লোহাগাড়ায় ১৫ দিনের ব্যবধানে ৫ জনের আত্মহত্যা

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে পাঁচজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রেম সম্পর্কিত জটিলতা ও পারিবারিক দ্বন্দ্বসহ তুচ্ছ ঘটনা আত্মহত্যার কারণ বলে জানা গেছে। উপজেলায় হঠাৎ করে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়াকে উদ্বেগজনক বলছেন সচেতনমহল।

পুলিশ ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে উপজেলার উত্তর কলাউজানে রোকসানা বেগম (৩২) দুই সন্তানের জননীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রোকসানা বেগম মানসিক চাপ সইতে না পেরে বাবার বাড়ির ছাদের বিমের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন
গত রোববার (১০ এপ্রিল) ভোরে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে রকসি পারভিন জুবলি (১৪) নামের এক ১০ম শ্রেণির ছাত্রী আত্মহত্যা করে। সুইসাইড নোটে প্রেম সংক্রান্ত বিষয় ছিল। গত ৬ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ওয়াহেদের পাড়ায় তানজিনা নাসরিন কেমী (১৯) নামের এক সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে কেমী আত্মহত্যা করেন। তবে পরিবারের দাবি কেমীকে হত্যা করা হয়েছে। গত ২৯ মার্চ পুটিবিলার গৌড়স্থান চৌধুরী পাড়ায় মো. আউয়াল (২২) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে বিয়ে করে আউয়াল। তাঁর স্ত্রী বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে আউয়াল ছাদ বিমের সঙ্গে ওড়না বেঁধে আত্মহত্যা করে। আউয়ালের আত্মহত্যার সঠিক কারণ জানা যায়নি। গত ২৮ মার্চে উপজেলার চরম্বার ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ার গুচ্ছগ্রামে বাবার বাড়িতে আত্মহত্যা করে ইয়াছমিন আকতার (১৯) নামে এক সিএনজি চালকের স্ত্রী। এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে না পারা এবং প্রতিনিয়ত স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটির কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

লোহাগাড়ায় আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ডা. মুহাম্মদ লোকমান সাংবাদিকদের বলেন, ডিপ্রেশনের মতো একটি ভয়াবহ মানসিক ব্যাধি মানুষকে অজান্তে তিলে তিলে শেষ করে দেয়। এটি মানুষের শারীরিক মানসিক কর্মক্ষমতাও মারাত্মক কমিয়ে দেয়। যারা আত্মহত্যা করেন তাঁরা পারিবারিক কলহ কিংবা তুচ্ছ কারণে আত্মহননের মতো কঠিন পথ বেছে নেন। মূলত সচেতনতার অভাবে এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানান তিনি।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। এসব আত্মহত্যার তদন্ত করতে গিয়ে পারিবারিক কলহ, মানসিক বিপর্যয় এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহসান হাবিব জিতু বলেন, এটি একটি মানসিক সমস্যা। আত্মহত্যা করা খুবই দুঃখজনক। আত্মহত্যা রোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া দরকার। জনগণকে সচেতন করা দরকার।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.