ডেস্ক নিউজ:
রাজধানীর পল্লবীতে যুবক সাহিনুদ্দিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা হত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ আউয়ালকে চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পল্লবী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২১ মে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার বিরুদ্ধে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২০ মে ভৈরব এলাকা থেকে এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও এক নম্বর আসামি এম এ আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত ১৬ মে বিকালে জমি নিয়ে বিরোধের মীমাংসার কথা বলে সাহিনুদ্দিনকে পল্লবী থানার ডি-ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর ডেকে নিয়ে সন্তানের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা আকলিমা বেগমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ মে বিকাল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক সাহিনুদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। শাহীন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে, সুমন ও টিটুসহ ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যান। এ সময় সাহিনুদ্দিনের ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে সাহিনুদ্দিনকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে তারা চলে যান। ঘটনাস্থলেই সাহিনুদ্দিনের মৃত্যু হয়।
আকলিমার অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করে। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় তাকে খুন করা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন, সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু। আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা। ইতিমধ্যে মামলার দুই আসামি পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.