গকালে কুতুবদিয়া উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্লাবিত এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ব্যাক্তিদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য টহল পুলিশ কাজ করবে বলে অফিসার ইনচার্জ মোঃ জুয়েল আহমেদ নিশ্চিত করেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.