সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কর্মরত ৫০ টিরও বেশি সিএসও এনজিওর নেটওয়ার্ক কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার, স্থানীয় সিএসও, রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, আরআরআরসি, জেলা প্রশাসক এবং আইএসসিজি’র অংশগ্রহণ সমৃদ্ধ একটি একক কর্তৃপক্ষের দাবি পুনর্ব্যাক্ত করেছে।
আগামী ২২ অক্টোবর যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং জাপানের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য দাতা সম্মেলনের প্রাক্কালে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সিসিএনএফ নেতৃবৃন্দ দাতা ও উন্নত দেশগুলির বর্তমান ভূমিকার সমালোচনা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনতিবিলম্বে মায়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার ধনী দেশ ও জাতিসংঘের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ জোরদার করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফ’র কো চেয়ার এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
এতে বক্তৃতা করেন-টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী, সিসিএনএফ’র কো চেয়ার, পালস’র নির্বাহী পরিচালক এবং কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী এবং মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল দে সরকার, আইডিএফ নির্বাহী পরিচালক জহিরুল আলম (চট্টগ্রাম), হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম (উখিয়া) অগ্রযাত্রা’র সভাপতি নীলিমা আক্তার চৌধুরী (কক্সবাজার) এবং সিসিএনএফ সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
রাশেদ মোহম্মদ আলী বলেন, ‘স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ রয়েছে, কিন্তু নাফ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্ভাহ করা জেলে সম্প্রদায় এখনো সেখানে মাছ ধরতে না পেরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।’ তিনি স্থানীয়দের জন্য আসা সহায়তার পূর্ণ স্বচ্ছতার আহ্বান জানান।
আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সিসিএনএফ স্থানীয় সিএসও / এনজিওগুলির বিকাশের জন্য পুল ফান্ড এবং গ্র্যান্ড বার্গেইনের আলোকে প্রত্যক্ষ অর্থায়নের অনুরোধ করে আসছে, জাতিসংঘ এজেন্সিগুলির নেতৃত্বে প্রণীত স্থানীয়করণ টাস্ক রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছিলো, কিন্তু এর বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে। ২০১৮ থেকে সিসিএনএফ যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনাকে (জেআরপি) নিরাপত্তা ও সংঘাত প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওযার পরামর্শ দিয়ে এসেছে।’ রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় সরকার এবং স্থানীয় সিএসও-র অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন।
জহিরুল আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যও বাংলাদেশ দায়ি না হয়েও এই সমষ্যাগুলোতে দেশটিকে ভুগতে হচ্ছে।’ তিনি দাতা দেশসমূহকে রোহিঙ্গা মানবিকসসংকটের পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্যান্য সমস্যা সমাধানেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একমাত্র টেকসই সমাধান হিসেবে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ধনী ও দাতা দেশগুলোর প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
বিমল দে সরকার বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য এখন পর্যন্ত ২.৬৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা এসেছে, এই পরিমাণটিকে হিসাব করলে প্রতি মাসে প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য বরাদ্দ এসেছে প্রায় ৪২৩ ডলার, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, মোট সহায়তার মাত্র এক তৃতীয়াংশ প্রত্যক্ষ সেবা হিসেবে রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছেছে।’ তিনি জাতিসংঘ এবং আইএনজিও ভাল কাজগুলোর প্রশংসা করেন, কিন্তু অর্থ সহায়তার স্বচ্ছতার অভাবে জনমনে বিভ্রান্তি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
জাহাঙ্গীর আলম কোভিড ১৯ মোকাবেলায় জাতিসংঘ, বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর এবং আইওএম-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘প্রাপ্ত অর্থ সহায়তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার এবং জাতিসংঘের যৌথ নেতৃত্বাধীন একটি একক কর্তৃপক্ষ থাকতে হবে।’
নীলিমা আক্তার চৌধুরী আইএসসিজিতে (ইন্টার সেকটোরাল কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ) স্থানীয় সরকার এবং সিএসও / এনজিওগুলির অংশগ্রণের পূর্ণ সুযোগ তৈরির অনুরোধ করেন।
জনাব আবুল কাশেম বলেন যে, স্থানীয় অংশীজন এবং এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ‘নিচ থেকে উপরে যাওয়ার বা ‘বটম-আপ’ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.