সংকটগ্রস্তদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ
প্রায় ৭০০ স্থানীয় এনজিও/সিএসও-র ফোরাম বিডিসিএসওপ্রসেস তাদের দ্বিতীয় বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করেছে।
তিনদিনব্যাপী ভার্চুয়াল এই সম্মেলনটির প্রথম দিন মঙ্গলবারের অধিবেশনের শিরোনাম ছিল ‘নাগরিক সমাজ গঠন, পরিপূরকতা এবং স্থানীয় অংশীজনদের নেতৃত্ব’।
অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ডঃ কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক রাশাদুল ইসলাম। প্রায় ৩০০ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীগণ এতে অংশগ্রহণ করেন। ভার্চুয়াল এই সম্মেলনে বাংলা এবং ইংরেজিতে অনুবাদের বিশেষ আয়োজন ছিলো। বিডিসিএসওপ্রসেস’র সমন্বয়কারী রেজাউল করিম চৌধুরী এই সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।
এতে চার জন আন্তর্জাতিক বক্তা বক্তৃতা করেন, তারা হলেন- ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যিানিটারিয়ান স্টাডি এসোসিয়েশনের (নেদারল্যান্ড) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক থিয়া হিলহর্স্ট, হিউম্যানিটারিয়ান ফোরাম (যুক্তরাজ্য)-এর প্রেসিডেন্ট ড. হ্যানি এল বান্না, এলায়েন্স ফর এম্পাওয়ারমেন্ট’র আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী সুদানশু এস সিং, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জেমি মুন।
বাংলাদেশ থেকে এতে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের রোকেয়া কবির, এডাব’র জয়ন্ত অধিকারী, সজাগ’র আবদুল মতিন, নাহাব’র আবদুল লতিফ খান, বিএনএনআরসি’র এএইচএম বজলুর রহমান এবং বাপা’র শরীফ জামিল কথা বলেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এই সম্মেলনে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
তাদের মধ্যে ময়মনসিংহের জনাব ফারুক, হাতিয়ার জনাব রফিক, বরিশালের আনোয়ার জাহিদ, রাঙ্গামাটির জনাব ললিত চাকমা, সাতক্ষীরা থেকে জনাব মোহন মন্ডল, মাসুদা ফারুক রত্না নরসিংদী থেকে, রাজশাহী থেকে মিসেস নাসরিন পারভিনও সম্মেলনে বক্তৃতা করেন।
ডঃ কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মানবিক মর্যাদাকে বিবেচনা করলেই স্থানীয় সুশীল সমাজ কার্যকর হবে, তিনি স্থানীয় এনজিও / সিএসওগুলিকে অর্থ বা তহবিল সংগ্রহের পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করার সুপারিশ করেন। রাশাদুল ইসলাম স্থানীয়করণের ধারণাকে সমর্থন করেন এবং তিনি স্থানীয় এনজিও/সিএসও-এর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালনের চেষ্টা করবেন।
অধ্যাপক থিয়া হিলহর্স্ট বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কাছে সেবা পৌঁছানোর জন্য জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা আবশ্যক। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে তাদের ঔপনেবেশিক চরিত্র বদল করতে হবে।
ডাঃ হ্যানি এল বান্না বলেন, স্থানীয় মানুষ এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোই যেকোনও দুর্যোগে সবার আগে সাড়া দেয়।
সুদানশু সিং বলেন, আজকাল ভারতে এবং নেপালে আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো নিজেদের একটি কার্যালয় স্থাপন করেই নিজেদেরকে জাতীয়/স্থানীয় এনজিও হিসিবে দাবি দাবি করে এবং স্থানীয়/জাতীয় তহবিল সংগ্রহ করতে চায়। তারা স্থানীয়/জাতীয় এনজিওর সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রতিযোগিতা করে, যা আর্ন্তজাতিক প্রতিশ্রুতিমালা বিরোধী।
রোকেয়া কবির বলেন যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় জনগণই এই লড়াইইকে সংগঠিত করেছে এবং দেশকে স্বাধীন করেছে। কিন্তু বর্তমানে বিদেশী সহায়তা আমাদের স্বনির্ভর ও সামাজিক সম্পদের চেতনাটিকে কখনো কখনো ম্লান করছে।
জয়ন্ত অধিকারী বলেন, জাতিসংঘ এবং আইএনজিওকে কেবল প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে, তাদের যোগাযোগের মাধ্যম ইংরেজি নয়।
আবদুল লতিফ খান সাম্প্রতিক বন্যার জন্য ইউএন এজেন্সি এবং আইএনজিওদের তহবিলের স্বচ্ছতার দাবি জানান, তিনি জাতিসংঘের সংস্থাগুলির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সহায়তার পূর্ণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যা রোহিঙ্গা সহায়তার প্রায় ৮০%।
ড. জেমস মুন বলেন, তিনি এবং তাঁর সংস্থা সাব কন্ট্রাকটিং নয়, অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে সমতাতে বিশ্বাসী।
শরীফ জামিল বলেন, বাংলাদেশের এনজিও/সিএসওর নিজস্ব সম্পদ, বিশেষত পরিবেশ রক্ষায় জনসাধারণকে একত্রিত করার ঐতিহাসিক প্রমাণ আছে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.