সেন্টমার্টিনে জরাজীর্ণ জেটি দিয়ে নামবে লাখো পর্যটক

ঝুকিপূর্ণ জেটি, পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিনে

# পর্যটন মৌসুম আসলে কাঠ দিয়ে মেরামত
# উঠানামা করবে হাজার হাজার পর্যটক
# ২০০৪ সালে সালে নির্মিত হয় এই জেটি
# ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা
মোঃ নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজার।
ভঙ্গুর ও ঝরাজীর্ণ সেন্টমার্টিন জেটি। সম্প্রতি সেই ঝরাজীর্ণ জেটির উপরিভাগে লোহা কাঠের পাটাতন দিয়ে মেরামত করে ১৬নভেম্বর থেকে পর্যটক যাবে সেন্টমার্টিনে।
তা কক্সবাজার জেলার কিছু পর্যটক বিনিয়োগকারিরা সামান্য কাঠ দিয়ে মেরামত করে দেশের সর্ব বৃহৎ পর্যটক এলাকা কক্সবাজারের একমাত্র দ্বীপ সেন্টমার্টিনের নৌ জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন থেকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ঝুকিপূর্ণভাবে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করবে । যার ফলে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পরীক্ষামূলকভাবে আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে শুরু হয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পর্যটনের দায়িত্বপ্রাপ্ত (এডিএম) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান। পর্যটকদের জেটি দিযে যাতায়াতের ঝুকির কথা বল হলে তিনি বলেন, জীবন চলার পথে সবার ঝুকি আছে। যারা কাজ করছে তারা সঠিকভাবে কাজ করছে আশা করছি তেমন সমস্যা হবে না।
তিনি জানান, মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন চলাচল করবে। পর্যায়ক্রমে অবস্থা বুঝে আবেদনকৃত জাহাজকে অনুমতি দেওয়া হবে।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন (টুয়াক) এর সভাপতি মিঃ আনোয়ার জানান, প্রথধাপে আমরা করেছিলাম প্রশাসনের সহায়তায় পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন ভিজিটে গেলে তা মনপ্রোত না হওয়ার কারনে আবারো তাদের দেওয়া প্রপোজল অনুযায়ী আমরা কাজ ছলমান রেখেছি।
এদিকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বাঁচাতে বিধ্বস্ত জেটিটি অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে, না হলে পর্যটন খাতে জড়িত অন্তত ৫০ হাজার লোকের জীবন-জীবিকা ও কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে। গত ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জেটির মেরামত করা না গেলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পাশাপাশি সরকার বিপুল রাজস্ব হারাবে বলে
আশংকা করে সেন্টমার্টিন জেটি দ্রুত মেরামতের দাবিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছিল পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তোফায়েল আহম্মেদ।
কক্সবজারের অন্যতম আকর্ষণীয় এলাকা হলো টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এই সেন্টমাটিন দেখার জন্য পর্যন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক আসে কক্সবাজারে। তারা প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ঘুরতে যায় পরিবার পরিজন নিয়ে।
কিন্তু এদিকে কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন জেটির বেহাল অবস্থা। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমান যে অবস্থায় রয়েছে তা দিয়ে স্থানীয়রা পর্যন্ত যেতে পারছে না । তারা সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে আসতে চাইলে বেশ বেগ পোহাতে হয়।সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে গেছে সেন্টমার্টিন জেটি। এখন এই অবস্থায় আগামী পর্যটন মৌসুমে কোন ভাবেই পর্যটক সেন্টমার্টিনে আসা যাওয়া করতে পারবে না বলে জানান দ্বীপবাসি।বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন আগে থেকেই বিপন্ন। অসংখ্য হোটেল-মোটেল নির্মাণে দ্বীপটি এমনিতেই ইটপাথরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত পর্যটকের আগমনে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছিল জীববৈচিত্রের। এরই মধ্যে আগস্টে কযেকটি ঘূর্ণিঝড়ে আঁচড়েই দ্বীপটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।জেটির বেশ কিছু জায়গা ভেঙ্গে গেছে। ১২টি স্থানে ১০০ থেকে ২০০ ফুট অংশ ভেঙে সাগরে তলিয়ে গেছে।
২০২০ সালের শুরুতে কয়েকমাস যাবার পর বাংলাদেশে হানা দেয় বিশ^ মহামারী করোনা ভাইরাস। এর কারনে পর্যটন এলাকা কক্সবাজার পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছিল। এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যদিকে চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন কক্সবাজার। ঘূর্ণিঝড়ের কারনে টেকনাফের সেন্টমার্টিনের একমাত্র জেটিটি ভেঙ্গে গেছে ।
জেলা পরিষদের একটি টিম সেন্টমার্টিন ঘুরে এসে একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠালেও এখনো কোন ধরনের কাজ শুরু করতে পারেনি।
তবে এখন পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় এষ্থানীয় কিছু পর্যটক বিনিয়োগকারিদের সহায়তায় কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কেয়ারি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কক্সবাজার অফিসের কর্মকর্তা একেএম আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র পেয়েছি। মঙ্গলবার থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। এর আগে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ-পরিবহন দফতরের ছাড়পত্র পেয়েছি। আমরা এখন থেকে দ্বীপে ভ্রমণকারীদের টিকেট বিক্রি শুরু করেছি। বুকিংও ভালো হয়েছে।

 

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.