মোঃ কাউছার ঈদগাঁওঃ
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ভাদিতলা এলাকায় খোকা মনি নামের (১২) বছরের কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে ব্যাপক কানাঘুঁষা চলছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছেন স্থানীয়রা। ১৯ মে দুপুর ২ টায় এ ঘটনাটি ঘটে ইউনিয়নের ভাদিতলা গ্রামে। নিহত খোকা মনি স্থানীয় রফিক আহমদ প্রকাশ বর্মাইয়া রফিকের কন্যা বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএমের) অনুমতি নেওয়ার জিম্মানামা গ্রহন করে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করার তাগিদ দেন। লাশ দাফনের পর থেকে নিহত খোকা মনির বাবা রফিক পলাতক রয়েছে। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নিহত কিশোরীর সাথে একই এলাকার জাফর আলম প্রকাশ ভদ্র জাফরের ছেলে সোহেল নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ দিন খোকা মনির বাসায় কেউ না থাকার সুযোগ প্রেমিক সোহেলকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখতে পান বাবা রফিক। সাথে সাথে ক্ষোভের বসত গাছের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন পিতা রফিক।মেয়েকে উপর্যপুরী মারধরের পর প্রেমিক সোহেলকে ধাওয়া করে। তাকে না পেয়ে পূনরায় বাসায় এসে দেখতে পান মাটিতে লুটে পড়ছে মেয়ে। তাৎক্ষনিক স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে চলন্ত ফ্যানে ওড়না লেগে মৃত্যু হয়েছে বলে চাউর করে বাবা রফিক৷ খবর পেয়ে ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবদুল হালিমের নির্দেশে এসআই শামিম আল মামুন, কামাল উদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় অভিভাবকদের কোন অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়না তদন্তের লাশ দাফনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করার জন্য বলেন পুলিশ । আবেদন করবে মর্মে একটি লিখিত অঙ্গিকার নামাও নেন পুলিশ। কিন্তু পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে তারা লাশ তড়িঘড়ি করে দাফন কাঁপন সম্পন্ন করে। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে আত্মীয় স্বজনরা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। মেয়ের মামা শামীম নামের এক যুবক প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবকিছু ম্যানেজ করে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে যায়। চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়া এই ঘটনাটি ময়না তদন্ত বিহীন তড়িঘড়ি করে দাফন সম্পন্ন করায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক কানাঘুঁষা চলছে। তারা আরো বলছে বাবা রফিক নিজেই মেয়েকে মেরে পেলে প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে লাশ দাফন করে পেলছে। নিজেই মেয়ে হত্যাকারী হয়ে নিজে বাদী হয়ে কার বিরুদ্ধে সে মামলা করবে এমন প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছে। নিহত খোকা মনির মৃতদেহ কাঁপন ও গোসল করা নারী বলছে তার শরীরে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি এই ঘটনাটি হত্যাকান্ড বলে জানান গণমাধ্যমকর্মীদের। বাবা রফিক আহমদ, আত্মীয় শামিম মিলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তাছাড়া এলাকার মানুষজনদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঘটনার বিষয়ে কাউকে মুখ না খুলতে বারন করেন শামিম নামের ঐ যুবক। এ বিষয়ে জানতে প্রেমিক সোহেলের বাসায় গেলে ঘরবাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়, পাশের বাড়িতে থাকা সোহেলের মামী জানান, নিহত খোকা মনির সাথে দেখা করতে গিয়ে বাবা রফিকের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেছে বলে তাকে জানিয়েছে ভাগ্নে সোহেল। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার জিয়াউল হক জিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তিনি বিভিন্ন বাহনা দিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে রাজি হননি। ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবদুল হালিমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। অভিভাবকদের কোন অভিযোগ না থাকায় তাদেরকে এডিএম মহোদয় বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছিল।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.