সাকিব-তামিমদের জালমি চ্যাম্পিয়ন

ওয়ান নিউজ ক্রীড়া ডেক্সঃ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল জাতীয় ডিউটিতে বলে ছিলেন না। শহীদ আফ্রিদি ছিলেন না ইনজুরির কারণে। কিন্তু তাদের পেশোয়ার জালমিই প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) চ্যাম্পিয়ন হলো। মাহমুদউল্লাহও শ্রীলঙ্কায়। তার কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সে খেলতে গিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয়। করেছেন ৩ রান। আর পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত রোববার রাতের ফাইনালে জালমি জিতল ৫৮ রানে। আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করেছিল তারা। ১৪৯ রানের টার্গেটও পাহাড় হয়ে্ ওঠে নতুন বিদেশিদের নিয়ে খেলা কোয়েটার জন্য। ১৬.৩ ওভারে মাত্র ৯০ রানে অলআউট কোয়েটা! জমেনি ফাইনাল। তবে শিরোপা উৎসব শেষ করে ড্যারেন স্যামির জালমির পুরো দল কি ন্যাড়া হয়ে যাবে? শিরোপা জিতলে এমনটা করবেন বলে আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টুযেন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক।

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৫ মার্চের রাতের এই ফাইনালটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তানের একটি প্রেস্টিজ ইস্যু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পিএসএল নয়। কিন্তু গত মাসে লাহারে প্রাণঘাতী হামলার পরও সেখানেই এবারের আসরের ফাইনাল করার সিদ্ধান্ত আরো পাকা করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। অনেক বিদেশি ফাইনালে আসেননি খেলতে। নতুন খেলোয়াড় এসেছেন। ফাইনালও ফাইনালের মতো হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না।

বিরাট আশা নিয়ে মাঠে যা্ওয়া হাজার হাজার পাকিস্তানি দর্শক হতাশ হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু পাকিস্তান সরকার ও বোর্ড প্রমাণ করেছে তাদের মাটি বিদেশি ক্রিকেটারদের জন্য নিরাপদ। সেই নিরাপত্তা তারা দিতে জানে। ২০০৯ সালে লাহোরেই শ্রীলঙ্কার টিম বাসে হামলার পর একমাত্র জিম্বাবুয়ে বিশেষ শর্তে পাকিস্তান গিয়েছিল। আর কেউ যায় না। পাকিস্তানকে খেলতে হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। হোম সেটি এখন। কিন্তু পাকিস্তান বোঝাতে চাইলো বিদেশি দেশগুলোর জন্য পাকিস্তানে সফর ও সিরিজ নিরাপদ। তাই জালমির সাথে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানও। পুরো আসর দুবাই-শারজায় করে ফাইনালটা দেশের মাটিতে টেনে এনে একরকমের বিজয় পেল তারা।

এই ম্যাচের গল্পটা তেমন আকর্ষণীয় কিছু নয়। তবে একটা উত্তেজনা ঠিকই ছিল। কারণ, জালমি যে রান করেছিল তা পিএসএলের মতো বড় আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তেমন বড় কোনো লক্ষ্যই হতে পারে না। কিন্তু প্রতিপক্ষ এনামুলের মতো, শন আরভিন, মার উইক, রায়াদ এমরিতদের ডেকে এনে কোনো কাজের কাজ করতে পারেনি। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে তাদের কোনো কম্বিনেশনই দাঁড়ায়নি বলেই হেরে গেছে হারার আগে। জালমি অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি ম্যান অব দ্য ম্যাচ ছোটো ঝড়ে ইনিংসের কারণে। কামরান আকমল সিরিজের সেরা খেলোয়াড়। পিএসএলের সেরা ব্যাটসম্যান। আবার কামরানই টুর্নামেন্টের সেরা উইকেটকিপার। পুরস্কারের হ্যাটট্রিক জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়ের। সেরা বোলারের পুরস্কার জিতেছেন সোহেল খান।

এদিন ফাইনালে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কামরান আকমল দুরন্ত শুরুই এনে দিলেন। ৪.৩ ওভার। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪২। ডেভিড মালান (১৭) ফেরার পর কামরান আর মারলন স্যামুয়েলস (১৯) দশম ওভারে ৮০ পেরুলেন। হঠাৎই ৮৬ রানে চার উইকেট হারানো দল জালমি। কোয়েটোর হাসান খান. মোহাম্মদ নাওয়াজের কল্যাণে। মোহাম্মদ হাফিজের ১২, ইফতিখার আহমেদের ১৪. অধিনায়ক স্যামির ১১ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় ঝড়ো হার না মানা ২৮ একটা জায়গায় নিয়েছে দলকে। কিন্তু তখন প্রশ্ন ফাইনালে জেতার জন্য স্যামিদের স্কোরটা কম হয়ে গেল না?

জালমির সংগ্রহটাকে উল্টো পাহাড়ের মতো বানিয়ে ফেলেনে দেখতে না দেখতে। সেখানে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা্ও চোখে পড়ার মতও। ১৩ রানের মধ্যে কোয়েটার ৩ জন নেই। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশের এনামুল, শুধু ফাইনাল খেলতেই যার পাকিস্তানে যাওয়া। তিনি ৮ বলে ৩ রান করার পর অকারণ এক ছক্কা মারতে গিয়ে অক্কা পেলেন। না বিজয় নামের এনামুল বিজয় পেলেন, না তার দল।

ওই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি কোয়েটো। মোহাম্মদ আসগর ৩, হাসান আলি ও ওয়াহাব রিয়াজ ২টি করে উইকেট নিলেন। তাতে ১১ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজনের মাত্র দুই ডিজিট। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (২২), শন আরভিন (২৪), আনোয়ার আলিরা কোয়েটাকে ম্যাচ জেতানোর কোনো সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারেননি।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.