নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ১৮ জনের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট গাজী মহসীন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শাহীন মৃধা। জামিন আবেদন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ আসামি।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সদর হাসপাতালে যান। তিনি মাগুরায় ফেরার পথে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ পাওয়া যায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
হামলায় শেখ হাসিনাসহ তাঁর গাড়িবহরে থাকা লোকজন, আওয়ামী লীগনেতা ও সাংবাদিকসহ অন্তত এক ডজন লোক আহত হন। ওই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদল সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা করেন।
বিভিন্ন আদালত ঘুরে হাইকোর্টের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উলেখ করে ৩০ জনকে সাক্ষী করে পেনাল কোড, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক তিনটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।
সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচারাধীন পেনাল কোডের মামলায় নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর এবং সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ-দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন অস্ত্র আইনে ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটির কার্যক্রম যথাক্রমে ২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগস্ট আসামিপক্ষ হাইকোর্টে স্থগিত করেন। পরে গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিবুর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.