ঝিনাইদহে শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য ও লাইব্রেরীতে বই কমিশন বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহে শিক্ষকরা প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য ও বিভিন্ন লাইব্রেরীর সাথে বই কমিশন বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঝিনাইদহ ছয়টি উপজেলায়ই সরকারী আইনকে পদ দলীত করে মহা ধুম ধামে শুরু হয়ে গেছে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় শিক্ষকদের প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য।
বছর শুরু হতে না হতেই কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্যে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনাইদহ জেলার শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। গড়ে তুলছেন নিজ নিজ বাড়িতে প্রাইভেট বা কোচিং সেন্টার নামের নিশ্চিত লাভের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেখানে একাদিক ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিদিনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলছে কোচিং ও প্রাইভেট নামের সফল বাণিজ্য। সকাল অথবা বিকাল আবার রাতেও চলছে এ অবাধ লাভজনক বাণিজ্য।
সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে দিন দিন বেড়েই চলছে এই প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসা । সরকার যেখানে আইন করে কোচিং বন্ধ করেছেন, সেখানে অসাধু শিক্ষকরা নিজেরাই ফরম তৈরি করে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে অফিসে প্রমান হিসেবে জমা রাখছেন বলে জানাগেছে। তবে শিক্ষকরা নিজেদেরকে সাধু প্রমাণ করতে ওই পন্থা অবলম্বন করছেন বলেও জানাগেছে।
ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের সাথে আলাপকালে জানাগেছে, কিছু অসাধু শিক্ষক তাঁদেরকে ডেকে ডেকে কোচিং করার কথা বলে আসছে, এবং ৩৫/৪০ জনের এক একটি ব্যাচ তৈরি করতে বলছেন। যে ব্যাচ গুলো থেকে প্রতি মাসে তাঁদের বানিজ্য হবে ২৫ থেকে ৩৭ হাজার টাকা করে।
অপরদিকে কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানোর জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে আতাত করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো বেছে নিচ্ছেন। যাতে ঐ বিষয় গুলো পড়ালে বেশি বেশি বানিজ্য করা যায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন লাইব্রেরীর সাথে শিক্ষকদের বইয়ের বানিজ্য।
যে বইয়ে কম্পানীর কাছ থেকে বেশী কমিশন পাওয়া যায় সেই বই কিনতে বাধ্য করছেন শিক্ষার্থীদের। এতে দেখাগেছে নি¤œমানের বই কিনে পড়তে হচ্ছে এখানকার ছাত্র ছাত্রীদের। যে সমস্ত শিক্ষকরা সকাল বিকাল ও রাতে কোচিং বাণিজ্য করে ব্যস্ত সময় পার করেন, তাঁরা পরের দিন ক্লান্ত হয়ে ক্লাস চলাকালে স্কুলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন।
এ নিয়ে অনুসন্ধান করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তি বর্গদের থেকে জানাগেছে, সামান্য স্কুল শিক্ষকতা করে এতো কিছুর মালিক শিক্ষকরা কি করে হলো এ প্রশ্ন এখন জেলা জুড়ে সকলের। তবে অভিভাবাকদের দাবি এ অবস্থায় ওই সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষার নামে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শিক্ষক নামধারী অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা না হলে শিক্ষাখাতে সরকারের বিনিয়োগ কখনোই সফল হবে না।
এ ছাড়াও শিক্ষাখাতে দুর্নীতি বন্ধ না হলে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই শিক্ষার্থীরা দুর্নীতি শিখবে বলেও জানান তাঁরা। শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়া একাদিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন। তা না হলে নতুন প্রজন্ম কখনোই ভালো কিছু শিখতে পারবে না ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.