বার্তা পুরিবেশকঃ
পেকুয়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পে ৫৮ দিন কাজ করেও মজুরী পায়নি দরিদ্র নারী শ্রমিক! হত দরিদ্র নারী শ্রমিক বেবী আকতার (৪২), স্বামী আবদুল কাদের। পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ার চর গ্রামে বসবাস করেন এই হত দরিদ্র নারী শ্রমিক। জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়নাধীন বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ইজিপিপি প্লাস প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে ৫৮ দিন কাজ করেছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর প্রত্যেক শ্রমিককে মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটর নগদের মাধ্যমে মজুরীর টাকা পরিশোধ করেছেন। মজুরীর টাকা পরিশোধের পূর্বে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ৯টি ওয়ার্ড়ের শ্রমিকদের নামে নগদ একাউন্ট সম্বলিত মোবাইল নাম্বারের তালিকা তৈরী করে। তালিকায় ওই দরিদ্র নারী শ্রমিক বেবী আকতারের নগদ একাউন্টের মোবাইল নং ০১৮২১-৪৬১৮৯০ এর পরিবর্তে ০১৮২১-৮৬১৮৯০ ভুল নাম্বার লিপিবদ্ধ করা হয়। পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার কার্যালয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের নামের তালিকা ডাটা এন্ট্রি করার দায়িত্বে রয়েছেন এনজিও সুশীলন। ডাটা এন্ট্রি করার সময় ওই নারী শ্রমিকের ভুল নাম্বার লিপিবদ্ধ করায় টাকা চলে গেছে অন্য নম্বারে। ভুক্তভোগী নারী শ্রমিক বেবী আকতার বলেন, তিনি উজানটিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড়ে অন্যান্য শ্রমিকদের সাথে গত ০৫/১২/২০২১ ইংরেজী থেকে ২৩/০২/২০২২ ইংরেজী পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন কাজ করেছেন। ৫৮ দিনে মজুরী হিসেবে ২৩ হাজার ২’শ টাকা মজুরী তার নগদ একাউন্টে আসার কথা কিন্তু পেকুয়ার পিআইও অফিসে ডাটা এন্ট্রি করার সময় তার মোবাইল নাম্বার ভুল লিপিবদ্ধ করার কারণে তার মজুরীর টাকা চলে যায় ০১৮২১-৮৬১৮৯০ নাম্বারে।
তিনি পরে ওই নাম্বার নির্বাচন অফিসে যাচাই করে দেখতে পান নাম্বারটি পুতুল রানী বিশ্বাসের নামে রেজিষ্ট্রেন করা। পুতুল রানী বিশ্বাস বরিশাল জেলার বানারী পাড়া উপজেলার তেতলা গ্রামের বিশ্বাস বাড়ির চিত্র রঞ্জন হালদারের মেয়ে। নারী শ্রমিক বেবী আকতার আরো জানান, তার নগত নাম্বারে টাকা না আসায় তিনি পেকুয়া পিআইও অফিসে যোগাযোগ করেন। এসময় তিনি তার নাম্বার ভুল লিপিবদ্ধের বিষয়টি জানতে পারেন। এই দরিদ্র তার মজুরীর টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন।
পেকুয়া উপজেলায় ইজিপিপি প্রকল্প তদারকীর দায়িত্বে থাকা এনজিও সুশীলনের কর্মকর্তা বীণা সরদার এর কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। কাজ করেছে একজন কিন্তু মজুরীর টাকা চলে গেছে অন্যজনের মোবাইল একাউন্টে। এরপরেও তিনি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন। এদিকে নিরুপায় হয়ে দরিদ্র নারী শ্রমিক বেবী আকতার তার মজুরীর টাকা উদ্ধারে গত ২১/০৪/২০২২ ইংরেজী তারিখ পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখনো দরিদ্র নারী শ্রমিক তার মজুরীর টাকা পায়নি। ৫৮ দিন কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করে মজুরীর টাকা আদৌ পাবেন কিনা সেটি নিয়ে চরম শংকায় রয়েছেন ওই শ্রমিক।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.