ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ কোয়ারেইন্টাইন আদেশে থাকা ২ চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অফিস করে রোগী দেখেছেন। বুধবার হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীর সাথে দুই চিকিৎসক কয়েকদফা স্বাক্ষাত করেছেন। এরা হলেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শামশুদ্দিন। করোনা রোগীর সংস্পর্শে থাকা দুই চিকিৎসকের উপস্থিতিতে পুরো হাসপাতাল জুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। আতংক বিরাজ করছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাঝেও। গতকাল করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পরপর কোয়ারেইন্টাইনে পাঠানো হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক সহ ১৪ জনকে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গতকাল ২৪ মার্চ মঙ্গলবার গতকাল সৌদি আরব থেকে আসা এক বৃদ্ধার করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়। এর পরপরই ঐ রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে যাওয়া হাসপাতালের তত্বাবধায়ক সহ ৯ চিকিৎসক সহ ১৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর পরপরই হাসপাতালের ৯ চিকিৎসক সহ ১৪ জন কোয়ারেন্টাইনে চলে যান। কোয়ারেইন্টাইনে পাঠানোর তালিকার এক নাম্বারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন ও তালিকার ৩ নাম্বারে রয়েছেন সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শামশুদ্দিন।
তবে আজ বুধবার সকাল থেকেই কোয়েরেন্টাইনে থাকা কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মহি উদ্দিন ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শামশুদ্দিন সকাল থেকে হাসপাতালে অফিস করছেন ও রোগী দেখছেন। এর মধ্যে তত্বাবধায়ক ডাঃ মহিউদ্দিন সকালে ও দুপুরে করোনা রোগীর সাথে দেখা করেছেন। তিনি ঐ করোনা রোগীকে খাবারও সরবরাহ করেছেন।
কোয়েরেন্টাইনে থাকা দুই চিকিৎসকের আসার খবরে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল জুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। এই সময় হাসপাতালের ডিউটিতে থাকা অন্য চিকিৎসকরাও আতংকিত হয়ে পড়েন। অনেক চিকিৎসক দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এই ঘটনায় পুরো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল জুড়ে আতংক বিরাজ করছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, বিদেশ থেকে আসার তথ্য গোপন করায় ও ভিআইপি’র মামী পরিচয়ে ১৮ মার্চ সকালে করোনা আক্রান্ত ঐ রোগীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনা আক্রান্ত ঐ রোগীকে ভিআইপি মর্যাদায় হাসপাতালের ৫০১ নাম্বার কেবিনে ছিলেন। ভিআইপি রোগী হওয়ায় হাসপাতালের অধিকাংশ সিনিয়র চিকিৎসক প্রতিদিন ঐ রোগীকে দেখতে যেতেন। করোনা সনাক্ত হওয়ার পর ঐ রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া ৯ চিকিৎসক সহ হাসপাতালের ১৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। লকআউট করা হয় করোনা আক্রান্ত রোগীর ২ সন্তানের বাড়ির আশপাশের ২টি এলাকা।
এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মহিউদ্দিন বলেছেন, গতকাল তার কোয়েরেন্টাইনে যাওয়ার আদেশ হলেও তারা দুই চিকিৎসক কোয়েরেন্টাইনে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করছেননা। সবকিছু তিনি আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, আজ করোনা আক্রান্ত ঐ রোগীকে দুইবার খাবার সরবরাহ করেছেন। তার কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছেনা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোহিউদ্দিনকে ও ডাঃ শামশুউদ্দিন সহ ১৪ জনকে গতকাল থেকে কোয়েরেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল রাত থেকেই তারা কোয়েরেন্টাইনে ছিলেন। এই ২ চিকিৎসক কোয়েরেন্টাইন নামানা খুবই উদ্বেগ জনক। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.