শৈলকুপার ২ ইউপি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ ২৫ বছর পৌরসভা এলাকা ছাড়েনি

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ

নিজস্ব ভবন হয়েছে তাও দুই বছর, এরপরও পৌর এলাকার অফিস ছাড়ছেন না ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ। গ্রামাঞ্চলের মানুষকে নাগরিক সেবা নিতে পৌরসভা এলাকায় আসতে হচ্ছে। একই ভাবে মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদও দীর্ঘ ২৫ বছর রয়েছে পৌর এলাকায়। তারা নিজস্ব ভবন হয়নি, এই অজুহাতে পৌরসভা এলাকায় থাকছেন।

 

এদিকে পৌর এলাকার এই দুটি ভবন ছেড়ে দিতে একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন শৈলকুপা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তারা নিতিমালা মেনে অবিলম্বে ওই দুটি ইউনিয়ন পরিষদের সমুদয় জায়গা পৌরসভাকে বুঝিয়ে দিতে দুই চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

একই ভাবে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের দপ্তর ও মন্ত্রানালয় থেকে ভবন দুইটি ছেড়ে দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯২ সালে। ওই বছরের ১৯ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশিত হয়। সেখানে শৈলকুপার ৭ টি মৌজার জমি পৌরসভার অন্তভুক্ত হয়। যার মধ্যে উত্তরে নবগ্রাম, খুলিয়াপাড়া, দক্ষিনে কুমার নদী, পশ্চিমে সিদ্ধ, ইটালী, দেবতলা ও পূর্বে সাতগাছি এবং শৈলকুপা মৌজার কিছু অংশ রয়েছে।

 

শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুজ্জামান জানান, পৌরসভা গঠনের পর পৌর এলাকার মধ্যে পড়ে ৯ নম্বর মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও ১৩ নম্বর উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। তারা দীর্ঘদিন এই পৌরসভা এলাকার ভবনেই ইউনিয়নের পরিষদের কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে উমেদপুর ইউনিয়নের নিজস্ব ভবন তৈরী হয়েছে তাদের ইউনিয়ন এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামে। আর মনোহরপুর ইউনিয়নের নিজস্ব ভবন এখনও হয়নি।

 

তিনি জানান, ২০০৯ সালের পর থেকে পৌরসভার পক্ষ থেকে এই ভবন দুইটি ছেড়ে দিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু তারা এ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। নানা অজুহাতে তারা পৌরসভা এলাকায় থাকতে চান। তিনি জানান, এই দুইটি ভবনের কারনে তারা ওই এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে পারছেন না।

 

মেয়র আরো বলেন, তার ধারনা উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাব্দার হোসেন মোল্লা এই জায়গাটি নিজের করে নিতে চাই। যে কারনে নিজস্ব ভবন হবার পরও জায়গা ছাড়ছেন না। আর মনোহরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজস্ব ভবন না হওয়ায় সময় চেয়ে বসে আছেন। উমেদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, নিজস্ব ভবন হবার পরও তাদের সকল কাজে কষ্ট করে পৌরসভা অর্থাৎ শৈলকুপা শহরে যেতে হয়।

 

তামিনগর গ্রামের মিনারুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নের নাগরিক হয়ে নাগরিক সেবা পেতে তাদের পৌরসভায় যেতে হচ্ছে। এভাবে বছরের পর বছর তারা কষ্ট করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, নিজস্ব ভবন হয়েছে তারপরও পৌরসভায় যেতে হচ্ছে এটা দুঃখজনক।

 

এ ব্যাপারে উমেদপুর ইউনিয়নের সচিব শরিফুল ইসলাম জানান, ২৪ টি গ্রাম নিয়ে তাদের ইউনিয়ন। লোকসংখ্যা ২৬ হাজার। তিনি বলেন, নানা জটিলতার কারনে তারা শহর থেকে যেতে পারছেন না। আর ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান সাব্দার হোসেন মোল্লা জানান, ভবন হয়েছে কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি। যে কারনে তারা নিজস্ব ভবন ছাড়তে পারছেন না।

 

তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নের টাকায় তাদের কিছু দোকানঘর রয়েছে পরিষদ ভবনের সামনে। যেগুলো নিতে হলে পৌরসভাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কিন্তু তারা সেটা দেবার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। অবশ্য পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুজ্জামান দাবি করেন ওই দোকান গুলো সরকারের অনুদানের টাকায় তৈরী। ফলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা নিজ উদ্যোগে সবকিছু বুঝিয়ে দেবেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.