ডেস্ক নিউজ:
৪০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বই ও ৪০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। জরুরি প্রয়োজনে ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’তে এসব পাসপোর্ট বই কিনবে সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরর্গমন অধিদপ্তর। এতে ব্যয় হবে ৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৪০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ৪০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল কেনার জন্য গত বছর ১৩ নভেম্বর প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ২১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বহিরর্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। দরপত্রটি দৈনিক পত্রিকা ছাড়াও সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়।
সাত প্রতিষ্ঠান দরপত্র সংগ্রহ করে। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি। ওই দিনই দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ৩ প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এরপর ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির ১ম সভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো—টেন্ডারের সঙ্গে দাখিল করা এমআরপি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোর মাধ্যমে যাচাই করা। দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া নমুনা টেস্টের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশনে পাঠানো। একটি টেকনিস্যাল সাব-কমিটি গঠন করে দরপত্রদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া স্যাম্পলের টেস্ট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে কারিগরি বিষয়ে মত দেওয়া। এরমধ্যে শুধু সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের অভিমত পাওয়া গেছে।
এদিকে, করনোর কারণে দীর্ঘ সময় অফিস বন্ধ থাকা, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যথাযথ বুকলেট ও লেমিনেশন ফয়েলের টেস্ট রিপোর্ট না পাওয়ায় টেকনিক্যাল সাব-কমিটি প্রতিবেদন দিতে দেরি করে।
৩ সংস্থার টেস্ট রিপোর্টে টেন্ডারের সঙ্গে জমা দেওয়া নমুনায় বেশ কিছু ফিচার অনুপস্থিত পাওয়ার পরও টেকনিক্যাল সাব-কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ৩ প্রতিষ্ঠানকেই কারিগরিভাবে গ্রহণযোগ্য বলে সুপারিশ করেছে। দরপত্রের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা নমুনাগুলো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশনে টেস্ট করানো হয়।
টেস্টে দেখা গেছে, আইডি গ্লোবাল লিমিটেড, ইউকের স্যাম্পল পাসপোর্টে ৮৪টি ফিল্ড উপস্থিত রয়েছে। অন্য দুই প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠানের ৩০ ও ইন্দেনেশিয়ার প্রতিষ্ঠানের ২৮ সিকিউরিটি ফিচার অনুপস্থিত।
দরপত্র দাখিল থেকে টেন্ডারের বৈধতার মেয়াদ ছিল ১২০ দিন। যা গত ২৪ মে শেষ হয়েছে। করোনায় অফিস বন্ধ থাকায় বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ১০ দিন আগে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী তিন প্রতিষ্ঠানকে বৈধতার মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, সংশ্লিষ্ট দরদাতাদের কাছে মেইল করা হয়। তাই নিয়ম অনুযায়ী ওই টেন্ডার বাতিল হওয়া কথা। করোনার কারণে পরবর্তী সময়ে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য চিঠি-মেইল দিলে ২ প্রতিষ্ঠান বৈধতার মেয়াদ বাড়ালেও ইন্দোনেশিয়ায়ার প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্য এক প্রতিষ্ঠান মেয়াদ বাড়ানোর বৈধতার বিষয়ে আপত্তিসহ লিগ্যাল নোটিশ দেয়। তবে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি পিপিআরে কোনো প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।
সূত্র জানায়, নতুনভাবে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট বই পেতে একবছরের বেশি সময় লাগতে পারে। নতুন সরবরাহকারীর কাছ থেকে পাসপোর্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সফটওয়্যার ও পাসপোর্ট প্রিন্টিং মেশিন মোডিফিকেশনের প্রয়োজন হতে পারে। যার সঙ্গে আর্থিক ও সময়ের বিষয় জড়িত বলে কারিগরি কমিটি মত দিয়েছে। এই অবস্থায় ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’তে ৪০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বই ও ৪০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল কেনার জন্য একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক উপস্থাপন করা হতে পারে। -রাইজিংবিডি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.