শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষায় ৭ আমল

ওয়ান  নিউজ ডেক্সঃ পৃথিবীতে শয়তান মুমিনের প্রধান শত্রু। কোরআন মাজিদের অসংখ্য স্থানে আল্লাহতায়ালা শয়তান সম্পর্কে মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন। তাছাড়া শয়তান মানুষকে বিভ্রান্ত করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। মানুষের এই চিরশত্রু মানুষের বাসস্থানে প্রবেশ করে অপূরণীয় ক্ষতি করে ফেলতে পারে। তাই মুসলমানদের জন্য এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

নিম্নে শয়তানের প্রভাব থেকে সুরক্ষার কিছু আমল বর্ণনা করা হলো-

রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া : হজরত আবু মাসউদ (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, কেউ যদি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করে, সেটা তার জন্য (বিপদ-আপদ ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে) যথেষ্ট। -সহিহ বোখারি : ৫০০৯

পানাহারের সময় আল্লাহর নাম নেওয়া : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ করে এবং খাবার গ্রহণের সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে, তখন শয়তান হতাশ হয়ে (তার সঙ্গীদের) বলে, তোমাদের (এখানে) রাত যাপনও নেই, খাওয়াও নেই। আর যখন সে প্রবেশ করে এবং প্রবেশকালে আল্লাহর নাম স্মরণ না করে, তখন শয়তান বলে, তোমরা থাকার স্থান পেয়ে গেলে। আর যখন সে খাবারের সময় আল্লাহর নাম স্মরণ না করে, তখন সে (শয়তান) বলে, তোমাদের নিশি যাপন ও রাতের খাওয়ার আয়োজন হলো।’ -সহিহ মুসলিম : ৫১৫৭

সন্ধ্যা হলে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ঘরের দরজা বন্ধ করা : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখো। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পারো। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না…।’ -সহিহ বোখারি : ৫৬২৩

শয়তানের প্রিয় বস্তু ঘরে না রাখা : শয়তানের প্রিয় জিনিস থেকে ঘর মুক্ত রাখতে পারলে শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে শয়তানের প্রিয় বস্তুর ব্যাপারে এসেছে, ‘হে মুমিনরা, মদ, জুয়া আর মূর্তি ও ভাগ্যনির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানি কাজ, তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হতে পারো।’ -সুরা মায়িদা : ৯০

ঘরকে গানবাজনামুক্ত রাখা : পবিত্র কোরআনে শয়তানের কর্ম সম্পর্কে এসেছে, ‘তোমার কণ্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত করো, তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ো তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে…।’ -সুরা বনি ইসরাঈল : ৬৪

তাফসিরবিদদের মতে, গানবাজনা হলো- শয়তানের আওয়াজ। কাজেই ঘর গানবাজনামুক্ত থাকলে শয়তানের প্রভাবমুক্ত থাকে।

ঘরে কোনো বিছানা বিছিয়ে পরিত্যক্ত না রাখা : যে বিছানায় দীর্ঘদিন ধরে কেউ থাকে না অথচ তা বিছিয়ে রাখা হয়, এমন বিছানায় শয়তান আশ্রয় নেয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘একটি বিছানা ব্যক্তির জন্য, একটি তার পরিবারের জন্য, একটি অতিথির জন্য, আর চতুর্থটি শয়তানের জন্য।’ -সুনানে নাসায়ি : ৩৩৮৫

বাথরুমে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া : টয়লেট ও গোসলখানা মানুষের জন্য স্পর্শকাতর স্থান। এগুলোর ব্যাপারে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সাধারণত পায়খানার স্থানে শয়তান এসে থাকে। সুতরাং তোমাদের কেউ পায়খানায় প্রবেশ করলে যেন বলে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।’

অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে শয়তান ও যাবতীয় নোংরা বিষয় থেকে আশ্রয় চাই। -সুনানে আবু দাউদ : ৬

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.