বিশেষ প্রতিনিধি:
কক্সবাজার জেলা শহরের সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য দক্ষিণ রুমালিয়ার ছরা সিকদার বাজার এলাকায় বিট পুলিশিং সমাবেশে (২ ও ৩ নং বিট) কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসীরা যতই শক্তিশালী হউক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, প্রয়োজন জনগণের সহযোগিতা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকাল চার ঘটিকার সময় কক্সবাজার পৌরসভার ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের সীমান্ত এলাকার সিকদার বাজারের সদর মডেল থানার উদ্যোগে ২ ও ৩ নং বিট পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মুনিরুল গিয়াস এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ মোর্শেদ।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান পিপিএম-সেবা। কিন্তু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এলাকাকে অপরাধ ও সন্ত্রাসী বাহিনী মুক্ত করতে হলে পুলিশকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় সাধারণ জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র পুলিশের মাধ্যমে এলাকার অপরাধ মুক্ত করা যাবেনা।
তিনি স্থানীয় সমাজপতিদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে সিকদার বাজার এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ নিবেন বলে উপস্থিত স্থানীয় জনসাধারণকে আশ্বস্ত করেন। তিনি উপস্থিত সমাজপতি এবং স্থানীয় জনসাধারণকে নিজের এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর, রামু, ঈদাগাও সার্কেল) ও সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের মুঠোফোন নাম্বার প্রদান করেন। সন্ত্রাসী সহ সকল প্রকার অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের এবং অপরাধীদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিট পুলিশিং সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু উজ্জ্বল কর। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, পুলিশের সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশ জনতার বন্ধন সৃষ্টি করতেই বিট পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করেছেন। বিট পুলিশিং এর সাথে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। কারণ পুলিশের একার পক্ষে এলাকাকে অপরাধ মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই আওয়ামিলীগের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আজকের বিট পুলিশিং সমাবেশ।
বিট পুলিশিং সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদার, সাংবাদিক মাস্টার সেলিম উদ্দিন ও ইঞ্জিনিয়ার মামুন অর রশিদ চৌধুরী মনি।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর (সংরক্ষিত মহিলা আসন ৪,৫ ও ৬নং ওয়ার্ড) ইয়াছমিন আক্তার, দৈনিক কক্সবাজার ৭১ এর সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার, বাংলা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও জেলা বিএমএসএফ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহীদুল্লাহ, শহর আওয়ামীলীগ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী,
৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম ওয়াজেদ, দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়া সমিতি বাজার এলাকা সমাজের সভাপতি আবদুল গফুর সওদাগর ও জয়নাল আবেদীন, স্থানীয় সাহিত্যিকা পল্লী সমাজের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ আলম, দক্ষিণ রুমালিয়ার ছরা পূর্ব সমাজ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর হেলালী, কৃষি সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ শাহ আলম, সিকদার বাজার ব্যাবসায়ীদের পক্ষে আবুল কাশেম সওদাগর প্রমূখ।
উল্লেখ্য গত ১ জুন রবিবার বিকাল আনুমানিক ৫ ঘটিকার সময় সিকদার বাজার এলাকায় দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে গুলাগুলিতে দুই সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং একজন গুরুতর আহত হয়। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করলে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এই বিট পুলিশিং সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বিগত ২০১৮ সালের ২৯ জুন সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয় শহরের বাঁচা মিয়ার ঘোনা এলাকার তানভীর নামের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তানভীর হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামি ১ মে নিহত সন্ত্রাসী রায়হান। রায়হান হত্যার যে মামলা করা হয়েছে সেই মামলায় নিহত তানভীরের ভাইদের আসামি করা হয়। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং নিহত তানভীরের বড় ভাই বিট পুলিশিং সমাবেশে উপস্থিত জেলার উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দের সামনে নিজেদেরকে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তাদেরকে সন্ত্রাসী রায়হান হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ এই মামলায় যেন কোন নিরপরাধ মানুষদের আসামী করা না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন বিট পুলিশিং সমাবেশে উপস্থিত প্রধান অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.