ইয়ানূর রহমান : যশোর শহরে ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম সাফা হত্যাকর মূল হোতা শেখ শাহাবুদ্দিনকে (৩০) গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মূল পরিকল্পনাকারী ব্যবসায়ী ওয়াশিংটন ভারতে। এই তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
৮ জানুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি গ্রামে খালাবাড়ি থেকে শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া ব্রিফিংয়ে ডিবির ওসি মনিরুজ্জামান এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, ৬ জানুয়ারি এই মামলার অন্য দুই আসামি রানা মোল্লা ও রাকিবের দেওয়া তথ্য ও মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে যশোর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মোড়ে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় পোঁচ দিয়ে ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম শাফাকে খুন করে। যশোর আরএন রোড এলাকায় শাফার মোটর পার্টসের ব্যবসা রয়েছে। শহরের নলডাঙ্গা রোডের বাসিন্দা ওয়াশিংটন জোর করে সাফার ব্যবসায়িক পার্টনার হন। এলক্ষ্যে শাফাকে নয় লাখ টাকাও দেন ওয়াশিংটন এবং মাসশেষে তাকে লাখে দশ হাজার করে টাকা দেওয়া লাগতো। ব্যবসায় মন্দা হওয়ায় সাফা তাকে মূলধন ফেরত দিলে শত্রুতা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওয়াশিংটন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ডিবি ওসি বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন সন্ত্রাসী শেখ শাহাবুদ্দিনকে দুই লাখ টাকার চুক্তিতে সাফাকে হত্যার জন্য নিযুক্ত করেন। এ লক্ষ্যে তাকে প্রথমে ২০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়। বাকি টাকা অপারেশনের পর দেওয়া হবে বলে জানান।
শাহাবুদ্দিনের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ডিবি ওসি আরো বলেন, সাফাকে হত্যার আগে তাকে কয়েক দফা রফা করে শাহাবুদ্দিন ও তার সঙ্গীরা। দুই দফা টার্গেট মিসও হয়। তাদের কাছে খবর ছিল, সাফা তার ম্যানেজারসহ শহরের ঈদগাহ মোড়ে কাজের জন্যে আসেন। ঘটনার দিন বিকেল থেকে শাহাবুদ্দিন একটি মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিল। শাফা ও তার ম্যানেজার মোটরসাইকেলে উঠলে তারাও পেছন পেছন আসে এবং কোর্টের মোড়ে শাহাবুদ্দিন তার সঙ্গে থাকা রানা ও রিপনকে নামিয়ে দেয়। পরে তারা ছুরি চালিয়ে শাফাকে খুন করে শহরের টাউন হল মাঠ দিয়ে পালিয়ে যায়।
ডিবি ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, হত্যাকান্ডের আগেই ওয়াশিংটন বৈধ পথে ভারতে চলে যান। তার সঙ্গে শেখ শাহাবুদ্দিনের নিয়মিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। তথ্যপ্রমাণাদি সব পুলিশের কাছে রয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, খুব দ্রæত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
গ্রেফতার শেখ শাহাবুদ্দিন যশোর শহরের শঙ্করপুর জমাদ্দারপাড়া এলাকার হালিম শেখের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও ছিনতাইয়ের পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবি ওসি।
গত ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শহরের ঈদগাহ মোড়ে এইচএন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক মহিদুল ইসলাম সাফা খুন হন। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা গলায় ছুরির পোঁচ দিয়ে তাকে হত্যা করে। নিহত সাফা যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা গ্রামের নবিস উদ্দিনের ছেলে। তিনি যশোর শহরের খালধার রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.