স্বাধীনতাবিরোধীদের টার্গেট যেন কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট!

 

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের প্রধান টার্গেট যেন আমার প্রাণপ্রিয় স্মৃতি বিজড়িত পাঠশালা কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। সেই অতীত ভুলতে না ভুলতেই আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে শিবির কর্মীরা। শিবিরের ব্যানারে নবীন বরণ, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও কর্মীসভা করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন মেচ ও ক্লাসরুমে। এতে স্থানীয় জামায়াত নেতাদের আর্থিক সহায়তাদানের খবর পাচ্ছি। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে শিবির কর্মীদের সংঘাতের খবরও শুনেছি ।
কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছে। অতীতে শিবিরের আঁতুড়ঘর খ্যাত কক্সবাজার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে আমাদের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক মিটিং করতে হয়েছে কবরস্থানে গিয়ে। ছাত্রলীগের নবীন বরণ, শোক দিবস পালন, জাতীয় দিবসসহ সকল প্রোগ্রামে বাধা প্রদান করে আসতো শিবির-ছাত্রদল ক্যাডাররা। পূর্বে শিবির ক্যাডার ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের হামলায় অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন । এলাকাবাসী ও পুলিশের সহায়তায় আমরা কোনমতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম। তন্মধ্যে আমার আহত পাঁচ সহযোদ্ধার নাম এখনো মনে পড়ে । প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক ছাত্রলীগের নিবেদিত প্রাণদের লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকে কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটে ছাত্রলীগের এত সুন্দর চর্চা হয়।

গত ৩০/৭/২০১৭ সালে কক্সবাজার ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন তানিমের স্বাক্ষরিত প্যাডে কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এতে সভাপতি হয়েছিলেন কাজী সেজান মাহমুদ হিমেল ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন রাজিবুল হক রাজু। এদের কমিটি বর্তমানে বহাল থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ফুলঝুরি । কয়েকটি ডিপার্টমেন্ট কমিটি ছাড়া তেমন কোনো সাংগঠনিক কাজও তাদের মাধ্যমে হয়নি বলে খবর নিয়ে জেনেছি । এমনকি নিজেদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও অনুমোদন নেননি। শোনা যায় ডিপার্টমেন্ট কমিটিগুলোও সভাপতির স্বাক্ষর নকল করে করা হয়েছিল এবং সকল ডিপার্টমেন্ট কমিটির সভাপতি-সম্পাদকরা প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিয়েছে ১৮-১৯ সালের দিকে। ২০১৮ সালের পর থেকে কলেজ সভাপতি-সম্পাদকদের ক্যাম্পাসেও দেখেনি সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এমতাবস্থায় বেশ কয়েকজন টগবগে তরুণ ছাত্রনেতারা ছাত্রলীগের হাল ধরেছে, যাদের আমি সাংগঠনিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। এদের মধ্যে ফাওয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম নয়ন, শাহরিয়ার করিম ফাহিম ও শাহারিয়া নূর, শোয়াইব ছিদ্দিকি আদিল, আরফাতুর রহিম রিগ্যান এরা বেশ অনুগত ও কর্মঠ। বলতে পারি তারাই ঝিমিয়ে পড়া ইউনিটকে চাঙ্গা করে রেখেছিল নিয়মিত জয় বাংলা স্লোগান ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে। কক্সবাজার জেলার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পলিটেকনিক ছাত্রলীগের ব্যানারে প্রতিটি প্রোগ্রাম করে গেছে তারা।

পলিটেকনিক এর নিরলস সমর্থনে কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাজনীতি আজ সমৃদ্ধ। তাদের শিবিরের হামলা থেকে বাচাতে ছুটে যেতাম এক ঝাঁক নেতা কর্মীদের নিয়ে। কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে বেশি নেতা তৈরির কারখানা কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। কক্সবাজার জেলার সাবেক সহ-সভাপতি জালাল উদ্দীন মিঠু, বর্তমান সহ-সভাপতি বোরহান উদ্দিন খোকন, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক এহেছানুল হক মিলন, সাবেক কক্সবাজার পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আজম ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আব্দুল্লাহ আল ওসমারী সহ আরো অনেক বাঘা বাঘা নেতা তৈরীর কারখানা কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। শুধু কক্সবাজার নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে আজ কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ২০১৭ সালের পর থেকে যেন কোন নেতাকে রাজপথেই দেখা যাচ্ছে না। আমরা দেখেছি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি নুরুল আজিম কনক ও সাধারণ সম্পাদক এম. এ. মনজুর পরিষদ পলিটেকনিক এ ছাত্রলীগের আবাদ করেছেন, সাবেক সফল সভাপতি আলী আহাম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের আজাদ পরিষদে এটি জেলার শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে পরিচিতি পায় , সব শেষ ইশতিয়াক আহম্মদ জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসাইন তানিম পরিষদের আমলে পলিটেকনিক তার গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখে।

বর্তমানে এস এম সাদ্দাম হোসাইন ও আবু মোঃ মারুফ আদনান পরিষদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের আমি প্রসংশা করি, সম্প্রতি তাদের শোক মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ সারাদেশে প্রসংশা কুড়িয়েছে। কিন্তু তাদের সময়ে পলিটেকনিকের কেন এ অবস্থা…? যেখানে পলিটেকনিক ছাত্রলীগে প্রতিবছর নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়, সেখানে বছরের পর বছর কেন কোন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না..? তা আমার প্রশ্ন। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমি তাদের আবহেলাকে দায় দিব। আমরা পলিটেকনিক এ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে রক্ত ঝরিয়েছি, কেন জানি মনে হচ্ছে কারো কালো স্বার্থের কাছে বলি হচ্ছে আমাদের ত্যাগ তিতিক্ষা। এমনটা চলতে থাকলে জেলা ছাত্রলীগের যে অপূরণীয় ক্ষতি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিরোধীদের প্রয়াশ ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কি উদ্যোগ থাকছে তা এখন দেখার বিষয় প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের।

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী
সাবেক সভাপতি,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.