যশোরে এমপির সহ বিভিন্ন ভবনে ককটেল হামলা

ইয়ানূর রহমান : যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনসহ শহরের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামনে কমপক্ষে ১২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ২৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে পর পর এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অবশ্য রাত গভীর হওয়ায় বিস্ফোরণে কেউ হতাহত হয়নি।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি রাত দেড়টার দিকে যশোর শহরের কাজীপাড়া এলাকায় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবন লক্ষ্য করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তিনটি ককটেল ছুড়ে মারে। এর মধ্যে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়, একটি অবিস্ফোরিত থেকে যায়।

জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুদ্দিন মিঠুর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, মধ্যরাতে কে বা কারা ককটেল গুলোর বিস্ফোরণ ঘটায়। রাতে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ যশোরের বাসায়ই ছিলেন। তবে, বিস্ফোরণে কারো কোনো ক্ষতি হয়নি। মঈনুদ্দিন মিঠু রাজনীতিতে কাজী নাবিল অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এদিকে, ওইরাতেই যশোর শহর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হাসান লালের ষষ্ঠিতলার বাসভবন, ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফয়সাল খানের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের বাসভবনের ছাদে, আওয়ামী লীগ জেলা সেক্রেটারি শাহীন চাকলাদারের চাচাতোভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর কাজীপাড়া কাঁঠালতলা এলাকার বাসভবন এবং শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন শহরের গাড়িখানা রোডের পাঁচ তারকাবিশিষ্ট হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনাল, চাকলাদার ফিলিং ইত্যাদি স্থানে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা গেছে।

জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুদ্দিন মিঠু বলেন, এরআগে গত ২৫ জানুয়ারি রাতে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মুনির হোসেন টগরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার বাসভবন এবং যুবলীগনেতা রাজিবুল আলমের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা একই কায়দায় কয়েকটি বোমা ছুড়ে মারে। সন্ত্রাসীরা রাজিবুলের বাড়িতে গুলিও করে।

এসব বিষয়ে জানতে কথা হয় যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিতকুমার নাথের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

ছাত্রলীগ যশোর জেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, অতিউৎসাহী সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর বাসায় বোমা হামলার ভিডিও ফুটেজ আমি দেখেছি। ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে কারা এই ঘটনায় যুক্ত।’
একটি পক্ষের সন্ত্রাসীরা ভাগবাটোয়ারায় এগিয়ে থাকার লক্ষ্য নিয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শাহীন চাকলাদার অনুসারী নেতা হিসেবে পরিচিত জুয়েল।

জানতে চাইলে যশোর কোতয়ালী থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, এটি তাদের (আওয়ামী লীগের) অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়। ব্যক্তিগত শক্তি প্রদর্শনের জন্যে নিজেদের স্থাপনার উপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা জনগণ ও প্রশাসনকে অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। শহরের ছয়টি স্থানে ১২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.