শার্শার সাতমাইল পশুহাটে বিজিবি’র বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের হয়রাণীর অভিযোগ
যশোর অফিস : বিজিবি কর্তৃক গরু ব্যবসায়ীদের হয়রানি করার অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুহাট যশোরের শার্শার বাগআচড়া সাতমাইল পশুহাট কমিটি ও ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, ভারতীয় গরুর ভ্যাট চালান ও হাট থেকে গরু কেনার চালানসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্বেও খালিশপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করছে। এতে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, দর্শনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তত: ৫০জন গরুর ব্যাপারি পথে বসেছেন।
চুয়াডাঙ্গার খয়েরহুদা গ্রামের ময়নুদ্দিন বলেন, ১০ বছর ধরে সাতমাইল পশুহাট থেকে ভারতীয় গরু কিনে দেশের বিভিন্ন হাটে নিয়ে বিক্রি করি। কিন্তু গত দু’তিন মাস ধরে খালিশপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করছেন।
ভারতীয় গরুর ভ্যাট চালান ও হাট থেকে গরু কেনার চালানসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাদেরকে দেখালেও গরু আটকে দিচ্ছেন। এতে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জীবননগরের পেয়ারাতলা গ্রামের বারেক ব্যাপারি বলেন, বিজিবি গরুর ভ্যাট চালান ও হাট থেকে গরু কেনার রশিদ দেখালে তারা এসব নিয়ে ছিড়ে ফেলে গরু গুলো ক্যাম্পে আটকে রাখছে।পরে গরু গুলো নিলামে উঠাচ্ছে। এতে আমার মত অনেক ব্যবসায়ী পূজি হারিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি।
শার্শার সাতমাইল পশুহাটে গরু কিনতে আসা চুয়াডাঙ্গার গরুর ব্যাপারি ফারুক হোসেন,সহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, জীবননগরের আবুল কালাম, আবুল কাশেম, সাজেদুল ইসলাম ও আব্দুল আলিম এর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা অভিযোগ করে বলেন, খালিশপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সরকারি ভ্যাট চালান ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখালে সেগুলো নিয়ে ছিড়ে ফেলে। তখন আমাদের কাছে আর কোন কাগজ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে ব্যাটালিয়নে দেনদরবার করেও কোন লাভ হয়নি। বাগআচড়া সাতমাইল পশুহাট পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু তালেব মেম্বার বলেন, এই হাটটি দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুহাট। গত বছর সরকারি ঘরে পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে হাটটি ডাকা হয়েছে।
এই অঞ্চলে ভারতীয় গরু আনার জন্য সরকারি ৬টি খাটাল আছে। খাটলের অদিকাংশ গরু এই হাটে ওঠে তাই ওই গরু কেনার জন্য চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, দর্শনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তত দুই শত ব্যাপারি প্রতি হাটের দিন গরু কিনতে এখানে আসে। অথচ খালিশপুর ব্যাটালিয়নের বিজিবির হয়রানীর কারনে ব্যাপারি আসা কমে গেছে। তাদের অত্যাচারে ৫০জন গরুর ব্যাপারি পুজি হারিয়ে পথে বসেছেন। পশুহাট পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য আব্দুল খালেক খতিব বলেন, বিজিবির হয়রানির ভয়ে হাটে ব্যাপারি আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এতে হাট ডাকের মুল টাকা তোলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে খালিশপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯৬০৪২৩০-৩১) নম্বরে বারবার ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেননি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.