রামুর ছাগলিয়াকাটায় নির্বিচারে পাহাড় কাটছে পাহাড়
বিশেষ প্রতিবেদক: রামুতে দিনদুপুরে নির্বিচারে পাহাড় কেটে সাবাড় করছে প্রভাবশালী চক্র। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ছাগলিয়াকাটাপন্জাখানা বলখেলা মাঠ সংলগ্ন এলাকা থেকে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হলেও এ অপতৎপরতা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তর কারো চোখে পড়ছেনা। স্থানীয় পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিদের অভিযোগ, কতিপয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র পাহাড় কেটে এসব মাটি পিকআপ গাড়িযোগে ইট ভাটায় সরবরাহ করছে বলেও জানিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রশাসনিক কোনো উদ্যোগ না থাকার ফলে দ্বিগুন উৎসাহে দিনে-দুপুরে পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে পাহাড় টিলা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ প্রভাবশালী চক্র পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি ব্যবসায় নিয়োজিত থাকায় এলাকায় জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হলেও ভয়ে কিছুই বলতে পারছে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার দরিদ্র জনসাধারণ। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় এলাকার হাফেজ আহমদ পিতা আজগর আলী রহিম পিতা মুছা, মালেক, মতি, সহ তাদের সিন্ড়িকেট এর আরো ৫ থেকে ৬ জনসহ এলাকার আওয়ামীলীগ এর প্রভাবশালী সদস্যসহ রাজারকুল ছাগলিয়াকাটা এলাকা থেকে নির্বিচারে পাহাড় কাটে মাটি বিক্রি করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, রামুতে অনেক জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে পাহাড় থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। রাজারকুলের দিকে কয়েকবার পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । জনবল কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, খবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ছাগলিয়াকাটা এলাকায় একাধিক স্থানে চলছে বিরামহীন পাহাড় কাটা। জানা যায় এই সিন্ড়িকেট টি দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়কেটে আসছেন। সরকারি খাস খতিয়ান ভুক্ত হলেও দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় রোহিঙ্গাদের ঘর করে দিয়ে হাফেজ বাহিনীর লোকজন পাহাড় কাটা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। একমাস ধরে পাহাড়ের মাটি কেটে সাবাড় করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা সহ চেয়ার ম্যানের সিন্ড়িকেট । পহাড় কাটা কাজে নিয়োজিত জৈনক শ্রমিক জানান , স্থানীয় হাফেজ বাহিনীর নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশেই পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সহ ওই এলাকায় আরো একটি পাহাড় থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন বলেও স্থানিয়রা জানিয়েছেন। এইব্যাপারে হাফেজ আহমদ পিতা আজগর আলীর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, আমরা প্রশাসন ও এলাকার নেতা ও চেয়ারম্যান সহ সবাইকে ম্যানেজ করে এইকাজ করছি। হাফেজ আরো বলেন আমাদের সহযোগিতায় আছে আওয়ামীলীগ ক্ক্সবাজার জেলার প্রভাবশালী একজন নেতা স্থানীয়ম নাম প্রকাশে অনিশুক জানিয়েছেন, বর্তমানে ছাগলিয়াকাটায় যে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে সেটি সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। ইটভাটায় নেয়ার জন্য এলাকায় অনেকস্থানে বন বিভাগের পাহাড়ও কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অন্যদিকে রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান এর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে সংযোগ পায়া যায়নি। রামু থানা অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, ওই এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে এমন অভিযোগ পায়নি তিনি। পাহাড়কাটা গুরুতর অপরাধ, এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পাহাড় কাটা দন্ডনীয় অপরাধ। শুনেছি রামু উপজেলার কোথাও কোথাও পাহাড় কাটা হচ্ছে। রাজারকুলের ইউপি চেয়ারম্যানও জানিয়েছেন, তার এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। তবে কাউয়ারখোপে কোথাও পাহাড় কাটা হচ্ছে এমন কোন অভিযোগ সরাসরি এখন পর্যন্ত পাইনি। পাহাড় কাটা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর জানিয়ে পাহাড় কাটায় জড়িতদের ব্যপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.