মূলত তার পরিকল্পনায় চার নারী ধর্ষণের ঘটনাও ডাকাতি সংঘটিত হয়-পিবিআই চট্টগ্রাম
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এক বাড়িতে ডাকাতি করে চার নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে আবু সামা নামে ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে তারা গ্রেপ্তার করেন।
পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁওয়ের বাসিন্দা সামার পরিকল্পনাতেই ডাকাতির ওই ঘটনা ঘটে বলে তদন্ত কর্মকর্তার দাবি।
তিনি বলেন, ’আবু সামা মোবাইল চুরির সাথে জড়িত ছিল। মূলত তার পরিকল্পনায় ওই ডাকাতি সংঘটিত হয়।’
এদিকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার মিজান মাতুব্বর আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার তিনজনের নাম আসেনি বলে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।
পরিদর্শক সন্তোষ বলেন, ’জবানবন্দিতে মিজান মাতুব্বর বলেছে, সামার পরিকল্পনায় ডাকাতি হয়েছিল। তবে সামা ওই বাড়িতে প্রবেশ করেনি, বাইরে অপেক্ষায় ছিল।’
পিবিআই বলছে, ডাকাতিতে অংশ নেওয়া আরেকজনের মাধ্যমে আবু সামার সঙ্গে মিজানের পরিচয় হয়।
ডাকাতির সময় মিজানসহ মোট চারজন ওই বাড়িতে প্রবেশ করে।
গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ওই বাড়িতে ডাকাতির সময়ই তিন প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের এক বোনকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণের শিকার নারীরা ঘটনার পরদিন মামলা করতে গেলে ঠিকানা জটিলতার কথা বলে মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ।
পরে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পাঁচ দিন পর মামলা নেয় পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।
মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ ওঠার পর বিভিন্ন সংগঠন থেকে কর্ণফুলী থানার ওসি সৈয়দুল মোস্তফাকে প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) হারুণ উর রশিদ হাযারি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে থানা পুলিশের ‘আংশিক’ ব্যর্থতার কথা স্বীকারও করেন।
এরপর সদর দপ্তরের নির্দেশে মঙ্গলবার মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের হাতে। সকালে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিকালে তারা মিজান মাতুব্বরকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে আদালতে হাজির করে।
মিজান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
এর আগে কর্ণফূলী থানা পুলিশ আবু, ফারুকী ও বাপ্পী নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় এবং আবুকে শনাক্ত করার জন্য টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন প্যারেডের আবেদন করে। বৃহস্পতিবার ওই প্যারেড হওয়ার কথা রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বলেন, ‘কর্ণফুলী থানা পুলিশের গ্রেপ্তার করা তিনজনের নাম মিজানের জবানবন্দিতে আসেনি। মিজান আরও চারজনের নাম বলেছে। তার মধ্যে আবু সামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.