কক্সবাজার ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় মসজিদ নির্মাণ করা

 সাইমুম সরওয়ার কমল এম.পি.

শ্রদ্ধেয় কক্সবাজারবাসী,
সালাম জানবেন। আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় আমার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও করোনা পরবর্তী শারিরীক দূর্বলতা রয়ে গেছে। এখন কথা বলতে অসুবিধা হয় আর হাঁটতে অনেক কষ্ট হয়।ডাক্তার এক মাসের পূর্ণ বিশ্রাম নিতে বলেছেন।

আমার জন্য হাজার হাজার মুসল্লিরা দোয়া করেছেন। শত শত কোরআন খতম করেছেন। আলেম ওলামারা মসজিদে মসজিদে দোয়া করেছেন। বিভিন্ন বাড়ি ঘরে অনেকেই রোজা রেখেছেন। বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে হিন্দু বৌদ্ধরা আমার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছেন। বৌদ্ধ ভান্তে ও হিন্দু পুরোহিতরা মন্দিরে মন্দিরে আশীর্বাদ করেছেন। যা কখনো ভূলার নয়। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।

কউক চেয়ারম্যান লেঃ কর্ণেল (অবঃ) ফোরকান ভাইয়ের কথা অনেক মনে পড়ে। তিনি নিয়মিত আমার খোঁজ খবর নিতেন। মানুষটি এখনো অসুস্থ। তিনি সুস্থ না হলে কক্সবাজারের উন্নয়ন অনেকখানি পিছিয়ে যাবে। কক্সবাজার শহরের অলিগলির অবস্থা অনেক খারাপ। পৌরসভা এ কাজগুলো কেন করতে পারছেনা বুঝিনা। আমার তিন থানার একুশটি ইউনিয়নের রাস্তাগুলো শহরের চেয়ে অনেক ভাল। আমার দায়িত্ব থেকে আমার প্রস্তাবে লাবনী মোড় থেকে লিংক রোড পর্যন্ত রাস্তা চার লাইনের কাজ শেষের দিকে। এ কাজটির জন্য আমার কত কষ্ট হয়েছে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে কতবার ধর্না দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। শহরের অলিগলিগুলো যদি আমার দায়িত্বে থাকত, আমি সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতাম। কিন্তু দূর্ভাগ্য এগুলো আমার দায়িত্বে নেই।

অসুস্থ শরীর নিয়ে আমার ভাই জনাব মোস্তাক আহমেদ, বেদারুল আলম চৌধুরী, ফেরদৌস কাকা, জুয়েল, গফুর, হাকিম, শাহনু, মিজানরা আমাকে দেখতে এসেছে। আনারকলি মেম্বার ও সাইফুল ভাই স্ব-পরিবারে আমাকে সুদূর ঢাকায় দেখতে এসেছে। ইসলামপুরের মঞ্জুর আলম, হাসান আলী ও ইদ্রিস মেম্বাররা এসেছিল। ঈদগাঁহর হিমু ভাই, রাশেদ চেয়ারম্যান, শরিফ ও মিজানরা পথে আছে। বড়ভাই আবু মোর্শেদ,বন্ধু বিজন, আপ্পু, নবু, রাজু, শহীদ মামুন ভাই, সেলিম,সাংবাদিক ফজলুল কাদের, তাহের ভাই, বন্ধু মুজিব সহ সকল সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত আমার খবর রেখেছেন।

আমি জানি, অনেকেরই ইচ্ছা আছে আমাকে দেখতে আসার, কিন্তু লকডাউনের কারনে আসতে পারেনি। বিশেষ কারণে যারা আমাকে দেখতে আসতে পারেনি, তাদের প্রতি গভীর সম্মান রইল। প্রবাসীরা আমাকে শত শত ফোন করেছে, তাদের প্রতি আমার ভালবাসা রইল। সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আমার ধন্যবাদ। রাজনৈতিক সহকর্মীদের প্রতি রইল আমার ভালবাসা। এ অসুস্থ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীরা সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভালবাসা দেখিয়েছে তা কখনো ভূলবনা। জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, ইফতেখার, নূর আল হেলাল, তপন মল্লিক, নীতিশ বড়ুয়া, আনছারুল হক ভুট্টু, নুরুল আলম জিকু, কাজল সহ সকলকে আমার কৃতজ্ঞতা।

রামুর সকল চেয়ারম্যানবৃন্দ দেখতে এসে আমাকে চিকিৎসার টাকা দিতে চেয়েছিল। আমি টাকা নিই নাই। আমি তাদেরকে বলেছি, আমি যতদিন বেঁচে আছি কক্সবাজারবাসীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে পারব ইনশাআল্লাহ্। সুস্থ হতে আমার আরো কয়েকদিন লাগতে পারে। একটু সুস্থ হলে চলে আসব।

আমার প্রথম কাজ হবে পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় একটি মসজিদ নির্মাণ করা। এই মসজিদটি কক্সবাজার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নির্মিত হবে ইনশাআল্লাহ। কয়েক বছর আগে এই ময়দানে কোন দেওয়াল ছিলনা, ঘাসের উপর মানুষ নামাজ পড়ত, বৃষ্টির সময় কাদার জন্য মানুষ বসতে পারে নাই। এমনকি ২০২০ সালের ঈদের নামাজেও প্রায় বিশ হাজার মুসল্লি ভিজেছে। পৌরসভার উদ্যোগে একটি প্যান্ডেল নির্মিত হলেও তা আংশিক অংশে হয়। যার ব্যয় প্রায় দশ লক্ষ টাকার কম নয়।

এ ময়দানে আমার বন্ধু আলী হাসান একটি সুন্দর মিম্বর নির্মাণ করেছিল। ২০১৭ সালে আমি ত্রিশ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে সামান্য দেওয়াল নির্মাণ করি। ২০১৮ সালে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে মিম্বরের সামান্য কিছু অংশ পাকা করি। বাকি জায়গাটাও এতদিনে আমি করে ফেলতে পারতাম, কিন্তু স্থানীয় খেলোয়াড়দের অনুরোধে জায়গাটা রয়ে গেছে। ঐ ঈদগাঁহ ময়দানের মধ্যের মাঠটা খোলা রেখে মিম্বরের সামনে পাকাকরণ অংশটুকুতে একটি পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণীয় মসজিদ নির্মাণ করব ইনআশাল্লাহ্। যা স্থানীয় মুসল্লিদের সুবিধার পাশাপাশি দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। সাগরের সৌন্দর্য্যের সাথে নতুন একটি আকর্ষণ যোগ হবে কক্সবাজারে।

গাড়ি পার্কিং সুবিধা রেখে, মধ্যখানে খোলা মাঠ রেখে চারদিকে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মিত হবে যা মসজিদের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করবে। এটি অনেকটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেখ জায়েদ মসজিদ ও কিছুটা দিল্লি জামে মসজিদের অনুকরণে নির্মিত হবে। মসজিদটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও মূল্যবান পাথর দিয়ে সাজানো হবে ইনআশাল্লাহ। মসজিদের নকশা আঁকার জন্য একজন বিখ্যাত স্থপতিকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আমি কক্সবাজার আসার পরে সর্বপ্রথম মৌঃ মাহমুদুল হক, হাফেজ আব্দুল হক, হাফেজ সালামতুল্লাহ, মৌঃ মোসলেম উদ্দিন সাহেব সহ সকল আলেম ওলামাদের নিয়ে মতবিনিময় করব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, এড. ফরিদুল আলম, জননেতা নুরুল আবছার চেয়ারম্যান, আবদুল খালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী, নঈমুল হক টুটুল, কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়ছারুল হক জুয়েল, পিপি ফরিদ সহ সকল রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানাব। সাথে প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও থাকবেন। মসজিদের নির্মাণ ব্যয় একশত কোটি টাকা হবে। ইনশাআল্লাহ্ এই টাকা দেশি বিদেশি বিভিন্ন সূত্র থেকে আমি সংগ্রহ করতে পারব। আল্লাহ্ বাঁচিয়ে রাখলে সহসা কাজ শুরু করব ইনশাআল্লাহ্।

এ বিষয়ে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.