অস্ত্রের মুখে বিয়ে: ‘প্রত্যাহার’ করা হল সেই ডিআইজি মিজানকে
ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে বিয়ে করার জন্য অভিযুক্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (এসি) দায়িত্ব থেকে ডিআইজি মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার (ওএসডি) করেছে পুলিশ প্রশাসন। তাকে বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিষয়টি জানিয়েছেন। ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নেবে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এক নারী বলেন, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের কাছে তার বাসা। গত বছরের জুলাইয়ে সেখান থেকে কৌশলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজান। পরে বেইলি রোডের মিজানের বাসায় নিয়ে তিনদিন আটকে রাখা হয়েছিল তাকে।
ওই নারীর দাবি, আটকে রাখার পর বগুড়া থেকে তার মা’কে ১৭ জুলাই ডেকে আনা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা কাবিননামায় মিজানকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে রাখেন আগে থেকেই বিবাহিত মিজান।
ওই নারীর অভিযোগ, কয়েক মাস কোনো সমস্যা না হলেও ফেইসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি আপ করার পর ক্ষিপ্ত হন মিজান। ভাঙচুরের ‘মিথ্যা’ একটি মামলা দিয়ে তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলা করানো হয়। ওই মামলাতেও জামিনে বেরিয়ে এসে ডিআইজির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন ওই নারী।
তবে মিজান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ওই নারী একজন প্রতারক।
এছাড়াও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টিভি উপস্থাপিকার জীবন এই ডিআইজি বিষিয়ে তুলেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে, ঘরে স্ত্রী রেখে জোর করে আরেক নারীকে বিয়ের অভিযোগ ওঠার পর আলোচনায় থাকা ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানকে গতকাল দেখা যায়নি পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
সোমবার পুলিশ সপ্তাহ শুরু হলে রাজারবাগে সাংবাদিকসহ অনেকেই খুঁজতে থাকেন এই ডিআইজিকে। তবে রাজারবাগের অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊধ্বর্তন সব কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি অতিরিক্ত কমিশনার মিজানকে। তাকে দেখেছেন, এমন কোনো তথ্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তা দিতে পারেননি।
রাজারবাগ থেকে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর বেলা আড়াইটার দিকে মিজানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “আমি রাজারবাগে আছি।”
কোথায় আছেন- জানতে চাইলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
ডিআইজি পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সোমবার বিকালে তেজগাঁও হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “এ বিষয় নিয়ে ইন্টারনাল তদন্ত চলছে।”
শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনের ব্যত্যয় যে কেউ ঘটাক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.