টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট শুরু যে কোন মুহূর্তে

ওয়ান নিউজঃ টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট শুরু হতে পারে যে কোন মুহূর্তে। চার মাসের অধিক সময় ধরে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকায় টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য, ব্যবসায়ী যাতায়াত ও একদিনের ট্রানজিট যাতায়াত অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

 

এদিকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী সেনা অভিযান শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের সরকারি দপ্তর থেকে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। এরপর টেকনাফ-মংডু যাতায়াত চালু করতে মিয়ানমার পক্ষ বাংলাদেশকে পত্র দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে.কর্নেল আবুজার আল জাহিদ।

 

তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের পাঠানো পত্রের বিষয়টি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে সীমান্ত বাণিজ্য, ব্যবসায়ী যাতায়াত ও টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট যাতায়াত চালু হওয়ার আদেশের অপেক্ষায় রয়েছি। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।

 

গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের কয়েকটি ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা ও ৯ পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় দু’দেশের সীমান্ত যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মিয়ানমারে শুরু হয় জরুরি অবস্থা ও সেনা অভিযান। অভিযোগ উঠে, রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর সেনা বর্বরতার।

 

স্থানীয় রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, মিয়ানমার সেনাবাহিনী নারীধর্ষণ, শিশুকে আগুনে নিক্ষেপ, ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া, নিরীহ মানুষ হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রায় চার মাস ধরে চলা এ অভিযানের সময় মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুধু রোহিঙ্গারা নয়, মানবাধিকার হরণের অভিযোগ তোলে জাতিসংঘসহ বিশ্বের অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাও। মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে নিধনের উদ্দেশ্যে এ সেনা অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ করে রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

 

৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পোস্টে সন্ত্রাসী হামলায় নয় নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ সময়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চললেও এ বিষয়ে নীবর থাকায় নোবেলজয়ী অং সান সু চির সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের বাঁচাতে চোখে পড়ার মতো কোনো পদক্ষেপ তার ছিল না। তবে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে হত্যা, গণধর্ষণসহ মুসলিম রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রায় সব অভিযোগ অস্বীকার করে।

 

তাদের দাবি, আইনসম্মতভাবে সন্ত্রাসীবিরোধী অভিযান চালিয়েছে তারা। মিয়ানমারের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থায়ুং তান এক বিবৃতিতে বুধবার রাতে বলেছেন, ‘উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল। সেনাবাহিনীর শুদ্ধি অভিযান শেষ হয়েছে, কারফিউ তুলে নেয়া হয়েছে, শান্তি বজায় রাখতে শুধু পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে সেখানে। বিবৃতিটি রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চির কার্যালয় থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.