বিশ্বাস রাখবেন, পাশে আছি : প্রধানমন্ত্রী

ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ বন্যা কবলিত হাওরবাসীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের দলীয় নেতাকর্মী ও মন্ত্রীরা আপনাদের সেবা করার জন্য আছে। জনগণের সেবা করাই আমাদের কাজ। রোববার বেলা ১১ টায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা সদরে শহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ পূর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগ আসতে পারে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। দুর্যোগকে মোকাবেলা করতে হবে। আপনারা বিশ্বাস রাখবেন আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমি বিরোধী দলে থাকার সময়ও কোথাও দুর্যোগ হলে সেখানে ছুটে গেছি। আর এখন তো সরকারি দলে। জনগণের সেবা করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ দুর্নীতিকে কখনো প্রশ্রয় দেয় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফোটে।

তিনি বলেন, ভিজিএফ আরো বাড়ানো হয়েছে। যাতে একটি মানুষও না খেয়ে না থাকে। যতদিন প্রয়োজন তত দিন হাওর এলাকায় এ কর্মসূচি চালু থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিক্ষা করে খাবার আনতে হবে না। আমাদের খাদ্য মজুদ আছে। হাওরাঞ্চলে এবার ফসল উৎপাদন না হলেও আমাদের অন্যান্য অঞ্চলে ভাল ফলন হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি যখন ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ছিলাম তখনও বন্যা হয়ে ছিল। সেই সময়ে বলা হয়েছিল দুই কোটি মানুষ না খেয়ে থাকবে। মানুষ মারা যাবে। আমি একটি মানুষকেও না খেয়ে থাকতে দেইনি। সবাই খাবার পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর দু’কূল উপচে পানি ঢুকে পড়ে হাওরে। তাই আমরা নদী ডেজিং এর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। স্থায়ী বাঁধ নিমার্ণের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। সেজন্য ইঞ্জিনিয়াদেরকে নিয়ে পরামর্শ করে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের গবেষকরা পানির নিচে কয়েকদিন পর্যন্ত ধান থাকে কিন্তু নষ্ট হয় না এমন জাত আবিষ্কার করেছেন। পরীক্ষামূলকভাবে সেটি চাষ করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। লবণ ও খরা সহিঞ্চু ধানের জাত আবিষ্কার করা হয়েছে। সেই ধান লবণাক্ত পানিতে ও খরায় নষ্ট হয় না।

হাওর অঞ্চলে এক ফসলের চিন্তা না করে সরিষা, শাক সবজি মৌসমি ফসল আবাদ করার জন্য পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাসমান পানিতে সবজি চাষ ও খাঁচায় মাছ চাষ করেও অর্থিক স্বচ্চলতা পাওয়া যায়।

খাদ্য সংকট মোকাবেলা আমাদের উৎপাদন বাড়তে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওরাঞ্চলের ফসল হারানো কারণে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই গো-খাদ্য সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষি ঋণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষি ঋণ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। আগামী মৌসুমে হাওরাঞ্চলে প্রয়োজনীয় সার ও বীজ বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশে কোন গৃহহীন থাকবে না। যাদের ঘর নেই সরকার তাদের ঘর তৈরি করে দেবে। যাতে দেশে একটি মানুষও গৃহহীন না থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধান নষ্ট হয়ে গেছে এমন অজুহাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করা হলে সেটি সহ্য করা হবে। যদি কেউ মজুদধারী করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকায় ওএমএস’এর ডিলার প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া হবে। যাতে হাওর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সহজে চাল পায়।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা প্রমুখ।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.