নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা শিশু হাসপাতালে মিলেমিশে লুটপাট করছে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, পরিচালক ডাঃ সৈয়দ শফি আহম্মদ মোয়াজ ও অধ্যাপক ড. সমির কুমার সাহা সিন্ডিকেট।
স্বাস্থ্যসেবাকে কেন্দ্র করে এরা এক ধরনের ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ একাধারে দেড় ডজন সরকারি ও সাংবিধানিক পদ-পদবি দখল করে রয়েছেন। এক ব্যক্তির একাধিক পদে দায়িত্ব থাকলে কোন কাজই সঠিকভাবে পালন করা হয়না তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ।
সরকার চাইলে এসব পদে যোগ্য লোক বসাতে পারেন কিন্তু শহিদুল্লাহ সিন্ডিকেট এতটাই ক্ষমতাধর যে তাদের বিষয়ে কেউ সহজে পদক্ষেপ নিতে পারেন না। এ কারণে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সেবা এখন দিনে দিনে রসাতলে যাচ্ছে।
জানা গেছে, দেড় ডজন পদে থাকা অধ্যাপক মো. শহিদুল্লাহ শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে নেন নানা কায়দায়। তার যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবায় কোন উন্নতি হয়নি বরং সেবা পরিবেশে নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে তার অদক্ষতাকে দায়ি করেছেন। জানা যায়, সরকারি একটি সংস্থা তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে গোপন প্রতিবেদন তৈরি করছেন। যা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানোর কথা রয়েছে।
এই তিন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট চক্র বহুদিন ধরে গিলে খাচ্ছে সরকারের শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় হাসপাতালটি। শিশুদের জন্য বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবার এ প্রতিষ্ঠানটি দেড় যুগ ধরে এই চক্রের কবল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। হাসপাতালটির ক্যান্টিন পরিচালনা থেকে শুরু করে ঔষধ কেনা, বদলি পদায়ন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সরঞ্জাম সরবরাহসহ সবকিছু চক্রটির নিয়ন্ত্রণে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কও তাদের কথার বাইরে যেতে পারেন না। স্বাস্থ্য বিভাগের গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই তিন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন থেকে অনিয়ম করে যাচ্ছেন বলে হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। শুধু কি অনিয়ম দূর্নীতি? আমাদের অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
যেভাবে পছন্দের লোক বসিয়ে লুটে-পুটে খাচ্ছে!
তথ্য পাওয়া যায়, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ড্যাব নেতা ও ঢাশিহা প্রাক্তন সভাপতি ডা. মো.হানিফকে ৬৫ বছরের পরও ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে এক বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অনলাইন Zoom মিটিং এ তাড়াহুড়ো করে এ চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের অবৈধ কাজটা সম্পন্ন করেছেন। ঢাকা শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, পরিচালনা ব্যবস্থাপনা পরিচালক, CHRF ও ব্যবস্থাপনা বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন সিন্ডিকেটের অপকর্ম চালাতে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে অর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এই ডাক সাইটে ড্যাব নেতা ডা. মো. হানিফকে শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি বিভাগ অধ্যাপক এক বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় ত্রিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে।
গত ২৯ জুনে ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসর প্রদানের পর তাকে এক বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হয় সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। অনলাইন Zoom মিটিং এ কখনো এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। যে সিদ্ধান্ত কোনভাবেই হাসপাতালের স্বার্থের জন্যে নয়। এটি সম্পূর্ণ রুপে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষার জন্য অপকর্ম করা হয়েছে।
জামায়াত বিএনপি সমর্থিত লোকদের পদোন্নতি!
ড্যাব নেতা ডা. মো. হানিফ, অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিনের সাথে রিজেন্ট হাসপাতাল তথাকথিত চেয়ারম্যান প্রতারক শাহেদ করিমের সঙ্গে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমল থেকে সখ্যতা রয়েছে।
উল্লেখ্য ডা. হানিফ (সাবেক সভাপতি, ড্যাব, ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখা) ড্যাব এর উপরের সারির নেতা, বিএনপি’র অন্যতম ডোনার। উনি বরাবরই টাকার বিনিময়ে এইভাবে নিয়মবহির্ভূত কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন শিশু হাসপাতালে। অথচ পূর্বের ৩/৪ জন সরকার পক্ষের (স্বাচিপ) অধ্যাপকের চাকুরীর বয়স সীমা অতিক্রম করায় চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান প্রথা বাতিল করা হয়। আওয়ামী সরকার পন্থী অধ্যাপকদের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হয়নি।
সরকার পন্থী অধ্যাপকদের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা পাননি বলে কি চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করেননি বলে জানা যায়। বর্তমান ব্যবস্থাপনা বোর্ড, ঢাকা শিশু হাসপাতাল একটি Resolution করেন যাতে উল্লেখ আছে ৬৫ বছর চাকুরীর পর কোন ব্যাক্তি বা চিকিৎসককে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হইবে না। এই নিয়মটি থাকার পরও কোন কারণে, কোন নিয়মে বা কোন ক্ষমতাবলে ড্যাব এর অধ্যাপক ডা. হানিফকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো। একইভাবে ঢাশিহা প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক কবিবুল ইসলামকে নিয়মবহিভর্ত ভাবে সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান করা হইয়াছে। এছাড়াও কোন প্রকার জেষ্ঠ্যতা না মানিয়া এবং পরিচালকের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়া উক্ত সিন্ডিকেট ডা: প্রবীর কুমার সরকারকে উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) পদে বসিয়েছেন তাদের বাণিজ্য ঠিকমত পরিচালনা করার লক্ষ্যে। স্টেম সেলে প্রজেকটের লুটপাটের বিবরণ কালের কন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশের পরপরই নিজেদের সুনাম রক্ষার্থে ডা: কবির ও শাকিলের মাধ্যমে VOA এ মিথ্যা প্রচার চালায়।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাণিজ্য ও জুম মিটিংয়ে ভাতা!
এছাড়াও চর্ম বিভাগের মাহফুজা হুসাইনকে নিয়মবহির্ভূত ভাবে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতি, চুক্তিভিত্তিক চাকুরী তাও আবার অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য মাহফুজার ড্যাব সদস্য। তারা বোর্ড মিটিং স্বশরীরে না করে অনলাইনে জুমের মাধ্যমে মিটিং করে থাকেন। মিটিং করার পর সদস্যরা সম্মানী ভাতা নিয়ে থাকেন। যা কিনা ঘরে বসিয়া আয়। বোর্ড মিটিংএর নামে তারা তামাশা ও খোশগল্প করিয়া থাকেন কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই অনেক সময় মিটিং সমাপ্ত হয়ে যায়।
শিশু হাসপাতালে হালুয়া রুটির ভাগ-বাটোয়ারা!
অধ্যাপক সমীর কুমার সাহা’র CHRF এর একজন পরিচালক এবং হালুয়া রুটির ভাগ- বাটোয়ারার অন্যতম সদস্য। সমীর কুমার সাহা শিশু হাসপাতালের বোর্ডের ও একজন সদস্য। তিনি নিজের স্বার্থে মগ্ন হয়ে সরকার বিরোধী একজন ডাকসাইটের নেতা ডা. হানিফকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদানে সহযোগিতা করেছেন। স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অনধিকার প্রয়োগে লিপ্ত হয়েছেন সিন্ডিকেটের বাকি দুই সদস্য অধ্যাপক শহিদুল্লাহ ও ডাঃ শফি। কথিত আছে ডা. মাহফুজার চাকরীর বয়স বাড়িয়ে নিয়োগ দেওয়া হলো। আর বড় অংকের টাকার বিনিময়ে এই সুবিধাটি বাগিয়ে নিয়েছেন ডা. মাহফুজা। যার সাথে CHRF এর ড. সমীর কুমার সাহা জড়িত।
কাদের নিয়ে এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট!
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা শিশু হাসপাতালের ভয়াবহ এই সিন্ডিকেটের প্রধান ব্যক্তি হলেন ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা ও অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক CHRF ব্যবস্থাপনা বোর্ড, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও পরিচালক।
এদের মধ্যে CHRF( child health research foundation) এই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ড. সমীর কুমার সাহা বর্তমানে ঢাকা শিশু হাসপাতাল মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হওয়া স্বত্বেও কিভাবে আরেকটি সংস্থার প্রধান হয়ে কর্মরত আছেন ( যেমন তিনি CHRF এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পদেও কাজ করছেন)। যা আইনত: সম্পূর্ণ অবৈধ)।
আলোচিত ডা. সাবরিনা ও ড. সমীর একই সূত্রে গাথা!
পুলিশের খাঁচায় বন্দি বহু আলোচিত ডা. সাবরিনাকে যদি জিকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান হওয়ায় এনআইসিভিডির রেজিষ্ট্রার পদ থেকে বহিস্কার করা হয়! তাহলে ড. (ডক্টর) সমীর কুমার সাহাকে কেন শিশু হাসপাতাল থেকে বহিস্কার করা হবে না? তিনিও তো শিশু হাসপাতালে বসে অন্য আরো কেমিক্যাল এর ব্যবসাসহ যাবতীয় কমিশন ভোগ করেন ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে। এই সকল কারণে একের পর এক ভেঙে পড়েছে ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। কিছুদিন আগে ১৫০ সিনিয়র ষ্টাফ নার্স নিয়োগ দেওয়ার সাথে সাথে বাতিল করা হয়। যা তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও সিদ্ধান্তহীনতার ফসল। নার্স স্বল্পতার কারণে হাসপাতালে আগত রোগীরা সেবা পাচ্ছে না।
পরিচালক নয়, সব খবরদারি ড. সমীরের!
চলছে দ্বৈত প্রশাসন। সব ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে গভর্নিং বডি সদস্য অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা। হাসপাতাল পরিচালক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেছেন না। সমীর কুমার সাহা চিকিৎসক না হয়েও সব ব্যাপারে খবরদারি করতেছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা। এভাবে চললে অচিরেই রোগীরা চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হবে।
নিয়ম ভেঙে পদোন্নতির লীলাখেলা!
অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপিকেও সম্পূর্ণ নিয়মবহিরভূত ভাবে পরিচালক পদ থেকে অপসারন করে বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ শফি আহমেদ মোয়াজ জোরপূর্বক ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ঐ সময়ে চতুর ডা. মোয়াজ তৎকালীন চেয়ারম্যান এর অনধিকার ক্ষমতা প্রয়োগ করে কাজটি করে নিতে সক্ষম হন। একই ভাবে আরো একজন প্রতিষ্ঠাতা ড্যাব সদস্য ও অন্যতম ডোনার ডা. মাহফুজা হুসেইন, কনসালট্যান্ট(স্কীন এন্ড ভিডি), ঢাকা শিশু হাসপাতাল এর চাকুরী ৫৯ বছর বয়সে অবসর গ্রহণে যাওয়ার সময়ে তাকে টিচিং পোষ্ট নামে দূরভিস্বন্ধিমূলক ভাবে বিশেষ বিবেচনায় স্ববেতনে সহকারী অধ্যাপক পদ মর্যাদায় নিয়োগ প্রদান করেন।
কেন সহকারী অধ্যাপক পদ দেয়া হলো তা নিম্নোক্ত বিষয়টি আলোচনায় আসলে পরিস্কার হয়: ১। পোষ্টের নামে সহকারী অধ্যাপক প্রদান করায় তার চাকুরীর বয়সসীমা ৫৯ বছর থেকে ৬৫ বছরে নিয়ে যাওয়া হলো। নিয়মানুযায়ী কনসালট্যান্টগণ ৫৯ বছরে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এইখানে তাকে সহকারী অধ্যাপক প্রদান করায় তার চাকুরীর বয়স সীমা ৬৫ বছর করা হলো এবং স্ববেতনে। কতোটা চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে একবার ভাবুন; সহকারী অধ্যাপকের বেতন স্কেল সর্বসাকুল্যে ৫৫ হাজার টাকা, অথচ ডা. মাহফুজা বেতন পাবেন প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি (আনুমানিক)। তার অর্থ দাঁড়ালো তার চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি পেলো ৬ বছর, এতে সরকারের তথা শিশু হাসপাতালের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। অথচ শিশু হাসপাতাল সঠিক সময়ে গত জুলাই মাসে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন দিতে পারেনি।
বহু পদের চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ’র একই অঙ্গে বহুরূপ;
শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ একাই বহু পদে বসে আছেন। প্রথমত তিনি বিএমডিসির সভাপতি,
ঢাকা শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি, বিএসএমএমইউ নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, মিরপুর শিশু স্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের মহাসচিব, মিরপুর শিশু হাসপাতাল যেটির প্যাথোলজিষ্ট ছাড়াই চলে প্যাথলজি। এ হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব। বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) সদস্য, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট, মাতুয়াইল পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি। এ যেনো একই অঙ্গে বহু রূপ। এক ব্যক্তির মহাকাশ যাপন। এক ব্যক্তির এতো প্রতিষ্ঠান একা দেখা কিভাবে সম্ভব।
সিন্ডেকেটের আশ্রয় প্রশ্রয়ে উত্থান ঘটে ডা. লিটনদের!
সম্প্রতি ঢাকা শিশু হাসপাতালে নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় এক পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্রে দেখিয়ে দেওয়ার ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয় ডা. জহিরুল ইসলাম লিটনের। এতে বিতর্কের মূখে পড়ে নার্স নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও। ডা. লিটন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (সাচিপ) শিশু হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক। বহু চিকিৎসকরদের অভিযোগ রয়েছে, প্রায় সময় তিনি এই পদের জোরে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি কোনো কাজ না করেও মাসের পর মাস বেতন তুলে নেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ঢাকা সাভারের এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে চাকরীও করেছেন। একেই সাথে বহু প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করে চলেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। এমনকি এ ঘটনায় ঢাকা শিশু হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতাল বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিলেও চেয়ারম্যানের নীরব ভূমিকায় প্রমাণ করে এসব অনিয়মের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা চেয়ারম্যান নিজেই। যারা তিন চারজন লোক পুরো হাসপাতালকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানিয়েছেন।
অন্যান্য চিকিৎসকদের হতাশা ও চাপাক্ষোভ!
ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দূর্নীতির কারণে গত কোরবানিতে চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদের অর্ধেক বোনাস কেটে রেখেছে। এমনকি সমীর সাহা একজন প্রকল্প ব্যবসায়ী। শিশু হাসপাতালে চাকুরী করেও তিনি চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক। এটা তিনি করতে পারেন না। একই কারণে সাবরিনার চাকুরী চলে গেছে। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা এনে তিনি ইচ্ছেমত খরচ করে। কোন জবাবদিহি নেই, হিসাব নেই চলছে মহা লুটপাট। শিশু হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের ৩০% টাকা শিশু হাসপাতাল ফান্ডে দেয়ার কথা থাকলেও কখনোই না দিয়ে আত্মসাৎ করে। যা বিশাল দূর্নীতি ও জালিয়াতি। লোকটি প্রতারক সাহেদের চেয়েও চতুর। এছাড়াও ঢাকা শিশু হাসপাতাল এই সিন্ডিকেটের হাতে সম্পূর্ণ ভাবে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যা অতিসত্বর সরকারের কঠোর নজরধারি ও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.