রাখাইনে ত্রাণ প্রবেশে বাধা নেই, কিন্তু যেতে দিচ্ছে না

ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ মিয়ানমারে ত্রাণ প্রবেশে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। তবে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে সংঘাতপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শুক্রবার এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের মুখপাত্র জ হুতাই একথা জানান। এতে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে দাতা সংস্থাগুলোর প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি সরকার। কিন্তু, নিরাপত্তার খাতিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে সেনাবাহিনী ও নাসাকা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। এজন্য দাতা সংস্থার ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। খবর: রয়টার্সের।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসছে সেখানে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে মিয়ানমার। রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করার সুযোগ না থাকাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেখানে ভয়ানক মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দাতা সংগঠন সাহায্য নিয়ে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে চাইলেও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

একমাত্র তুরস্ক এক হাজার টন সাহায্য পাঠাতে সক্ষম হয়েছে রাখাইনে। সু চির সাথে সরাসরি ফোনালাপ করে এই সাহায্য পাঠিয়েছিল তুরস্ক।

দাতা সংস্থাকে রাখাইনে প্রবেশ করতে না দেওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবেই মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে মুখপাত্র এ বিবৃতি দেন।

জ হুতাই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা কাউকে ব্লক করিনি। কিন্তু, সেখানে ভ্রমণে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে আর অনেক এলাকা দুর্গম সে কারণে কিছু কিছু জায়গায় প্রবেশে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সহকারী প্যাট্রিক মার্ফি আগামী রোববার মিয়ানমার সফর করবেন বলে জানা গেছে।

তিনি মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা সরাসরি জানাবেন। এছাড়া সংকট নিরসনে আশু প্রদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে এটা স্পষ্ট নয় মার্ফি সংঘাতপূর্ণ রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করবেন কি না বা মার্ফির অনুরোধ মিয়ানমার রাখবে কি না সেটা নিয়ে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হুতাইও স্পষ্ট কিছু বলেননি।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট অন্তত ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা’র যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করে।

এরপর থেকে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইনে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযানের নামে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

ইতোমধ্যে তিন হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। আর নির্যাতনের মুখে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ এটিকে ‘জাতিগত গণহত্যা’ উল্লেখ করে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তবে মিয়ানমার এসব অভিযোগ শুরু থেকেই নাকচ করে আসছে। উল্টো দাবি করছে, রোহিঙ্গারাই এসবের জন্য দায়ী।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.