ওয়ান নিউজ ক্রীড়া ডেক্সঃ কি আশ্চর্য এক চিত্র! গেল বছর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেললো বাংলাদেশ। সেই সিরিজ শুরুর আগের আবহকে একটু সামনে আনা যাক। চারদিকে তখন শুধু অস্ট্রেলিয়া বধের স্বপ্ন। এবং সেই স্বপ্ন পূরণও করে ফেলে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই একই বাংলাদেশ দল যখন দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজটি খেলতে তৈরি হচ্ছে, তখন প্রতিপক্ষ যেন কঠিন এক ধাঁধাঁ! একটু অদ্ভুত তো বটেই।
টি-টুয়েন্টি এমনই এক ফরম্যাট যেখানে ছোট দল বড় দল বলে কিছু নেই। তাই আফগানিস্তানের মতো দলও অস্ট্রেলিয়ার মতো ভয়ের হয়ে দাঁড়ায়। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে বেড়ে ওঠা আফগান ক্রিকেটাররা এমনিতে বাইশ গজে একেবারেই ভয়ডরহীন। টি-টুয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়েও আবার দলটা বাংলাদেশের থেকে এগিয়ে। ভাণ্ডারে তাদের রশিদ খানের মতো বিশ্ব সেরা লেগ স্পিনার। সব মিলে দেরাদুনের সিরিজের প্রস্তুতি পর্বে অনেক কিছু মাথায় আনতে হচ্ছে টাইগারদের। তবে টাইগারদের টি-টুয়েন্টি দলের সহ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এমন ভাবনার উল্টোটাই বলছেন।
টি-টুয়েন্টি মানেই চ্যালেঞ্জ। সেখানে প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান নিয়ে মাহমুদউল্লাহর ভাবনা, ‘আমি এই চ্যালেঞ্জটা খুব সাধারণভাবে নেই। র্যাঙ্কিংয়ের কথাই ধরি ওরা যেখানে আট নম্বর, আমরা সেখানে দশ। আমি যেভাবে দেখি- প্রতিটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ আমরা যখন খেলি, ওটাই আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কিছুদিন আগেও আমাদের সামনে প্রশ্নবোধক একটা চিহ্ন ছিল। এখন ওটা আমাদের সামনে থেকে সরে গেছে। দিন দিন আমরা উন্নতি করছি। এই সিরিজটি আরও একটা সুযোগ প্রতিটি ম্যাচ জেতার। এই সিরিজটা জিততে পারলে, পরবর্তী সব সিরিজের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হবে।’
এদিকে রাশিদ খানকে মোকাবেলা করা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে। সাথে অবশ্য আরেক টিনএজ স্পিনার মুজিবুর রহমানও আছেন। দশ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া বা শ্রীলঙ্কার সামনে পড়লে বাংলাদেশকে ওয়ার্ন-মুরালিকে নিয়ে যেমন ভাবতে হতো, অবস্থা অনেকটা তেমন। মাহমুদউল্লাহ বলছেন, ‘আমরা যখন বসে থাকি, তখন বিষয়টা নিয়ে কথা বলি। আলোচনা করি রশিদকে নিয়ে। কারণ আমরা সবাই জানি টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে রশিদ বিশ্বের সেরা বোলার। অবশ্যই তাকে সমীহ করতে হবে।’
তবে শুধু প্রতিপক্ষের জায়গায় না থেকে মাহমুদউল্লাহর তাগিদ নিজেদের শক্তির ব্যাপারে ভাবতে। ৩২ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের শক্তির জায়গাটা বোঝা দরকার, আমরা কে কিভাবে ক্রিকেট খেলি। প্রতিপক্ষের শক্তির জায়গার ব্যাপারেও ধারণা থাকা উচিত। ওটা ভিত্তি করে ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নিয়ে যার যার শক্তি অনুযায়ী আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে।’
নিজেদের নিয়ে ভাবনার কথা বলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবনার বিষয়টিকে চতুর্থ বিষয়ই বানাতে বলছেন মাহমুদউল্লাহ। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের মতো, ‘যদি এভাবে দেখি রশিদ অনেক ভালো বোলার। তাকে খেলাই যাবে না। এটা ভাবা যাবে না। আমরা বল দেখবো, বল যদি আমাদের জোনে থাকে তাহলে অবশ্য স্কোরিং শট খেলব। তারপরও বলবো ওদের বোলিং আক্রমণটা অনেক ভালো। আমাদের ব্যাটসম্যনাদের অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। ব্যাটসম্যানরা যদি নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারে, তাহলে ইতিবাচক রেজাল্ট আশা করতে পারি।’
তার মানে তত্ত্বটা এই, নিজেদের ভান্ডার সমৃদ্ধ হলে প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবনা কি? মাহমুদউল্লাহ দুই দলের ব্যাটিং তুলনা করতে গিয়ে কিছু না বললেও বোলিংয়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে রাখছেন। যদিও আফগানদের আছে রশিদ খান। তবে বাংলাদেশে রুবেল হোসেন-মোস্তাফিজদের তিনি এগিয়ে রাখছেন অনেক।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.