ডেস্ক নিউজ:
চন্দনাইশ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রী নিয়ে শহরে আসছিল ‘সুগন্ধা’ নামে একটি বাস। গাড়িতে থাকা যাত্রী মো. কুতুব উদ্দিন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। খবর পেয়ে মইজ্জারটেক ট্রাফিক পুলিশ কুতুব উদ্দিনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ওই গাড়িকে মইজ্জারট্যাক থামানো হয় এবং মামলা দেয়।
টানা তিন দফার নিষেধাজ্ঞাতেই বন্ধ ছিল গণপরিবহন। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া চতুর্থ দফার কঠোর নিষেধাজ্ঞায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর কথা থাকলেও প্রথম দিনেই হেরফের। যেখানে বলা হয়েছিল গাড়ির আসন সংখ্যার অর্ধেকের (৫০%) বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না সেখানে গাড়িতে তোলা হচ্ছে সিট সংখ্যকের চেয়েও বেশি যাত্রী। এতেই থেমে থাকেনি নিচ্ছে ডাবল ভাড়াও।
ভুক্তভোগী মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টার দিকে আমি চন্দনাইশ থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য একটা লোকাল বাসে উঠি। গাড়ীতে উঠার সময় গাড়ির হেলপার ভাড়া বলে ৮০ টাকা যেখানে নিয়মিত লোকাল ভাড়া ৫০ টাকা। যেহেতু দুই সিটে একজন করে যাত্রী নিবে সেহেতু নিয়মিত ভাড়ার সাথে ৬০% ভাড়া যোগ হয়ে ভাড়া ৮০ টাকা হয়। কিন্তু গাড়িতে উঠার পর দেখি ভিন্ন চিত্র। যাত্রীও দ্বিগুণ ভাড়াও দ্বিগুণ। আমি প্রতিবাদ করাতে গাড়ির হেলপার আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’— এ কল করি। ওখান থেকে আমাকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নম্বর দেওয়া হয়, পরে কন্ট্রোল। সেখানে রুমে কল করলে সেখান থেকে ট্রাফিক পুলিশের নম্বর দেওয়া হয়। ট্রাফিক পুলিশে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ‘মাসুদ রানা’র সহযোগিতায় মইজ্জারট্যাকে গাড়ি থামানো হয় এবং গাড়িটিকে জরিমানা করা হয়।’
এ বিষয়ে কথা হয় ট্রাফিক সার্জেন্ট মাসুদ রানার সাথে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘কন্ট্রোল রুমে থেকে একটি মেসেজ পাই যে, সুগন্ধা নামে একটি গাড়ি বেশি ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। সেই গাড়িটিকে আমরা মইজ্জারট্যাক থামিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাই। পরে গাড়িটিকে মামলা দেওয়া হয়।’ কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানাননি। তিনি আরও বলেন, গাড়ির চালককে এ ব্যাপারে সাবধান করা হয়েছে। এছাড়া গাড়িতে থাকা যাত্রীদের অফিসের সময় হয়ে যাওয়াতে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতেও বলা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রাম থেকে আসা গাড়িগুলো শাহ আমানত ব্রিজ যেতে দিচ্ছি না। যেই গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে শহর থেকে আসছে সেগুলোকে আমরা মইজ্জারট্যাক থামিয়ে দিচ্ছি। যাতে ব্রিজের ওপারে যেতে না পারে।’
এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কনফারেন্স রুমে এক বৈঠকে নগরে গণপরিবহন চলতে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরে গণপরিবহন চলবে। এতে প্রতি ২ সিটে একজন করে যাত্রী নেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ষাট শতাংশ বর্ধিত ভাড়া পরিশােধ করতে হবে যাত্রীদের। প্রতি গাড়িতে মাস্ক রাখতে হবে। কোন যাত্রী মাস্ক ছাড়া এলে তাকে মাস্ক প্রদান করতে হবে।
আরও বলা হয়, ‘আন্তঃজেলা বাস চলাচল করলেও এসব বাস নগরে প্রবেশ করতে পারবে না। দক্ষিণ জেলার বাস শাহ আমানত সেতু এলাকার মইজ্জারটেক পর্যন্ত আসতে পারবে। অন্যদিকে উত্তর জেলার বাস কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত আসতে পারবে।’
এদিকে সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শুধুমাত্র জেলার গাড়ি জেলাতে চলাচল করতে পারবে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে আন্তঃজেলা গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে যাত্রবাহী ট্রেন ও নৌযান চলাচল।
এসব নিষেধাজ্ঞা আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, সড়কে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.