মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি, নিহত বেড়ে ৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারে জান্তা বিরোধী বিক্ষোভে শনিবার নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স নিউজ এজেন্সি এই তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, মান্দালয় শহরে ১৯৮৮ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ইয়াঙ্গুনের থারকেটা জেলার পুলিশ কেন্দ্রের সামনে জমায়েত হয়। তারা জান্তাবিরোধী চলমান বিক্ষোভে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালায় । এতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। আরেক বিক্ষোভকারী মধ্য শহর পায়াইতে নিহত হয়েছে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে মিয়ানমারের জনগণ জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন।

অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৭০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই হাজার জনের বেশি।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শুক্রবার ১৯৮৮ সালের বিক্ষোভে নিহত শিক্ষার্থী ফোন মাওয়ের স্মরণে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন রেঙ্গুন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ওই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এর কয়েক সপ্তাহ পর আরেক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার পর মিয়ানমারে জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আগস্ট মাসে হওয়া ওই বিক্ষোভ ৮-৮-৮৮ নামে পরিচিত। আনুমানিক তিন হাজার বিক্ষোভকারী নিহত হন সেই বিক্ষোভে।

ওই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন অং সান সু চি। দুই দশক ধরে তাকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল তৎকালীন জান্তা সরকার। ২০০৮ সালে তাকে মুক্তি দিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরু করে সেনাবাহিনী। ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা গ্রহণ করে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে ফের ব্যাপক ব্যবধানে জয় লাভ করে এনএলডি। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি সেনা-অভ্যুত্থান করে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.