ডেস্ক নিউজ:
করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা এবং অভিভাবকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধু টিউশন ফি নেবে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনও ফি নেওয়া হবে না। কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা নিলেও ফেরত দিতে হবে।
রবিবার (২২ নভেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সোমবার (২৩ নভেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে বুধবার (১৮ নভেম্বর) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ সংক্রান্ত্র নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
আজ প্রকাশিত মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। তবে এরই মধ্যে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসের পাশাপাশি বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা ভালোভাবে করতে পারেনি। একইভাবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এসব অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পেরেছে, কিছু শিক্ষার্থী পারেনি।
সার্বিক বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করে উদ্ভূত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।
তবে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অভিভাবকদের মতদ্বৈততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু অভিভাবক বলছেন, একদিকে স্কুল বন্ধ ছিল, আর অন্যদিকে করোনার সময়ে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অতএব তাদের পক্ষে টিউশন ফি দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। উপরন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রতি মাসে তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেই হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, এমতাবস্থায় আমাদের যেমন অভিভাবকদের অসুবিধার কথা ভাবতে হবে, অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায়, কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন সংকটে পতিত না হয় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
সব বিষয় বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নেবে। কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনও ফি নিতে পারবে না, বা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দেবে। এছাড়া অন্য কোনও ফি নিয়ে তা ব্যয় করা না হলে তা একইভাবে ফেরত দেবে। তবে যদি কোনও অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটে পতিত হন, তাহলে বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে। এখানে উল্লেখ্য, কোনও শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনও কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত্নশীল হতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ২০২১ সালের শুরুতে যদি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোনও ফি যেমন: টিফিন, পুনর্ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফি নেবে না, বা ওই নির্দিষ্ট খাতে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয় করতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় আগের মতো সব ধরনের যৌক্তিক ফি নেওয়া যাবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.