নীতিশ বড়ুয়া, রামু
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, সাড়াজাগানো পার্লামেন্টারিয়ান আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্র সাইমুম সরওয়ার কমলের হাতে তুলে দেন দলের মনোনয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সাংসদ কমলের মনোনয়ন লাভের খবরে কক্সবাজার শহর, রামু ও ঈদগাওতে দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ জনমনে আনন্দের বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল বের করেছে।
উচ্চ শিক্ষিত, পরিচ্ছন্ন, মেধাবী, ত্যাগী, সৎ, পরিশ্রমী নেতা হিসেবে সাইমুম সরওয়ার কমলের পরিচিতি সর্বত্র। দীর্ঘদিন তিনি কক্সবাজার-রামুবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। বিগত ৫ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এ জনপদে অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে গণমানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন।
আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলএমপি’র সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি মহান জাতীয় সংসদ স্বীকৃত অন্যতম শ্রেষ্ঠ বক্তা। তিনি কক্সবাজারের একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি ২০১৪ সালে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। তাঁর জন্ম ১৯৭০ সালে। তার পিতা সাবেক সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রদুত আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী ছিলেন কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, কক্সবাজার সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রামু সরকারি কলেজ, রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জমিদাতা। মাতা বেগম রওশন সরওয়ার একজন গৃহিনী ও বিশিষ্ট সমাজসেবিকা। তার স্ত্রীর নাম সৈয়দা সেলিনা আকতার শেলী। তিনি এক পুত্র ও এক কণ্যা সন্তানের জনক।
শিক্ষাঃ
সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে বি.এস.এস. অনার্সসহ এম.এস.এস. ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে বেলজিয়ামের বিখ্যাত ব্রাসেলস ইউনির্ভাসিটি ইউএলবি থেকে আর্ন্তজাতিক রাজনীতি বিষয়ে এম.এস.এস. ডিগ্রী অর্জন করেন। তাছাড়া আমেরিকার মিশিগান স্টেইট ইউনির্ভাসিটি থেকে এক্সটার্নাল রিলেশনস অব দি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিষয়ে ডিপ্লোমা এবং ফ্রান্সের ও.ই.সি.ডি. থেকে দি অর্গনাইজেশন ফর ইকোনমিক কো- অপারেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষন গ্রহন করেন।
রাজনীতিঃ
তিনি কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ কক্সবাজার জেলার সভাপতি। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রাথী ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
উন্নয়নঃ
তাঁর দাবী ও চেষ্টার প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবজাারে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। তৎমধ্যে- কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর, কক্সবাজার-রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসানের কাজ শুরু, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, রামু সেনানিবাস, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন, বিজিবি আঞ্চলিক ব্রিগেড, রামু বিকেএসপি, কক্সবাজার সমুদ্র গবেষনা কেন্দ্র, কক্সবাজার ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রামু ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বন্যা নিয়ন্ত্রনে বাঁকখালী নদীতে বেড়িবাঁধ ও নদী শাসন, ভারুয়াখালী-নন্দাখালী বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ভারুয়াখালী-খুরুশকুল সংযোগ সেতু, চাকমারকুল-রাজারকুল-দক্ষিন মিঠাছড়ি সংযোগ সেতু, ঈদগাহ এইচটিএম রাজা মিয়া সেতু, ঈদগাহ বাজার উন্নয়নসহ কক্সবাজার সদর, বৃহত্তর ঈদগাহ ও রামুতে অসংখ্য কালর্ভাট, রাস্তাঘাট নিমার্ণ ও গ্রাম বিদ্যুতায়ন হয়।
শিক্ষা সম্প্রসারনে ভূমিকাঃ
উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে পড়ালেখার জন্য কক্সবাজার, রামুর ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি। তার সময়ে কক্সবাজার বাসীর উচ্চ শিক্ষার্থে কক্সবাজার সরকারি কলেজ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, কক্সবাজার সিটি কলেজ, রামু কলেজ ও ঈদগাহ কলেজে অনার্সসহ মাষ্টার্স কোর্স চালু হয়। স্বাধীনতার আগে কক্সবাজার সদর ও রামুতে উচ্চ বিদ্যালয় ছিলো মাত্র ১১ টি। স্বাধীনতার পরে ১৯৭১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই উপজেলায় উচ্চ বিদ্যালয় হয়েছে ২৮ টি। আর ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৫ বছরে কক্সবাজার সদর ও রামুতে নতুন উচ্চ বিদ্যালয় হয়েছে ১৯ টি। তাছাড়া গ্রাম ভিত্তিক অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে তাঁর প্রচেষ্টায়। তার প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের আকাঙ্খিত রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও রামু কলেজ সরকারি হয়।
সমাজ সেবায় ভুমিকাঃ
যেখানে দুর্যোগ সেখানেই কমল। তিনি ১৯৮৮ ও ১০৯৮ সালের বন্যা, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরি ঘুর্ণিঝড়, ২০০৪ সালে উত্তর বঙ্গে বন্যা, ২০১২, ২০১৪ সালের বন্যায় দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে কক্সবাজারবাসির হৃদয়ে স্থান করে নেন। তিনি ২০০৭ সালে সিডরে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বাগেরহাটের শরণখোলায় ত্রাণ নিয়ে গমন ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশের একমাত্র এমপি হিসেবে বিশাল দলসহ ভুমিকম্পে বিধ্বস্থ নেপালে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের জন্য ত্রাণ নিয়ে ছুটে যান। তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে অসংখ্য রাস্তা নির্মাণ, বড় বড় দাঙ্গা দমনে ভুমিকা, মসজিদ, মন্দিরের উন্নয়ন ও আলেম সমাজের পক্ষে সাহসী ভুমিকা রেখেছেন এবং হাজার হাজার বেকার শিক্ষার্থীকে চাকুরি দিয়েছেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরকে কক্সবাজার সদর-রামুবাসির পক্ষ থেকে ১০১ ট্রাক চাল উপহার দিয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.