সাগরের মাঝে বালি,পাথরের শহর সেন্টমার্টিন

রাজিবুল হক চৌধুরীঃ

কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি আইন বিভাগ কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই বছরের ঐতিহাসিক সেন্টমার্টিন শিক্ষাসফর।

যাত্রা শুরুরকালে সবার মুখে একটা প্রশ্ন প্রিয় রাজিদুর রহমান স্যার কয়? ভাবতেও পারিনি আমাদের এইবারের শিক্ষা সফরটা এতটা সুন্দর,মনোমুগ্ধকর এবং সুষ্ঠু হবে ।

 

বলতে গেলে এটাই আমার লাইফের বেস্ট শিক্ষা সফর বা ঘোরাঘুরি যেটায় বলুন না ক্যান!

সত্যি বলতে জরা-জীর্ণ রাস্তায় ৩ ঘন্টা ধরে টেকনাফ রোডের পাশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, লবণের চাষ ও নাফ নদী দেখতে দেখতে জাহাজের কাছে পৌঁছে গেলাম। এক সময় মনে হচ্ছিল না আসলেই ভাল হতো….

কিন্তু যখন সকালে জাহাজের উঠে আমাদের ভ্রমনের ২য় অংশ শুরু হলো তখন ক্লান্তির কিছুই টের পাইনি। শুধু উপভোগ করে চলেছিলাম এই নাফ নদীর মনোমুগ্ধকর সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

 

গাংচিলের ভালোবাসা, নাফ নদীর বুকে দিয়ে চলে যাওয়া, জাহাজের ভিতরে ছিলো অসাধারণ সুন্দর কিছু মূহুর্ত, একদিকে বাংলাদেশ অন্য দিকে মায়ানমার। মাঝখানে বিশাল বিশাল ৬ টা জাহাজ। যেখানে ছিলো হাজার হাজার যাত্রী। জাহাজের সময় চলে যায়, প্রিয় শিক্ষক ডিপার্টমেন্ট চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন স্যারের গান ও ভালোবাসা দিয়ে, যেখানে আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিলো রেজিস্ট্রার স্যারের ভালোবাসা। প্রিয় নাসরিন ম্যাম ও  সাদিয়া ম্যাম ছিলো আমাদের সবচেয়ে বড় উপহার, যাদের মুখের হাজার গান শুনতে পেয়ে আনন্দিত হয়েছে সব ছাত্র ছাত্রী। সবার মুখে একটা প্রশ্ন আমাদের  রাজিদুর রহমান স্যার ও কেয়া ম্যাম কয়?

জাহাজের পথযাত্রাটা অসাধারণ ছিল। প্রায় ৩ ঘন্টা জাহাজে ছিলাম। তিনতলা বিশিষ্ট জাহাজ দিয়ে নাফ নদীর পানি নিয়ে খেলছিলাম, সহপাঠীদের নিয়ে গাংচিলের ভালোবাসা উপভোগ করছিলাম, সেলফি তোলেছিলাম, উপরে বাতাস খাচ্ছিলাম আর দেখছিলাম বিশাল আকৃতির সব জাহাজ, স্টীমার, স্পীডবোট আর কিছু ডিঙি নৌকাকে, নদীর বুকের মাঝিদের কে।

যেহেতু সাঁতার খুব একটা জানি না তাই ঢেউ দেখে খুব ভয় পাচ্ছিলাম। আবার সবার হাঁসিমাখা মুখ দেখে সব ভয় কেটে যাচ্ছিলো।জাহাজের যাত্রাটা আমার আজীবন মনে থাকবে।

অত:পর আমরা গেলাম ঐতিহাসিক বালি পাথরের শহর সেন্টমার্টিন । পুরো এলাকাটা ঘুরে দেখালাম সবাই একসাথে। এলাকাটা খুব সুন্দরভাবে সাজানো ছিল। সব কিছু গোছগাছ, খুব পরিচর্যা করা ছিল গাছগুলো। আর বালি পাথরের বীচের কথা না বললেই নয়! বিশাল আকৃতির বীচে ছিল হাজারো পাথর ও অন্য দিকে নারকেল বাগান । আমার দেখা সেরা বীচ ছিল সেটা। সবাই মিলে দেখলাম প্রত্নতাত্ত্বিক সব নিদর্শন।

অনেকক্ষন ধরে ঘুরে দেখালম, হোটেল থেকে বীচে যেতে সময় লাগতো দুই মিনিটের কম। এই বীচ দিয়ে দূর দুরান্ত পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিলো। অনেক কিছু দেখতে অনেক ভাল লাগছিলো সেন্টমাটিনে।

পুরো সেন্টমাটিন ঘুরতে চোখে পড়েছিল সাইকেল ও ভ্যান গাড়ির বুকে হাজারো পযর্টক। বীচের বুকে ছিল শত শত সাইকেল, যা নিয়ে পযর্টকরা ঘুরাঘুরি করতেছে। চোখে পড়েছিল শত শত প্রকার মাছের বার বিকিউ , এক কথায় বালি পাথরের মাঝে হাজারো অভিজ্ঞতা পেয়েছিলাম সেখানেই।

পুরো সেন্টমাটিন ভ্রমণ ছিলো সারাজীবন মনে রাখার মত। অনেক ঘুরলাম, সেলফি তুললাম আর বন্ধুরা ও সিনিয়র জুনিয়র মিলে অনেক মজা করেছিলাম।

রাতে চাঁদের আলোয় স্যারদের সাথে হাজার প্রকার গান আড্ডা বীচে হাঁটা চিরকাল স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সকালে বীচের বুকে গোসলের আনন্দ ভুলার মত নয়। সিনিয়রদের এই ভালোবাসা চিরকাল মনে থাকবে।
পুরো ২ দিন ১ রাত ধরে ঘোরাফেরা করে ব্যাক করেছিলাম বঙ্গোপসাগরে বুক দিয়ে।

ফেরার আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল লটারি, অনেক মজার মজার ইভেন্ট, এই জন্যে আবারো ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের শিক্ষকবৃন্দ ও বড় ভাইদের।

আমাদের এই সফল শিক্ষা সফর হইতো বা এতো সফলতা পেতো না যদি না আমাদের প্রান প্রিয় শিক্ষকগণ ও বড় ভাইয়ারা না থাকতো। স্যারদের যতই প্রশংসা করি না কেন সেটা কম হয়ে যাবে?

ধন্যবাদ স্যার ও বড় ভাইয়ারা আমাদের এতো বড় একটা শিক্ষা সফর উপহার দেবার জন্য।

আমরা ভবিষ্যৎ এ আরো বড় এবং সফল শিক্ষা সফর পাবো এই প্রত্যয় জ্ঞাপন করছি।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.