আজ নারী দিবস: যেখানে সৃষ্টি, সেখানেই নারী
ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীর চোখে বিশ্ব দেখার বিকল্প নেই। অধিকারের লড়াইয়ে নারী একাই কেবল অংশ নেবে না। পুরুষকে তার সবার অংশীদার করে তোলার কাজটিও এগিয়ে নিতে হবে। বিশ্বজুড়ে এমনই একটা পরিস্থিতির মধ্যে এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জাতিসংঘের আহ্বানে প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, ‘উইমেন ইন দ্য চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক : প্ল্যানেট ফিফটি-ফিফটি বাই ২০৩০’। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্যে বদলে যাওয়া বিশ্বের কর্ম পরিবেশে নারীর সরব উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের কর্ম পরিবেশে নারী-পুরুষের সমতায়নের লক্ষ্যেই এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিনটি উদযাপন করা হবে। মহিলা এবং শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ মানবাধিকার ও নারী সংগঠনগুলো দিবসটি উদযাপনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
দেশে এবার ‘নারী-পুরুষ সমতায় উন্নয়নের যাত্রা/ বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’ শিরোনামকে সামনে রেখে দিবসটি উদযাপন করা হবে। নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন যেদিন জাতি, গোষ্ঠী তার সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি অনুভব করার দিন।
এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারী বাহিনীর দমন-পীড়ন।
১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়।
ক্লারা ছিলেন জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন।
এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা।
১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে থাকে। বাংলাদেশেও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ সালে খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।
এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার ইচ্ছা নিয়ে। যথাযোগ্য সম্মান আর মর্যাদা নিয়ে আজও বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.