শেষের পথে কেবল বেঁচে আছে আশাটাই

ওয়ান নিউজ ক্রীড়া ডেক্সঃ টুর্নামেন্ট শুরুর আগ থেকে বাংলাদেশ ফেভারিট। টাইগার দলের কণ্ঠে শিরোপা জয়ের প্রবল প্রত্যয়। তা দলটা তো সেরকমই। প্রথম তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষকে স্রেফ গুঁড়িয়ে দেওয়া সেটাই প্রমাণ করে। শ্রীলঙ্কার সাথে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের ঠিক আগের ম্যচটা ৮২ রানে অল আউট আর ১০ উইকেটের হারই কি কাল হল! ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসে লাগল প্রবল আঘাত! বোলাররা তো ২২১ রানেই অল আউট করে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। ওভার প্রতি সাড়ে চার রান। সাকিব আল হাসান ম্যাচের মাঝপথে ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়লেন। কিন্তু এই দলে ব্যাটসম্যান কি তিনি একাই? বোলারদের গড়ে দেওয়া শিরোপা জয়ের স্বপ্নের মঞ্চটা শেষ পর্যন্ত টাইগারদের জন্য বুঝি সমাধিক্ষেত্রই হতে যাচ্ছে। আর তার পেছনে ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যর্থতা এখনই নিশ্চয়ই কাঁদাতে শুরু করেছে কতো মানুষকে! আহা!

২২ রানে পড়েছিল ফাইনালের তিন উইকেট। সাকিবের অনুপস্থিতিতে ব্যাটসম্যান একজন কম। এবং দামী ব্যাটসম্যান। শুরু থেকে নড়বড়ে তামিম ইকবাল ব্যর্থ। মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমানদের সুযোগ কাজে লাগানো হয় না। প্রয়োজনে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটও জ্বলে না। আশার মশাল হাতে ছুটেছিলেন মিডল অর্ডারের দুই ভরসা মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে তাদের ৫৮ রানের জুটি ছাড়া আর কিছুই তো নেই! আছে কেবল চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার নিদারুণ বুকভাঙা হাহাকারের গল্প। মুশফিকও এমন ভুলে উইকেট দেন তাতে আক্ষেপের শেষ থাকে না।

মিরপুর থেকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় ২২২ রানের লক্ষ্যে ছুটে বাংলাদেশে হারের পথেই। হ্যাঁ, ওটাই বলতে হচ্ছে। কারণ, ৩১ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৯ রান স্বাগতিকদের। টাইগারদের গর্জে উঠে দূরের দিকে সরতে থাকা শিরোপাটা প্রবল গর্জনে ছিনিয়ে আনার সামর্থ্য ও বিশ্বাস কি এখনো বেঁচে আছে? মাহমুদউল্লাহ ৪৯ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। সাইফ উদ্দিন যোগ দিয়েছেন। ২ রান করে ফেলেছেন। এখনো যে পথের অনেক বাকি। ব্যাটসম্যান কোথায়?

তবু ক্রিকেট মানে গৌরবময় মহান অনিশ্চয়তার খেলা। আশা নিয়ে তাই বুক বাঁধবেন? তিন তিনটি ফাইনালে আগে হার। যার দুটি ওয়ানডে। তাতে তাও লড়তে লড়তে হারা। তারপর কান্নায় ভাসা। কিন্তু এখন ম্যাচের লাগাম শ্রীলঙ্কার হাতে। বাতাসে টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীদের কান্নার শব্দ বুঝি ভেসে বেড়াচ্ছে। তবু…। ক্রিকেট তো। কতো কিছুই না ঘটতে পারে!

তামিমের আউট দিয়ে শুরু। উইকেট বিসর্জন ১৮ বলে ৩ রান করে। মিঠুন শুরুতে ছক্কা হাঁকালেন। কিন্তু রান আউট হওয়ার আগে তার সাথে যোগ হলো আর মাত্র ৪ রান। সাকিবের অনুপস্থিতিতে তিন নম্বরে ফিরে আসা সাব্বিরের। কিন্তু ক্রমাগত ব্যর্থতায় ঘুরপাক খেতে থাকা ব্যাটসম্যান বুঝি ব্যাটিংটাই ভুলে গেছেন। উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন ৯ বলে ২ রান করে। এরপরই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর জুটি। রিভিউ নিয়ে একবার বাঁচলেও একই ভুলে উইকেট বিলানোর বিলাসিতা ২২ রান করা মুশফিকের। মূল ব্যাটসম্যানরা যখন একের পর এক এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে দর্শক হতে চান, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের কি করার থাকে? ৯০ রানে ৫ উইকেট। মিরাজের আউটের ধরন যেখানে আনাড়ির মতোই। এই তো বাংলাদেশের ব্যাটিং হঠাৎ, যেটি আসলে গত কয়েক বছরের প্রচণ্ড দাপুটে টাইগারদের কথা বলছে কিছুতেই।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.